হযরত শাহজী পীর ছাহেব (রহঃ) বিংশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ

527

খোন্দকার মোজাম্মেল হক

১৯১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি, বঙ্গাব্দের হিসাবে মাঘ মাসের ১২ তারিখ ১৩১৪ বঙ্গাব্দ, দিনটা সপ্তাহের ঈদের দিন জুম্মাবার পবিত্র শুক্রবার। পবিত্র ধরাধামে এলেন মহান আল্লাহপাকের অফুরন্ত অনুগ্রহে এক আধ্যাত্মিক সাধক ও জামানার সের মহামানব। তিনি আওলাদে রাসুল, আওলাদে হযরত আলী (রাঃ), আওলাদে ইমাম হুসাইন, আওলাদে হযরত বড় পীর আবদুল কাদির জিলানী (রাঃ)। চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়ায় এক উঁচু দরের কামেল বুজুর্গ আলহাজ্ব সৈয়দ আবদুর রহিম শাহ (রহঃ)-এর ঘর আলোকিত করে দুনিয়ায় আগমন করেন যুগশ্রেষ্ঠ মুজাদ্দেদ হযরত সৈয়দ আবদুল বারী শাহ (রহঃ)। তাঁর আম্মাজানও হযরত (দঃ)-এর বংশধর। তাঁর নাম সৈয়েদা মোসাম্মাৎ মাহমুদা খাতুন। হযরত সৈয়দ আবদুল বারী শাহ (রহঃ) ভক্ত মুরীদান-আশেকানদের কাছে শাহজী পীর ছাহেব কেবলা নামেই খ্যাত ছিলেন। চট্টগ্রামের মিরেরশরাইর ছুফিয়া নুরীয়া মাদ্রাসা, বড় তাকিয়ার সন্নিকটে একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও চিনকী আস্তানায় ইসলামী শিক্ষালয়ে তাঁর শৈশব ও বাল্যকালের একটি অংশ কাটে। এ সময়ে তিনি পবিত্র কুরআনে হাফেজ হন। অতঃপর তিনি পটিয়া মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেন। চট্টগ্রামের দারুল উলুম মাদ্রাসায় আরবী শিক্ষা লাভ করেন। শাহজী পীর ছাহেব কেবলা (রহঃ) আমাকে বলেছেন, তিনি ভারতের সাহরানপুর দারুল উলুমে আরবী, উর্দু ও ফার্সি ভাষার উপর শিক্ষালাভ করেন। এই সময় তিনি ইংরেজি ভাষাও শিখেন। এলমে তাসাউফের প্রতি প্রবল আগ্রহ দেখে লক্ষ্নর সুফী সৈয়দ দায়েম (রহঃ) তাঁকে নিজের খেদমতে নিয়ে যান। উলুম আযম নামে খ্যাতিমান সুফী সৈয়দ দায়েম লক্ষেèৗবী (রহঃ) পরবর্তীতে ৪৭-এর পর লাহোরে আস্থানা স্থাপন করেন। সেখানেই তাঁর মাজার শরীফ অবস্থিত। সূফী সৈয়দ দায়েম (রহঃ) ছিলেন বড় পীর আবদুল কাদের জিলানী (রাঃ)-এর আওলাদ। কাদেরীয়া আলিয়া ত্বরীকায় তিনি শাহজী পীর ছাহেব (রহঃ)-কে খেলাফত প্রদান করেন। এই পীর-মুর্শিদের সাথে পায়ে হেঁটে ১৯৪৬ সালে বৃটিশ রাজত্বের সময় শাহজী পীর ছাহেব প্রথমবারের মতো পবিত্র হজ্বব্র্রত পালন ও রাসুল পাক (দঃ)-এর রওজা মুবারক জিয়ারত করেন।
হযরত শাহজী পীর ছাহেব (রহঃ) ছিলেন সম্পূর্ণ প্রচার বিমুখ। তিনি অল ইন্ডিয়া রেডিও তথা আকাশবাণীতে হিন্দি ও উর্দুগানকে বাংলায় অনুবাদ করতেন। নিজেও ইসলামী সঙ্গীত রচনা করতেন। এসব বিষয়ে তিনিই আমাদের অবহিত করেছেন। এরই মধ্যে তিনি বিশ্বের খ্যাতিমান পীর-বুজুর্গদের দরবারে গমন করতে থাকেন। বিভিন্ন সময় অনেক উঁচুমানের বিখ্যাত ওলী-বুজুর্গদের সাথে তাঁর মোলাকাত হয়ে যায়। অতি অল্প সময়ের মধ্যে তিনি বিভিন্ন ত্বরীকায় ১৭ জন কামেল মুর্শিদের কাছ থেকে খেলাফত লাভ করেন। তাঁর মুর্শিদ কেবলাগণ প্রায় সবাই সমকালীন সময়ের গাউস, কুতুব ও মশহুর বুজুর্গ ছিলেন। তিনি বলতেন তামাম দুনিয়ায় একই সময়ে যেই ৪০ জন ইব্রাহিম (আঃ)-এর চরিত্রের গাউস থাকেন, তাদের ১৭ জনই তাঁকে অনুগ্রহ করেছেন। উলুল আযম সূফী সৈয়দ দায়েম লক্ষেèাবী (রহঃ)-এর কাদেরীয়া আলীয়া ত্বরীকায় সাধনা করেন। এছাড়া তিনি অন্য যেই ত্বরীকায় চর্চা করেছেন তা হলো চিশতিয়া-নিজামীয়া ত্বরীকা।
আমার পীর-মুর্শিদ শাহজী পীর ছাহেব (রহঃ) আমাকে বলেছেন যে, কোনো কোনো পীর-মুর্শিদ জোর করেও তাঁকে খেলাফত দিয়ে দিয়েছেন। দিল্লীর উপকণ্ঠে মাহবুবে পাক হযরত নিজামুদ্দীন আউলিয়া সৈয়দ বোখারী আল বদায়ুনী (রহঃ)-এর আওলাদ, যুগশ্রেষ্ঠ মুজাদ্দেদ হযরত পীরে জামীন শাহ সৈয়দ বোখারী আল্ বদায়ুনী (রহঃ)-এর দরবারে তিনি একটা সময় কাটিয়েছেন। তিনি দয়া করে চিশতীয়া-নিজামীয়া ত্বরীকায় শাহজী পীর ছাহেব (রহঃ)Ñকে খেলাফত দিয়েছেন। এমনকি চট্টগ্রামের বাহির সিগনালের আল আমীন বারীয়া দরবার শরীফেও তিনি কয়েকবার তশরীফ এনেছেন। শাহজী পীর ছাহেব (রহঃ)-এর দুনিয়ার জীবনে এমনি এক বার্ষিক মিলাদুন্নবী মাহফিলে তিনি তাঁর বড় শাহজাদা সৈয়দ বদরুদ্দোজা বারী (মা.জি.আ.)-কে কোলে করে এনে তাঁর নিজের আসনে বসিয়ে দেন। জীবদ্দশাতেই শাহজী পীর ছাহেব এই বড় শাহজাহাদাকে সাজ্জাদানশীন হিসেবে ঘোষণা করেন। দীর্ঘদিন যাবত মাহফিলের চিঠিতেও বড় শাহজাদার নামের পাশে দরবারের সাজ্জাদানশীন লেখা থাকতো।
শাহজী পীর ছাহেব (রহঃ) মূলত সেই ব্রিটিশ আমলে ১৯৪০ সালের দিকে আধ্যাত্মিকতায় খুবই উঁচু দরজায় উত্তীর্ণ হন। কিন্তু রেয়াজত, সাধনা ও প্রকাশ সবই ছিল গোপন। তিনি কারো কাছে ধরা দিতেন না।
