হাটহাজারীতে লোকালয়ে বিপন্ন প্রজাতির বনবিড়াল

12

হাটহাজারী প্রতিনিধি

হাটহাজারীতে লোকালয়ে আসা একটি বিপন্ন প্রজাতির বন বিড়াল স্থানীয় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় উদ্ধার করেছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা। গত মঙ্গলবার বিকালে উপজেলার মাদার্শা ইউনিয়নের আকবরিয়া স্কুল এলাকা থেকে প্রাণিটি উদ্ধার করা হয়।
পৌরসভার ১১ মাইলস্থ স্থানীয় বন বিভাগের বিট কাম চেক স্টেশন কর্মকর্তা ও সহযোগী রেঞ্জ কর্মকর্তা ফজলুল কাদের চৌধুরী জানান, বিপন্ন প্রজাতির এ বন বিড়ালটি খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে এসেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয়রা বনবিড়ালটি আটক করে বন বিভাগকে অবহিত করে। পরে বন বিভাগের কর্তারা ওই এলাকায় গিয়ে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় বনবিড়ালটি উদ্ধার করে নিয়ে আসে।জানা গেছে, বন বিড়াল, জংলি বিড়াল, খাগড়া বিড়াল বা জলাভ‚মির বিড়াল হিসেবে পরিচিত। মূলত গাছের কোটর, গুহা, জলাশয়ের ধারের ঝোপঝাড়, পুরনো ভাঙ্গা দালান-কোঠা ও গ্রামীণ বনে এরা বাস করে। এটি খুবই চালাক প্রকৃৃতির প্রাণি। মাটিতে যেমন দ্রæত দৌড়াতে পারে তেমনই গাছে ওঠা বা সাঁতারেও খুব দক্ষ। নিশাচর এই প্রাণিটি খাবারের সন্ধানে এক রাতে ৩ থেকে ৬ কিলোমিটার পর্যন্ত পথ পাড়ি দেয়। বন বিড়াল ছোট পাখি, খরগোশ, গিরগিটি, মাছ, ব্যাঙ ইত্যাদি ছাড়াও ইঁদুর ও ধানক্ষেতের পোকামাকড় খেয়ে কৃষকের উপকার করে। তবে এরা খাদ্যের অভাবে মাঝে মাঝে লোকালয়ে হানা দিয়ে কৃষকের হাঁস-মুরগিও খায়। এক লাফে কয়েক ফুট পৌঁছে যেতে পারে। দিনের বেলায় এরা লতাপাতাঘেরা বড় গাছের কোটরে ঘুমায় বা তন্দ্রাচ্ছন্ন থাকে। প্রজনন মৌসুমে গাছের কোটরে দুই থেকে চারটি ছানা প্রসব করে।
ব্যাপক নিধন ও বাসস্থান ধ্বংসের কারণে বন বিড়াল বিপন্ন। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) বন বিড়ালকে ‘ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত’ বলে তালিকাভুক্ত করেছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণি (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের এক নম্বর তফসিল অনুযায়ী এই বন্যপ্রাণি সংরক্ষিত। তাই এটি হত্যা, শিকার বা এর কোনো ক্ষতিকরা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
গতকাল বুধবার বন বিড়ালটি বন বিভাগের আওতাধীন গহীন বনে অবমুক্ত করা হয়। এ সময় বন বিভাগের অফিস সহকারী আশুতোষ দাশ, এফজি মিলন মÐল ও এসআরটিবিডি’র মো. শাহজালাল মিয়াসহ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।