হযরত মাওলানা শাহ সুফি শেখ অছিয়র রহমান ফারুকী চরণদ্বীপি (ক.) : বিশুদ্ধ জীবন গঠনের অনুপম আদর্শ

303

 

  1. প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অতুলনীয় একটি গ্রাম-চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার চরণদ্বীপ। তার পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে অপূর্ব এক স্রোতস্বিনী – কর্ণফুলী নদী। প্রাকৃতিক নিয়মেই জোয়ার ভাটায় প্রাণের উৎসবে মেতে উঠে এই বিস্তীর্ণ জলরাশি। সেই স্নিগ্ধ সুন্দর গ্রামে আজ থেকে ১৬৮ বছর পূর্বে (১৮৫২ খ্রিস্টাব্দ) অসাধারণ সম্ভাবনা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে এক শিশু। তার জন্ম সংবাদে মা-বাবা ও পাড়া-প্রতিবেশীরা আনন্দ উচ্ছ¡াসে মেতে উঠে। সেই শিশুটিই কালক্রমে নতুন এক আলোকরশ্মি ছড়িয়ে মানুষের মনোজগতে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করে।
    তিনিই মাইজভান্ডারি প্রেমবাদের উজ্জলতম কণ্ঠস্বর এবং হযরত গাউসুল আজম শাহ সুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারি (ক.)’র প্রথম খলিফা হযরত মাওলানা অছিউর রহমান আল ফারুকী চরণদ্বীপি (ক.) (জন্ম: ১৮৫২ খ্রি. , ওফাত: ১৯২০ খ্রি.) ।
    মাইজভান্ডারি তরিকার মূল নির্যাস-প্রেমবাদ। সমাজ দেশ ও বৈশ্বিক পরিমÐলে মানুষের মানুষের শান্তি প্রতিষ্ঠার অন্যতম শক্তিশালী দার্শনিক ভিত্তি এই প্রেমবাদ। এই তরিকা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, লোভ, হিংসা, বিদ্বেষ ও পরশ্রীকাতরতামুক্ত হৃদয়ে প্রেমের শাশ্বত আলোকবর্তিকা প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে যে ঐশী শক্তি জাগ্রত হয়, তার প্রভাবেই – ব্যক্তি থেকে সমাজ, রাষ্ট্র -সর্বত্র স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।
    শিক্ষা মানুষকে আলোকিত করে। অন্ধকার থেকে সমৃদ্ধির উজ্জ্বলতার ভুবনে বিস্তৃত করে। শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য – একটি সুস্থ দেহে সুস্থ মন এর প্রতিষ্ঠা। সুস্থ মন সুস্থ মানস গঠনের পূর্ব শর্ত। মানুষ প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে মনের ভেতর মা লালন করে, চর্চা করে, ভাবে, তা-ই তার জীবন গঠন করে। একটি কলুষিত মনের মানুষ সুন্দর চরিত্রের অধিকারী হতে পারে না।
    যে লোক সব সময় খারাপ চিন্তার মধ্যে ডুবে আছে তার জগৎটাও অভিন্ন ধারায় প্রবাহিত হয়। এ কারণে দেশের জন্য নির্ভরযোগ্য, সমাজের জন্য নিরাপদ এবং আদর্শ স্থানীয় নাগরিক গঠনের মূল সূত্র হল একটি নিষ্কলুষ আদর্শ মনের ভিত্তিস্থাপন।
    মানুষের শারীরিক, মানসিক, বুদ্ধিবৃত্তিক, আবেগীয় এবং আধ্যাত্মিক উন্নতি বিধানে নিশ্চয়তা না থাকলে সবার জন্য সুখময় ও নিরাপদ সমাজ গঠন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আর এসব কিছুর ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়ন নির্ভর করে মানুষ সবসময় কী ভাবে, কী চিন্তা করে, এসব বিষয়ের উপর। মাইজভাÐারি তরিকা এমনভাবে বিন্যস্ত করা হয়েছে যা অনুসরণ করলে, মেনে চললে মানুষের সুন্দর মন তৈরি করার ক্ষেত্রে চমকপ্রদ ফল লাভ করা যায়। একারণেই মাইজভাÐারি তরিকায় মানুষের চরিত্র গঠন এবং নিষ্কলুষ মনন গঠনকে সর্বাগ্রে স্থান দেয়া হয়েছে। বৈষয়িক অগ্রগতির চেয়ে সুন্দর মন নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা গভীরভাবে উপলব্ধি করা হয়েছে এই তরিকায়। এই তরিকার বিধিবিধানগুলো নিজের জীবনে প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে ভৌগলিক সীমাবদ্ধতা এবং সামাজিক উপাদানগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, ফলে এটি সর্বস্তরের জনগণের জন্য বাস্তবায়নযোগ্য সহজ এবং আদর্শ স্থানীয় হযরত মাওলানা অছিয়র রহমান ফারুকী চরণদ্বীপি (ক.) তাঁর জীবনে মাইজভান্ডারি তরিকার প্রবর্তক গাউসুল আজম হযরত আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারি (ক.) এর আদর্শ কে অত্যন্ত সার্থকভাবে আত্মস্থ করেছেন, জীবনে সফলভাবে প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং সমাজে বিস্তৃত পরিমÐলে কার্যকরভাবে ছড়িয়ে দিয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি ছিলেন উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা, যাঁর আলোর প্রভাবে এবং আকর্ষণীয় অনুপম চরিত্রের সৌরভে উন্নত মানবিক গুণাবলীর অধিকারী হয়েছেন অসংখ্য মানুষ, যাঁরা নিজ নিজ অবস্থানে সার্থকভাবে এই তরিকার প্রচার প্রসার ঘটাতে সুদূরপ্রসারি ভূমিকা রেখেছেন।
    সমৃদ্ধির জন্য শিক্ষার কোন বিকল্প নেই : হযরত মাওলানা শেখ অছিয়র রহমান ফারুকী চরণদ্বীপি (ক.) জ্ঞান অর্জন কে সর্বাজ্ঞে প্রাধান্য দিয়েছেন, প্রকৃত ও সঠিক জ্ঞান অর্জন করার জন্য তিনি তৎকালীন সময়ে-যখন কোন ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিলনা – তখন প্রথমে রাজশাহী মাদ্রাসা পরবর্তীতে কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসায় অত্যন্ত সফলতার সাথে শিক্ষা সমাপ্ত করেন। শিক্ষা অর্জনের প্রতিটা ক্ষেত্রে তিনি নিবিড় নিষ্ঠা ও গভীর মনোনিবেশ সহকারে শিক্ষা অর্জন করে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হন।
    তিনি অত্যন্ত মেধাবী এবং প্রখর স্মরণশক্তির অধিকারী ছিলেন। তার হস্তলিপি অত্যন্ত সুন্দর ছিল এবং এক্ষেত্রে তিনি অনেক পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি বাংলা, আরবি-ফারসি ও উর্দু ভাষায় গভীর দক্ষতা অর্জন করেন।
    শিক্ষা অর্জন ব্যতীত সমৃদ্ধ মনন এবং ব্যক্তিত্ব ধারণ করা সম্ভব নয়, এই আপ্তবাক্যটি তিনি তাঁর জীবন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সকলের জন্য স্থায়ীভাবে নির্দেশনা হিসেবে রেখে গেছেন। শিক্ষার জন্য যে ব্যয় সেটা মূলত ব্যয় নয় বরং সর্বাধিক লাভজনক বিনিয়োগ। আগে শিক্ষা গ্রহণ, তারপর অন্য কিছু।
    পবিত্র কোরআন ও হাদিস গ্রন্থের শিক্ষায় আলোকিত হওয়ার পথে তিনি নিজেকে সর্বোচ্চ নিষ্ঠায় সমর্পিত করেছেন, অর্জন করেছেন অলোকসামান্যা জ্ঞানের বিশাল দিগন্ত। যার কথায় তিনি উদ্ভাসিত হয়েছেন এবং আলোকিত করেছেন লক্ষ লক্ষ মানুষের হৃদয়।
    কঠোর পরিশ্রম ছাড়া কিছুই অর্জিত হয় না: জীবনে যে লক্ষ্য মানুষ নির্ধারণ করে- বৈষয়িক হোক বা অন্য কোন বিষয় হোক -কঠোর পরিশ্রম ছাড়া লক্ষ্যে পৌঁছানো কোনভাবে সম্ভব নয়। হযরত মাওলানা শেখ অছিয়র রহমান ফারুকী চরণদ্বীপি (ক.) তাঁর জীবদ্দশায় আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এর সন্তুষ্টি অর্জন এবং বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশিত পথে সফলকাম হওয়ার জন্য যে কঠোর পরিশ্রম করেছেন তা এককথায় বিস্ময়কর, অভাবনীয় ও অচিন্তনীয়