যতোটা জানা যায়, ১৯৬৪ সালের শেষের দিকে হঠাৎ হযরত শাহজী পীর ছাহেব কেবলা নিখোঁজ হয়ে যান। পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন কেউ জানতো না তিনি কোথায় আছেন। এ সময় জানা যায় যে, তিনি মজ্জুব হালতে সিলেট শহরতলীর গোলাপগঞ্জ এলাকার এক জঙ্গলে রেয়াজতে আছেন। গভীর জঙ্গল হওয়ায় স্থানটি বন্য জন্তু-জানোয়ারের বিচরণের ক্ষেত্র ছিল। এখানে দিনের বেলাও কেউ সাহস করে যেতো না। এই জনমানবহীন গভীর জঙ্গলে বাঘ, সাপ ইত্যাদির বিচরণের ভেতরে কিভাবে তিনি দীর্ঘ সময়, কারো মতে এক যুগ তথা ১২ বছরের মতো অবস্থান করলেন, কে সেখানে খাদ্য ও পানীয়ের যোগান দিল একটা চির রহস্য হয়ে আছে। একটি পাথরে হাত রেখে তিনি এই দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেন। সেই পাথরে শাহজী বাবাজানের হাতের চাপ এখনও অক্ষত আছে। এই পাথরটি হয়ত শাহ স্ন্দুর (রহঃ)Ñএর মাজার শরীফে সংরক্ষিত আছে। শাহ সুন্দর (রহঃ) ছিলেন হযরত সৈয়দ শাহজালাল ইয়েমেনী (রহঃ)-এর সঙ্গী ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম একজন।
২০০১ সালের ২৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার দরবারে বারীয়া শরীফের বার্ষিক ওরশ ও মিলাদুন্নবী মাহফিল হয়ে যায় আন্তর্জাতিক ইসলামী কনফারেন্সে। এর আগে ২০০০ সালের রবিউস সানী মাসে ফাতেহা ইয়াজদাহমে বাগদাদ শরীফে শাহজী পীর ছাহেব কেবলা (রহঃ) আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে যোগ দেন। পীরানে পীর দস্তগীর গাউসুল আযম বড় পীর ছাহেবের বাসভবন গাউস মঞ্জিলে তাঁর থাকার ব্যবস্থা করা হয়। সাজ্জাদানশীন আওলাদে গাউসুল আজম (রাঃ)-এর নির্দেশে থাকা-খাওয়া ও খেদমতের আয়োজন হয়। এই অধম লেখকও সে সময় হুজুরের পরম অনুগ্রহে তাঁর সাথী হিসেবে বাগদাদে ছিলেন। আমাদের থাকার ব্যবস্থা হয় ৫ তারা হোটেল সার্সিয়া ইন্টারন্যাশনালে। ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহমের রাতে শাহজী পীর ছাহেব মেহমানদের একাংশের জন্য ৭০টি দুম্বা কুরবানী করে খাওয়ার আয়োজন করেন। এ রাতে গাউসে পাকের সাজ্জাদানশীন বংশধরদের আমন্ত্রণে শাহজী বাবাজান আমাদের নিয়ে গাউস মঞ্জিলে রাতের খাবার গ্রহণ করেন। সেই অনুষ্ঠানে গাউসে পাকের মসজিদের খতিব সৈয়দেনা আবদুর রহমান জিলানীও (মা.জি.আ.) উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই আল আমীন বারীয়া দরবার শরীফের পরবর্তী মাহফিলের দাওয়াত দেন শাহজী পীর ছাহেব কেবলা (রহঃ)। তাঁরা সানন্দে দাওয়াত গ্রহণ করেন। গাউসে পাকের সাজ্জাদানশীন মুতোয়াল্লীর বড় ভাই সৈয়দ ইউসুফ জিলানী এক সময় পাকিস্তানে রাষ্ট্রদূত ও পরে ইরাকের পররাষ্ট্র সচিব ছিলেন।
