‘হালদা’ জাতীয় নদীর স্বীকৃতি পাওয়ার উপযুক্ত

29

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষে হালদা নদীকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রলালয় কর্তৃক ‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ’ ঘোষণা করার বিষয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল সোয়া ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে জেলা মৎস্য দপ্তরের আয়োজনে এ সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ।
এতে অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন ও বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মো. খলিলুর রহমান। খবর বাংলানিউজের
সভায় যোগ দেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ রুহুল আমিন, ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সায়েদুল আরেফিন, বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আছিয়া খাতুন, রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবীর সোহাগ, মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তামান্না মাহমুদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক ড. মনজুরুল কিবরিয়া, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মো. মোয়াজ্জম হোসাইন, মোহাম্মদ নুরুল্লাহ নূরী, প্রফেসর ড. মো. আলী আজাদী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, চট্টগ্রাম চেম্বারের উপসচিব মো. আলী আজগর, জেলা সমাজসেবা অফিসের ডিডি মো. শহীদুল ইসলাম, হাটহাজারী থানার ওসি মাসুদ আলম, মাদার্শা ইউপি চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন চৌধুরী, রাউজান থানার ওসি আবদুল্লাহ আল হারুন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিয়াজ মোর্শেদ, এলজিইডি’র সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী প্রতিপদ দেওয়ান, চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম, পানি উন্নয়ন বোর্ড রাঙামাটি জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম, কৃষি ব্যাংক হাটহাজারী শাখার ব্যবস্থাপক মো. নাসির উদ্দিন, সেভ দি হালদা রিভার এর সভাপতি লায়ন যাদব চন্দ্র শীল প্রমুখ।
জানা গেছে, হালদা নদীকে ‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ’ ঘোষণা করে সেখানে নদীর তীরবর্তী এলাকায় একটি নান্দনিক তোরণ ও নামফলক স্থাপন করবে মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউট।
১৯৭২ সালের ৪ জুলাই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘মাছ হবে দ্বিতীয় প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী সম্পদ’। বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই মৎস্য অধিদফতর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সম্পর্কে গবেষণাধর্মী কাজ, ইলিশ সম্পদের স্থায়িত্বশীল আহরণ, মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্যের রপ্তানি বাড়ানো এবং মান উন্নয়নে কাজ করছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
খাগড়াছড়ির রামগড়ের পাহাড় থেকে উৎপত্তি হওয়া দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীকে ‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ’ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। জেলার রামগড় উপজেলার পাতাছড়া ইউনিয়নের বেলছড়ি নামক দুর্গম এলাকার হাসুকপাড়া পাহাড় থেকে হালদা নদীর উৎপত্তি হয়ে মানিকছড়ি, ফটিকছড়ি, রাউজান ও হাটহাজারি উপজেলার মধ্যদিয়ে কর্ণফুলী নদীতে মিলিত হয়েছে।
অপার জীব বৈচিত্র্য ও মৎস্য সম্পদে ভরপুর এ নদী জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখছে। এটি বাংলাদেশের একমাত্র রুই জাতীয় মাছের (রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিঘনি) প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র। এছাড়া বিশ্বের একমাত্র এই জোয়ার-ভাটার নদী থেকে সরাসরি রুই জাতীয় মাছের ডিম সংগ্রহ করা হয়।
হালদা নদীর উৎস, সম্পদ, ঐতিহ্য এবং অর্থনৈতিক অবদান বিবেচনা করলে এ নদী বাংলাদেশের জাতীয় নদীর স্বীকৃতি পাওয়ার উপযুক্ত। ‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ’ ঘোষণা করা হলে হালদা নদী নতুন প্রাণ ফিরে পাবে এবং মৎস্য সম্পদসহ জীব বৈচিত্র্য রক্ষা পাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।