হালদায় ৩০ হাজার চিংড়ি রেণু জব্দ, অসাধু চক্র বেপরোয়া

10

হাটহাজারী প্রতিনিধি

হালদায় এখন চলছে কার্প জাতীয় মা-মাছের প্রজনন মৌসুম। আর এ সময়টাতে এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি অবৈধভাবে জাল দিয়ে চিংড়ি রেণু সংগ্রহ করে যাচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন ও নৌ-পুলিশ এ ব্যাপারে সচেষ্ট থাকলেও মৎস্য অধিদফতরের কার্যকর কোন পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না বলে অভিযোগ ডিম সংগ্রহকারীদের।
জানা গেছে, গত ৮ মে সকাল থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত হালদা নদীতে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৩০ হাজার চিংড়ি রেণু, একটি নৌকা, রেণু ধরার ঠেলা জালসহ আরও নানা সরঞ্জাম জব্দ করেছে নৌ-পুলিশ। পরে আটককৃত চিংড়ি রেণু তৎক্ষণাৎ নদীতে অবমুক্ত এবং জব্দকৃত নৌকা ফুটো করে নদীতে ডুবিয়ে দেয়ার পাশাপাশি ঠেলা জাল ও নানা সরঞ্জাম আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। তবে এ ঘটনায় নৌ-পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।
এ ব্যাপারে নৌ-পুলিশ চট্টগ্রাম অঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া পিপিএম বলেন, হালদা নদীতে নিয়মিত অভিযান পরিচলনাকালে নগরীর সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবিএম মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে নৌ টহলদলের এএসআই জয়নাল আবেদীন, এএসআই খলিল ও হালদা অস্থায়ী নৌ ক্যাম্পের সঙ্গীয় ফোর্স হালদার মোহনায় কালুরঘাট সেতু সংলগ্ন এলাকা এবং উত্তর মোহরা মন্দির এলাকার মোহনা তীরবর্তী নদী থেকে এসব চিংড়ি রেণু, একটি নৌকা, রেণু ধরার ঠেলা জাল, তিন পাতিলসহ আরও নানা সরঞ্জাম জব্দ করে।
তিনি আরও জানান, গত ৮ মে বেলা ১১টার দিকে রাউজান উপজেলার কচুখাইন এলাকায় অবৈধভাবে মাছের রেণু পোনা ধরার সময় কয়েকটি ঠেলা জাল, পরিত্যক্ত নৌকা ও প্রায় ৯-১০ হাজার রেণু পোনা মাছ জব্দ করা হয়। পরে এসব রেণু তৎক্ষণাৎ নদীতে অবমুক্ত করা হয়। পাশাপাশি জব্দকৃত জাল ও নৌকা ধ্বংস করা হয়। এছাড়া হালদা নদীর মা মাছ রক্ষায় ও প্রজননের সুরক্ষায় নৌ পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, হালদা নদীতে কার্প জাতীয় মা-মাছের প্রজনন মৌসুমে এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি অবৈধভাবে জাল দিয়ে চিংড়ি রেণু সংগ্রহ করতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তবে এ নিয়ে উপজেলা প্রশাসন ও নৌ-পুলিশ সচেষ্ট থাকলেও মৎস্য অধিদফতরের কার্যকরী কোন পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না বলে অভিযোগ করেছে হালদা পাড়ের ডিম সংগ্রহকারীরা।
তারা জানান, চলতি মাসে যে কোন সময় হালদা নদীতে কার্প জাতীয় মা-মাছ ডিম ছাড়বে। বিগত তিন-চার মাস পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট মৎস্য অধিদফতরের কোন কার্যকরী পদক্ষেপ চোখে পড়েনি; তারা নিরব দর্শকের ভূমিকায় রয়েছে। অথচ হালদা ও নদীর মা-মাছ এবং জীববৈচিত্র্যের সুরক্ষায় উপজেলা প্রশাসন ও নৌ-পুলিশ দিবারাত্রি অভিযান পরিচালনাসহ নানা সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী বলেন, ‘মৎস্য অফিস একা অভিযান পরিচালনা করবে নাকি। আমরা উপজেলা প্রশাসনকে সাথে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করছি। গত কিছুদিন আগে রাউজানের এসিল্যান্ডকে নিয়ে উপজেলা মৎস্য অফিস হালাদায় অভিযান পরিচালনা করেছে।’ তবে, জেলা মৎস্য অফিসের কোন একক অভিযানের বিষয়ে তিনি সুনির্দিষ্ট করে কোন কিছু নিশ্চিত করতে পারেনি।