হাটহাজারীতে সবজি চাষীদের মুখে হাসি

74

করোনা প্রতিরোধে সরকারি নিদের্শনা অনুযায়ী হাটহাজারীতে চলছে লকডাউনের ১১তম দিন। করোনায় দিশেহারা উপজেলার হাজার হাজার সবজি চাষি। তাই সরকারি চাল সহায়তার সঙ্গে নগদ বরাদ্দের টাকা দিয়ে নিজ নিজ এলাকার কৃষকের কাছ থেকে সবজি কিনে কর্মহীনদের মাঝে বিতরণ করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেন।
ইউপি চেয়ারম্যানরা ইউএনও’র নিদের্শনায় সরকারি ত্রাণের সঙ্গে প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে সবজি কিনে তা দিনমজুরদের মাঝে বিতরণ করছেন। ফলে সবজি চাষিরা ন্যায্য মূল্য পেয়ে লাভের মুখ দেখছেন। বড় ধরনের ক্ষতির মুখ থেকে রক্ষা পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে বলে জানান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ আব্দুল্লাহ ওয়াহেদ।
তিনি আরও জানান, হাটহাজারীতে গ্রীষ্ম মৌসুমে প্রায় ৫৫০ হেক্টর জমিতে কাঁকরোল, ঢেঁড়স, ঝিঙা, লাউ, বেগুন, কচু, মরিচসহ নানা সবজি চাষ করেন প্রায় ৫ হাজার চাষি। এছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ হাটহাজারী উপজেলার বড় বড় মাদ্রাসার চাহিদা মিটিয়ে এসব সবজি শহরেও যায়। তবে এইবার করোনার কারণে সব বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েন সবজি চাষিরা। মাঠেই সবজি নষ্টের দুঃস্বপ্ন নিয়ে নিঃস্ব হওয়ার পথে ছিলেন তারা। এই সময়ে প্রান্তিক সবজি চাষিদের বাঁচাতে এগিয়ে এসেছেন ইউএনও স্যার।
ধলই ইউনিয়নের কৃষক প্রকাশ বড়ুয়া জানান, ক্ষেতভর্তি সবজি ফলিয়েও দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ইউএনও স্যার আমাদের বাঁচিয়েছেন। তার কারণে পরিবহন এবং শ্রমিক মজুরি ছাড়া ক্ষেতে বসেই ন্যায্যমূল্যে ইউপি চেয়ারম্যানদের কাছে সবজি বিক্রি করতে পারছি।
গুমানমর্দ্দন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান জানান, ইউএনও স্যারের নির্দেশে সরকারি চাল সহায়তার সঙ্গে প্রথম দফায় ৭২জন এবং দ্বিতীয় দফায় ৭৫জন কর্মহীন দিনমজুরদের কৃষকের ক্ষেত থেকে সরাসরি বাজার দরে সবজি (কচু, কচুর লতিসহ নানা ধরনের সবজি) কিনে বিতরণ করেছি।
এ ব্যাপারে ইউএনও রুহুল আমিন সাংবাদিকেদের বলেন, করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া কর্মহীনদের ৮ম ও ৯ম বরাদ্দে হাটহাজারী উপজেলার জন্য চালের সহায়তার সঙ্গে প্রায় ৬৫ হাজার টাকা নগদ সহায়তা পেয়েছি আমরা। যা দিয়ে ডাল, পেঁয়াজ, তেল কিনে দিতাম আমরা। তবে প্রান্তিক কৃষকদের বাঁচাতে গত সপ্তাহে ডাল, তেলের পরিবর্তে সবজি বিতরণের ইউপি চেয়ারম্যানদের নিদের্শনা প্রদান করি। এ নিদের্শনা মতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানরা তা বস্তবায়ন করতে শুরু করেছে। ফলে প্রান্তিক চাষিদের ক্ষেতে গিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানরা ন্যায্য মূল্য সবজি ক্রয় করায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখ থেকে রক্ষা পাওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি।