হাটহাজারীতে মুক্তিযোদ্ধাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মধ্যযুগীয় নির্যাতন

12

হাটহাজারী প্রতিনিধি

জায়গা জবর দখল করতে মধ্যযুগীয় কায়দায় হাটহাজারীতে গাছের সাথে বেঁধে সত্তরোর্ধ্ব এক অসহায় বীর মুক্তিযোদ্ধার ওপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। নির্যাতনের শিকার বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম আহমদ হোসেন চৌধুরী।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে নির্যাতনের ঘটনায় তার কন্যা মাজেদা বেগম বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা (নং-৩২) করেন। এরপর পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ঘটনায় সর্বত্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, নির্যাতনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ সমালোচনা হচ্ছে। পাশাপাশি উপজেলাজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানাচ্ছেন সাধারণ জনগণ ও মুক্তিযোদ্ধারা।
এর আগে ১৭ ফেব্রুয়ারি সকালে উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের মন্দাকিনী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা ওই গ্রামের নজর মোহাম্মদ চৌধুরী বাড়ির মৃত ফারুক আহমেদের পুত্র।
মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে আইনানুগ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. শাহিদুল আলম বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি জানার পর গত মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও স্থানীয় চেয়ারম্যানকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে গেছি। জানতে পারি, নির্যাতনের শিকার বীর মুক্তিযোদ্ধার ভিটের সাথে লাগোয়া জায়গা দখল নিতে প্রতিপক্ষের লোকজন তার ওপর মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালায়। তাকে গাছের সাথে বেঁধে রাখে এবং তার জায়গায় নির্মিত পাকা দেয়ালটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল আলম জানান, এ ঘটনার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি। মঙ্গলবার রাতে প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর ইউএনও’র মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দাবি জানাচ্ছি।
এ নির্মম ঘটনা সংঘটিত হলেও বিচারের আশায় এ মুক্তিযোদ্ধা তা প্রকাশ করেননি। তবে মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনাটি ফাঁস হলে উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে। নির্যাতিত মুক্তিযোদ্ধার কন্যা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেন।
মামলা দায়ের করার বিষয়টি নিশ্চিত করে হাটহাজারী মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ রুহুল আমিন সবুজ জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধাকে নির্যাতন করার ঘটনায় তার কন্যা মাজেদা বেগম বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের মন্দাকিনী গ্রামের নজর মোহাম্মদ চৌধুরী বাড়ির মৃত তোফাজ্জল হোসেনের পুত্র লোকমান হাকিম (৫০), তার স্ত্রী নাহিদ সুলতানা (৪০) এবং তাদের সন্তান ইমরাজ হাকিম (২২) ও মিশকাত হাকিমকে (১৬)। ঘটনার মূল ইন্দনদাতা নাহিদ সুলতানাকে আটক করা হয়েছে। অন্য আসামিরা পলাতক রয়েছেন। তাদের আটকের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে।