সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে ৩৮ কোটি টাকা

22

সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন ও যানজট নিরসনে বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ৩৮ কোটি টাকা বাড়ছে। মূলত জনসাধারণের চাহিদার প্রেক্ষিতে এবং সড়কের দৈর্ঘ্য বেড়ে যাওয়ায় এ ব্যয় বাড়ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কারণে ব্রিজের সংখ্যা কমলেও উচ্চতা ও দৈর্ঘ্য বেড়েছে। এ ছাড়া করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন উন্নয়ন কাজ বন্ধ থাকায় নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে না মনে করছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। এ নিয়ে প্রকল্প ব্যয় ও সময় বাড়াতে সংশোধিত প্রকল্পটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে সংস্থাটি।
সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানা গেছে, প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় শতভাগ সরকারি অর্থায়নে ১ হাজার ২২৯ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে অনুমোদিত হয়। প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় ৩৩২ দশমিক ০৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে রাস্তার উন্নয়নকাজ করা হবে। এ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৫৪ কোটি ৩৭ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। প্রকল্পে ১৩৯ কোটি ১৬ লাখ ৯০ হাজার টাকায় অ্যাপ্রোচ রোড উন্নয়নসহ ৩৭টি ব্রিজ নির্মাণ এবং নগরের বায়েজিদের অক্সিজেন এলাকার কুলগাঁও ও বন্দরের টোল প্লাজা এলাকায় বাস-ট্রাক টার্মিনালের জন্য সাড়ে ৭ কোটি টাকায় ৩ হাজার বর্গমিটার অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। সাড়ে ১৬ কোটি টাকা টাকায় ২১৫ মিটার কালভার্ট নির্মাণ, ২৫ কোটি টাকায় ২৫ হাজার বর্গমিটারের ইয়ার্ড নির্মাণ এবং ৮ দশমিক ১০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। ভূমি ক্রয়ে ব্যয় হবে ২৬০ কোটি টাকা এবং ৩২ হাজার ৮০১ বর্গমিটার ভূমি উন্নয়নে ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে ৩ কোটি টাকা। ফিজিক্যাল ও প্রাইস কন্টিনজেন্সিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪ কোটি টাকা।
এদিকে প্রকল্পটির সংশোধনীতে সড়কের উন্নয়ন প্রস্তাব করা হয়েছে ৩৫৪ দশমিক ০৫ কিলোমিটার। অর্থাৎ ২২ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন বাড়ছে। প্রকল্পের অনুমোদিত ডিপিপিতে ৩৭টি ব্রিজের জন্য মূল্য নির্ধারিত ছিল ১৩৯ কোটি ১৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা। সিডিএ জলাবদ্ধতা প্রকল্পে মাধ্যমে ৪টি ব্রিজ বাস্তবায়ন করা হয় এবং বাস্তবতার নিরীখে বিবেচনায় ব্রিজের লেভেল ও উচ্চতা বৃদ্ধি পায় এবং ৪টি ব্রিজের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ বৃদ্ধি পায়। ফলে বর্তমানে ৫৩০ দশমিক ৫৯ মিটার ব্রিজে ব্যয় হবে ১৩৪ কোটি ৪৪ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। কালভাটের দৈর্ঘ্য ২১৫ দশমিক ২৫ মিটার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২৪২ দশমিক ৫০ মিটার হয়েছে। যার ব্যয় ২০০৩.০০ লক্ষ টাকা নির্ধারণ করা হয়। মোট প্রকল্পের ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ১ হাজার ২৬৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ মোট ৩৮ কোটি টাকা ব্যয় বেড়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রকল্পটির পরিচালক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু সালেহ পূর্বদেশকে জানান, প্রকল্পটির অধীনে পুরো শহরে সড়ক নেটওয়ার্কের উন্নয়ন করা হচ্ছে। কাজ করতে গিয়ে নগরবাসীর চাহিদার প্রেক্ষিতে সড়কের প্রস্থ ও দৈর্ঘ্য বাড়াতে হচ্ছে। অনেক সময় পাশের ছোট সড়কের কাজও করে দিতে হচ্ছে। এভাবে মোট ২২ কিলোমিটার সড়কের দৈর্ঘ্য বাড়ছে। তাই প্রকল্পটি সংশোধন করে ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যথায় প্রকল্পের শতভাগ সুফল পাওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেন এ প্রকৌশলী।