হাটহাজারীতে ভুয়া কাজী আটক

57

বাংলায় একটি প্রবাদ আছে, ‘বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এবার ঘুঘু তোমার বধিব পরান’। ঘুঘুর মত ভুয়া কাজী মো. হাসানও আটকে গেলেন ফাঁদে। তার শেষ রক্ষা হয়নি।
মো. হাসান (৪২) কাজী পরিচয়ে দুই শতাধিক বিয়ে নিবন্ধন করেছেন। এমনকি রেজিস্ট্রেশন করিয়েছেন। দিয়েছেন কাবিননামা। তিনি ‘গ্যারান্টি’ সহকারে বাল্য বিয়ে, ভুয়া বিয়ে, কন্ট্রাক্ট বিয়েসহ নানা ঝামেলার বিয়ে পড়িয়েছেন ২০০টির মত।
তিনি বারবার এমন কাজ করে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। গত রবিবার (৩০ জুন) রাত ১১টার দিকে
হাটহাজরী পৌরসভার মেডিকেল গেটের উত্তর পাশে ওয়াপদা (বিদ্যুৎ) অফিসের পশ্চিমে ইদ্রিস ভবনে বিয়ে পড়ানোর সময় তাকে হাতেনাতে পাকড়াও করলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রুহুল আমীন।
মো. হাসান কয়েক বছর আগে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। এর আগে তার নাম চিল তপন কান্তি নাথ। তিনি হাটহাজারী পৌরসভার মীরের খীল গ্রামের নাথ পাড়া হরিপদ নাথ এর পুত্র।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউএনও রুহুল আমীন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ছদ্মবেশে সিএনজি অটোরিক্শায় চড়ে পৌর এলাকার মেডিকেল গেটের উত্তর পাশে ওয়াপদা (বিদ্যুৎ) অফিসের পশ্চিমে ইদ্রিস ভবনের নীচ তলার একটি কক্ষে প্রবেশ করি।
এ সময় ভুয়া কাজী মো. হাসান তার সহকারী পরিচয়ে রাউজান পৌরসভা ৫নং ওয়ার্ডের সালামত উল্লাহর বাড়ির মৃত এজহারুল হক মো. এহসান (২৩) নামে এক যুবককে সাথে নিয়ে একটি বিয়ে পড়াচ্ছিলেন। এ সময় তাকে ও তার সহকারীকে পুলিশের সহযোগিতায় আটক করি।
তিনি আরও জানান, তিনি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন, তারা গত ৭-৮ বছর ধরে ভুয়া বিয়ের ব্যবসা করে আসছেন এবং প্রায় ২০০টি বিয়ে পড়িয়েছে। তবে তার কাছ থেকে জব্দকৃত রেজিস্টারে প্রায় ৬৬টি বিয়ের বর-কনের ও স্বাক্ষীর স্বাক্ষর রয়েছে। তবে একটা বিয়েও সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সম্পন্ন হয়নি। প্রতি বিয়ের জন্য তারা মোটা অংকের টাকা আদায় করতেন। তারা মূলত কন্ট্রাকে ভুয়া বিয়েগুলো করাতো যেখানে অল্পবয়সী ও অসহায় মেয়েদের বিয়ের জালে ফাঁসানো হতো। ভুয়া হওয়ার কারণে এসব বিয়েতে মেয়েরা প্রতারিত হওয়ার পরও কোন প্রতিকার পান না। আটককৃত দুইজনকে পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়েছে।