হালদায় ভেসে উঠল নিখোঁজ মাদ্রাসাছাত্রের মরদেহ

10

হাটহাজারী প্রতিনিধি

হালদা নদীতে নিখোঁজ মাদ্রাসাছাত্র মো. আনাসের (১৪) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার ভোরে মরদেহটি নদীতে ভেসে উঠে। খবর পেয়ে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল।
হাটহাজারী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শাহাজাহান জানান, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার গড়দুয়ারা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড চেংখালী খালের স্লুইস গেট এলাকায় আনাস ও তার দুই বন্ধু খেলার সময় হালদায় তাদের ফুটবলটি পড়ে যায়। বলটি তুলতে গিয়ে তলিয়ে যায় আনাস। ৯৯৯ এ খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আমরা উদ্ধার অভিযান শুরু করি।তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় উদ্ধারকারী দল নদীতে তল্লাশি শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় তল্লাশি অভিযান স্থগিত হয়। এর মধ্যে শুক্রবার নগরীর আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশন থেকে আসা চার সদস্যের ডুবুরি দল সকাল ৭টা থেকে ফের উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। বিকেল ৩টার দিকে জোয়ারের কারণে ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযান সাময়িক স্থগিত করে। এর মধ্যে শনিবার ভোরে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে নদীর হাটহাজারী অংশে ওয়াপদার বাঁধ এলাকায় মরদেহটি ভেসে উঠে।
আনাস উক্ত ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের হাজী দুলা মিঞা সওদাগর বাড়ির দুবাই প্রবাসী মো. আবু তাহেরের একমাত্র পুত্র। সে পৌরসভার পূর্ব দেওয়ান নগরের শাহ অলিউল্লাহ ইনস্টিটিউট মাদ্রাসার ৮ম শ্রেণির ছাত্র। সে মায়ের সাথে ১১ মাইল এলাকার উম্মে মঞ্জিলে নানার ভাড়া বাসায় বসবাস করতো।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. শাহিদুল আলম বলেন, শনিবার ঘটনাস্থল থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে ছাত্রের মরদেহটি ভেসে উঠলে ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা উদ্ধার করে। এরপর স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেরওয়ার মোর্শেদ তালুকদারের মাধ্যমে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।
এদিকে আনাসের মরদেহটি উদ্ধারের খবর পেয়ে হালদা পাড়ে শত শত জনতা ও তার সহপাঠীদের ভিড় করতে দেখা গেছে। এ সময় পুত্রের সন্ধানে দুবাই থেকে ছুটে আসা পিতা আবু তাহের কান্নায় ভেঙে পড়েন। মরদেহটি বাড়িতে নিয়ে গেলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। পাশাপাশি তার পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনের আহাজারিতে এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে উঠে। তার মা পুত্র শোকে বারবার অজ্ঞান হয়ে পড়ছিলেন।
গতকাল গড়দুয়ারা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের হাজী দুলা মিঞা সওদাগর বাড়ি জামে সমজিদে নামাজে জানাজা শেষে আনাসকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।