    শিক্ষা গ্রহণ শেষে তিনি অত্যন্ত সফলতার সাথে আলীগড় জামিউল উলুম মাদ্রাসায় দুই বছর মহাদ্দেস হিসেবে শিক্ষকতা করেন এবং পরবর্তীতে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশে (স্বপ্ন প্রাপ্ত) শিক্ষকতা পেশা ত্যাগ করে নিজ গ্রামে ফিরে আসেন। গ্রামে ফিরে তিনি মাইজভান্ডারিয়া তরিকা প্রবর্তক গাউসুল আজম হযরত মাওলানা আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী (ক.)’র আধ্যাত্মিক সাগরে নিজেকে বিলীন করে দেন এবং নিজ পীরের অত্যন্ত প্রিয়ভাজন মুরিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন।
    এই সময়ে তিনি সেই কঠোর রেয়াজত নিয়ম-শৃঙ্খলা এবং শারীরিক মানসিক ত্যাগ স্বীকার করেন তার কোন তুলনা হয় না।
    তিনি গভীর আধ্যাত্মিক সাধনায় আত্মনিয়োগ করেন, নিরবচ্ছিন্ন এবাদত বন্দেগী, প্রকৃতির নিসর্গের অবারিত সৌন্দর্য মÐিত পাহাড়-পর্বতের পরিভ্রমণ এবং কঠোর আত্মনিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে নিজেকে পরিশুদ্ধ করার অবিশ্বাস্য পথে নিজেকে সমর্পিত করেন। এসময় তিনি নিয়মিত এবাদত বন্দেগীর অতিরিক্ত, দৈনিক এক খতম পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, রাতে ন্যূনতম ৪০ রাকাত তাহাজ্জুদ নামাজ, স্বল্প আহার, অতি অল্প নিদ্রা এবং বেশিরভাগ সময় রোজা ব্রতপালন করতেন।
    নিজের ভেতরে বিশুদ্ধতম চিন্তার জগৎ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব না হলে বাইরের জগত কে বিশুদ্ধ করা সম্ভব নয়। তাই তিনি কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে নিজের ভেতরের জগৎটাকে ধুয়ে-মুছে স্রষ্টার ইচ্ছা অনুসারে এবং তার প্রিয় পীরের নির্দেশনা মোতাবেক নিজেকে অতি উচ্চ মর্যাদায় সমাসীন করেছেন।
    তিনি মানবীয় দোষ-ত্রুটিগুলো মূলোৎপাটন করে নিজের ভেতরে পুতপবিত্র আদর্শের মিনার স্থাপন করেছেন, যার কারণে তাঁর পীর গাউসুল আজম হযরত মাওলানা আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারি (ক.) তাঁর পবিত্র কালামে বলেছেন – “আমি মাইজভান্ডারে ডুব দিয়া কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরে চরণদ্বীপ গ্রামে উঠিয়াছি, সেখানে আমি একখানা মসজিদ তৈয়ার করিয়াছি, আমার মসজিদের ইমাম হযরত আলী (রা.), তোমরা তাঁর সান্নিধ্যে চলিয়া যাও। তথায় আমাকে দেখিতে পাইবে।” এক অসাধারণ স্বীকৃতি, অনন্য উজ্জ্বল সফলতা। তিনি আরো বলেছেন-“মহান আল্লাহতালা মাওলানা শাহ চরণদ্বীপি (ক.) হযরত আবু বক্কর সিদ্দিক (রা.) এর আসন দান করিয়াছেন। আমি তাহাকে সিদ্দিকের (রা.) আসনের পাইয়াছি। আল্লাহতালা তাঁহাকে হযরত আলী (রা.) গুপ্ত জ্ঞান দান করিয়াছেন। আমি তাহাকে আমার চিন্তাধারার সূ² তত্ত¡জ্ঞান খনির দ্বার স্বরূপ পাইয়াছি। তিনি আমার অলদ, আমি তাহার ওয়ালেদ।”
    হযরত মাওলানা শেখ অছিয়র রহমান ফারুকী চরণদ্বীপি (ক.) স্বীয় পীরের এতোটুকু সন্তোষভাজন হয়েছিলেন যে তিনি তার পীরের আধ্যাত্মিক খনির সৌরভের যেমন সন্ধান পেয়েছিলেন ঠিক তেমনই শারীরিকভাবেও হযরত আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারি (ক.) এর অনুরূপ সৌন্দর্য লাভ করেছিলেন। এ প্রসঙ্গে অছি -এ-গাউছুল আজম সৈয়দ দেলোয়ার হোসাইন মাইজভান্ডারি এর একটি মন্তব্য প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছেন -“হযরত মাওলানা শেখ অছিয়র রহমান ফারুকী চরণদ্বীপি (ক.) এত্তেহাদি ফয়েজের বদৌলতে দেহে পর্যন্ত গাউসুল আজম মাইজভান্ডারির অবয়ব প্রাপ্ত হয়েছিলেন। খোদাতালার মহিমায় বয়সের ফলে চুল দাড়ি মোবারকও একই রূপ সাদা হয়েছিল, যার ফলে আমার মত নিত্যসাহচর্য প্রাপ্ত লোকও বিভ্রান্তিতে পরিচয়ে বাধ্য হইয়াছিলাম।” আধ্যাত্মিক জগতে এরকম উচ্চমার্গীয় ঘটনা নজিরবিহীন।
