হিনডেনবার্গকে জবাব আদানির বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ ‘ভারতের ওপর আক্রমণ’

8

যুক্তরাষ্ট্রের এক গবেষণা সংস্থার তোলা দুর্নীতির অভিযোগে টালমাটাল ভারতের শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির করপোরেট সাম্রাজ্য। প্রতিদিনই শত শত কোটি ডলারের সম্পদ কমছে তার। এ অবস্থায় গত ২৯ জানুয়ারি হিনডেনবার্গকে ৪১৩ পৃষ্ঠার এক বিশাল জবাব দিয়েছে আদানি গ্রæপ। তাদের দাবি, আদানির বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ তোলা ভারতের পরিকল্পিত আক্রমণের অংশ। আদানি গ্রæপের বিষয়ে দুই বছর তদন্তের পর গত ২৪ জানুয়ারি গুরুতর নানা অভিযোগের বিশদ বিবরণসহ একটি বিস্ফোরক প্রতিবেদন প্রকাশ করে হিনডেনবার্গ রিসার্চ। এতে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ‘করপোরেট জগতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ধোঁকাবাজি’র অভিযোগ তুলেছে গবেষণা সংস্থাটি। তাদের দাবি, আদানি গ্রæপ ‘নির্লজ্জ শেয়ারবাজার কারসাজি ও অ্যাকাউন্টিং জালিয়াতি প্রকল্পে’ জড়িত। এছাড়া অধীনস্ত কোম্পানিগুলোর ঘাড়ে অতিরিক্ত ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেওয়ায় গোটা গ্রæপই ‘অনিশ্চিত আর্থিক’ ঝুঁকিতে পড়েছে।

এর জবাবে আদানি গ্রæপ বলেছে, এটি কেবল নির্দিষ্ট কোনো কোম্পানির ওপর অন্যায় আক্রমণ নয়, বরং ভারতের ওপর, ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা, অখÐতা ও গুণমান এবং ভারতের প্রবৃদ্ধির উচ্চাকাক্সক্ষার ওপর পরিকল্পিত আক্রমণ।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সত্য হিসেবে উপস্থাপিত হিনডেনবার্গের অভিযোগ এবং ইঙ্গিতগুলো আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। এটি প্রচুর বিনিয়োগকারীর সম্পদ নিশ্চিহ্ন করেছে এবং হিন্ডেনবার্গের জন্য মুনাফা এনে দিয়েছে। সার্বিক ফলাফল হলো, বিনিয়োগকারীরা হেরেছে এবং হিনডেনবার্গের লাভ হয়েছে।
সুদীর্ঘ প্রতিক্রিয়ায় হিনডেনবার্গের উদ্দেশ্য, স্বচ্ছতা ও বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে আদানি গ্রæপ। সোমবার ভারতের শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে এই প্রতিক্রিয়া জানায় আদানি গ্রæপ। তবে তাতে আস্থা ফেরেনি বিনিয়োগকারীদের। এদিনও আদানির মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর ব্যাপক দরপতন অব্যাহত ছিল।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গতকাল ৩০ জানুয়ারি আদানি গ্রæপের ফ্ল্যাগশিপ কোম্পানি আদানি এন্টারপ্রাইজেসের শেয়ারের দর ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে এবং প্রস্তাবিত দামের চেয়ে অনেকটাই নিচে অবস্থান করছে।
এছাড়া আদানি ট্রান্সমিশন, আদানি টোটাল গ্যাস, আদানি গ্রিন এনার্জি, আদানি পাওয়ার, আদানি উইলমার এবং আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোনের শেয়ারের দরপতন হয়েছে ৪ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশের মধ্যে। সব মিলিয়ে গত তিন দিনে সাত হাজার কোটি ডলারের বেশি হারিয়েছে আদানি গ্রæপ।