২০০১ সালে বারীয়া দরবারের বার্ষিক মাহফিলে এলেন গাউসে পাকের আওলাদ সৈয়দ খালেদ আবদুল কাদের জিলানী ও সৈয়দ মনসুর আবদুল কাদের জিলানী। এরই মধ্যে মালীবাগের দরবারে বারীয়ায় ইরাকের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আলী ও গাউসে পাকের দরবার মসজিদের ইমাম আওলাদে গাউসে পাক আবদুর রহমান জিলানী (মা.জি.আ.) বাবাজান কেবলার সাথে দেখা করে যান।
মাহফিলে দিল্লী থেকে মাহবুবে পাক নিজামুদ্দীন আউলিয়া (রহঃ)-এর সাজ্জাদানশীন হযরত খাজা আহমেদ নিজামী (মা.জি.আ.), আজমীর শরীফের সৈয়দ ছলিম উদ্দিন চিশতীসহ বিভিন্ন বিশ্ব দরবারের বুজুগরা উপস্থিত ছিলেন। এই মাহফিলে লক্ষাধিক ভক্ত-আশেকানের সামনে আরবীতে গাউসে পাকের আওলাদ ও সাজ্জাদানশীন গাউসে বাগগাদ বক্তব্য রাখেন। তাঁর এই আরবী বক্তৃতার সাথে সাথে তরজামা করেন খতিবে বাঙাল মুফতী মাওলানা ওবায়দুল হক নঈমী (মা.জি.আ.)।
দরবারে জশনে জৌলুসের এই বার্ষিক মাহফিলে গাউসে পাকের আওলাদ বলেন, শাহজী পীর ছাহেব কেবলা হযরত শাহসুফী সৈয়দ আবদুল বারী শাহ (রহঃ) শুধুমাত্র কামেল ওলী-মুজাদ্দেদ-ই নন, তিনি খোদ রাসুলে করীম (দঃ)-এর আওলাদ। তিনি আওলাদে ইমাম হোসাইন (রাঃ) এবং আওলাদে গাউসে বাগদাদ আবদুল কাদের জিলানী (রাঃ)।
আওলাদে রাসুল, পীরে কামেল হযরত শাহজী বারী বাবা (রহঃ)-এর কারামতের প্রকাশ শুরু হয় সেই চললিশ দশক থেকেই। তবে ১৯৫০ থেকে ১৯৬০ দশকে এসব আলোচিত হতে থাকে। চট্টগ্রামের তৎকালীন নেতা ফজলুল কাদের চৌধুরী এ সময় নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন। আওয়ামী লীগ নেতা জহুর আহমেদ চৌধুরীও যে কোনো সমস্যা দেখা দিলেই হুজুর কেবলার শরণাপন্ন হতেন।
১৯৬৮ সালে শাহজী বাবাজানের সাথে দেখা করলেন চান্দগাঁও কালুরঘাট এলাকার একজন বিশ্বস্ত আশেক শেখ মাজনুল হক। তাঁর এই এলাকার বড়–য়া পাড়ার ভেতরে কিছু জমি ছিল। তিনি বাবাজান কেবলাকে এখানেই দরবার শরীফ স্থাপনের জন্য জমিটি দান করেন। অথচ এই এলাকাটি বৌদ্ধ ধর্মের লোকজনের এলাকা। এ ছাড়া জমিটি যেখানে তার চার পাশে বৌদ্ধদের মধ্যে যারা যাদু-টোনার চর্চা করে তাদের আস্তানা। এমনকি অঘোষিতভাবে এখানে সেই সব দুষ্টলোক নারী ব্যবসা করতো। তারা কোনোভাবেই চায়নি তাদের এই নরক রাজ্যর মধ্যে মুসলমান সাধক শাহজী বাবার আস্তানা গড়ে ওঠুক। শাহজী পীর ছাহেব (রহঃ) এখানেই একটি ছোট মসজিদ এবং কুরআন হেফজখানা প্রতিষ্ঠাতা করেন। হেফজখানা তৈরির সময়ের একটা ঘটনা। তিনি নামাজরত ছিলেন। এ সময়ে দেখা গেল একটা বিশাল