    হযরত মাওলানা অছিয়র রহমান আল ফারুকী চরণদ্বীপি (ক.) তাঁর পীর গাউসুল আজম হযরত আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারি (ক.) এর গাউছিয়ত ও বেলায়তে মোতলাকার সর্বপ্রথম সমর্থনকারী পূর্ণ বিশ্বাসী ছিলেন এবং এই ব্যাপক প্রচার ও প্রসারে অত্যন্ত নিবিষ্টভাবে আত্মনিয়োগ করেন। যার ফলে তিনি আধ্যাত্মিকতায় বিস্ময়কর ও অভাবনীয় স্থানে অধিষ্ঠিত হন। যার কারণে তিনি এমন সব ঘটনা সংগঠিত করেছেন যা স্বাভাবিক দৃষ্টিতে অচিন্তনীয় মনে হয়। এ ধরনের অসংখ্য কারামত সর্বত্র ছড়িয়ে আছে, যা এখনও মানব হৃদয় কে গভীরভাবে ভাবিয়ে তোলে।
    বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলেন, সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী অনুপম আদর্শ। সৃষ্টি জগতের জন্য তিনি রহমতস্বরূপ। মানুষের অপরিসীম সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সৃষ্টির জন্য কল্যাণকর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তিনি মানব জাতির সামনে সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অপরিসীম সাফল্যের মধ্য দিয়ে একথা প্রমাণিত হয়েছে যে, উন্নত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ধারণ করতে না পারলে শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হিসাবে সফল হওয়া সম্ভব নয় এবং এর জন্য প্রয়োজন আত্মশুদ্ধি, ত্যাগ, শিক্ষা ও উন্নত স্বভাব অর্জন।
    কলুষিত মন ও স্বভাব দিয়ে আশরাফুল মাখলুকাত হওয়া সম্ভব নয়। বিশুদ্ধতার পথে নিজকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য বিশুদ্ধ আত্মার সান্নিধ্য লাভ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে যাঁরা সাফল্য লাভ করেছেন তাদের জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে বিশুদ্ধ করতে পারলে সমৃদ্ধ করতে পারলে স্রষ্টাপ্রদত্ত সংক্ষিপ্ত জীবন সফল হতে পারে।
    হযরত মাওলানা শাহ সুফি সেখ অছিয়র রহমান ফারুকী চরণদ্বীপি (র.)’র ঐশ্বর্যমÐিত পবিত্র জীবনে সেই পথেরই সন্ধান লুকিয়ে আছে, যার নির্যাসই হল , মহান রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি লাভের জন্য নিজকে পরিশুদ্ধ করে সৃষ্টির জন্য একজন নিবেদিতপ্রাণ নিষ্কলুষ চরিত্রের মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। এর মধ্যেই জীবনের সফলতা নিহিত।
    এই সফলতা অর্জনের জন্য সঠিক জ্ঞান অর্জন, কঠোর পরিশ্রম, উন্নত আদর্শস্থানীয়, আল্লাহর প্রিয়ভাজন বান্দার সান্নিধ্য এবং ত্যাগের শিক্ষায় আলোকিত হওয়া, কারণ বিশুদ্ধ ও আলোকিত হৃদয় ছাড়া বিশুদ্ধ পথের সন্ধান পাওয়া অসম্ভব।
    মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের সকলকে মহান আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশিত পথে জীবন গঠন করার তৌফিক দান করুন, এবং প্রেম ও ভালোবাসার অন্তর নিয়ে মানুষের দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণা ও হতাশায় তাদের পাশে থাকার শক্তি, সাহস, ইচ্ছা ও সক্ষমতা দান করুন। আমিন।

লেখক : সাবেক বিভাগীয় প্রধান রসায়ন বিভাগ, চট্টগ্রাম কলেজ