আকৃতির বিষধর গোখরা সাপ তাঁর দিকে ফণা বিস্তার করে আছে। অনেকে ভয়ে পিছু হটলো। তিনি বিন্দুমাত্র বিচলিত হলেন না। নামাজের সালাম ফিরিয়ে সাপের দিকে তাকালেন। তাঁর নূরানী চাহনীতেই সাপের ফণা নেমে গেল। তিনি সাপকে বললেন, “হয়েছে হয়েছে, এবার চলে যা”। সবাই দেখলো সেই অবাক কারামত, সাপ বিপরীত দিকে চলে গেল ফণা নামিয়ে।
হযরত শাহজী বাবাজান চান্দগাঁও দরবার এলাকায় কারও উপর কোনো জোর করেননি। কাউকে অনুরোধও করেননি। বড়–য়ারাই এক সময় আল্লাহ পাকের এই ওলীকে তাদের পার্শ্ববর্তী জমিসমূহ স্বেচ্ছায় দিয়েছেন। তিনি বাজারমূল্য অনুযায়ী সবাইকে অর্থ পরিশোধ করেছেন। যদিও তারা কোনো অর্থই নিতে রাজি ছিল না। বহু বড়–য়া জীবনের অন্তিম মুহূর্তে শাহজী বাবাজানের দর্শন চেয়েছে। বিধর্মী এই লোকগুলোর কাছেও তিনি ছিলেন একজন সাক্ষাৎ অবতার। তারাও ছুটে আসতো যেকোনো সময়। তিনি দূর থেকে তাকালেই তাদের সমস্যা ও রোগ-শোক দূর হয়ে যেতো।
রাসূল (দঃ)-এর তিনি যে কত বড় প্রেমিক ছিলেন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আল্লাহর রাসুল (দঃ)-এর একটা নাথ শুনে পকেট উজাড় করে সব বিলিয়ে দিতেন। বেখোদ হয়ে যেতেন, ঘোরের মধ্যে বেপরোয়া হয়ে পড়তেন। বলতেন, এই নাতশরীফই আমার খোরাক। টাকা-পয়সার জন্য তাঁর কেনো লোভ ছিলো না। বলতেন হাদীয়া দেয়াও সুন্নাত নেয়াও সুন্নাত। তিনি এক হাতে নিতেন, অন্য হাতে দান করে দিতেন। কোন রূহানী সন্তানের কি অভাব আছে, তিনি জানতেন। এমনভাবে তা সমাধান করে দিতেন যে, সেই সন্তান টেরও পেতেন না। কারো কাছ থেকে ধন-সম্পদ ও টাকা পয়সা কখনোই চাননি। উরস, জসনে জৌলুস, মিলাদুন্নবী (দঃ) মাহফিলেও কোনো চাঁদা তুলতেন না। তিনি বলতেন, রাসূল (দঃ)-এর আওলাদদের কারো কাছে হাত পাতা নিষিদ্ধ। মুরীদ-ভক্তরা যা দিতেন হাদীয়া হিসেবে, তিনি তা গরীব-মিসকীনদের বিলিয়ে দিতেন। মুফতী মাওলানা ওবায়দুল হক নঈমী স্বাধীনতার পর একটা বিশেষ সময় ছিলেন বাবাজান কেবলা (রহঃ)-এর খেদমতে। তিনি প্রকাশ্য মাহফিলে বলেছেন, আমি দেখেছি কত লক্ষ-কোটি টাকা হুজুরের কাছে আসতো। রাতে এলো, সকালে নেই। সবই বিলিয়ে দিয়েছেন। এসব জমা রাখলে একটা বাংলাদেশ ব্যাংক হয়ে যেতো। তাঁর দেয়া অর্থে অনেক মানুষ বিপদ থেকে উদ্ধার লাভ করেছে। কত মেয়ের বিয়ে হয়েছে, কত ছেলে-মেয়ে শিক্ষা লাভ করে পÐিত হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই।

লেখক : প্রধান সম্পাদক, আজকের সূর্যোদয়