স্যানিটারি ল্যাট্রিন ব্যবহার করে না ১৯ শতাংশ পরিবার

338

দেশে কাঁচা পায়খানা (ল্যাট্রিন) ব্যবহারকারী পরিবারের আনুপাতিক হার কমলেও এখনও প্রায় ১৯ শতাংশ পরিবার উন্মুক্ত স্থানে বা কাঁচা পায়খানা ব্যবহার করে। আর স্যানিটারি পায়খানা ব্যবহার করে ৮১ দশমিক ৫ শতাংশ পরিবার, যা ২০১৫ সালে ছিল ৭৩ দশমিক পাঁচ শতাংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘রিপোর্ট অন বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস-২০১৯’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ জুন) রাজধানীর আগাঁরগাওয়ে পরিসংখ্যান ভবনের মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, বিবিএস’র উপ-মহাপরিচালক ঘোষ সুব্রত উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক একেএম আশরাফুল হক। মনিটরিং দ্য সিচুয়েশন অব ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিক অব বাংলাদেশ (এমএসভিএসবি) তৃতীয় পর্যায় প্রকল্পের আওতায় সারাদেশের ২ হাজার ১২টি নমুনা এলাকা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এখনও প্রতি হাজারে ২১ জন শিশু জন্মের পরপরই মারা যায়। প্রতি হাজার জীবিত জন্ম নেওয়া শিশুর ক্ষেত্রে মরণশীলতার হার দাঁড়িয়েছে ২১ জনে, যা ২০১৫ সালে ছিল হাজারে ২৯ জন। এছাড়া ২০১৯ সালে এক থেকে চার বছর বয়সী শিশু মৃত্যু কমে হয়েছে প্রতি হাজারে এক দশমিক সাত জন, যেটি ২০১৫ সালে ছিল দুই জন। অন্যদিকে মাতৃ মৃত্যুর হারও কমেছে। এটি গত পাঁচ বছরে সমহারে কমেছে। ২০১৫ সালে মাতৃ মৃত্যুর অনুপাত ছিল এক দশমিক ৮১, যেটি ২০১৯ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৬৫-তে।
প্রতিবদনে আরও বলা হয়েছে, খানা প্রধানের ক্ষেত্রে পুরুষ ৮৫ দশমিক চার শতাংশ এবং নারী ১৪ দশমিক ছয় শতাংশ, যেটি ২০১৫ সালের তুলনায় নারীদের ক্ষেত্রে বেড়েছে। কিন্তু পুরুষদের ক্ষেত্রে কমেছে। ট্যাপ বা নলকূপের পানি ব্যবহার করছে ৯৮ দশমিক এক শতাংশ পরিবার, যেটি ২০১৫ সালে ছিল ৯৭ দশমিক নয় শতাংশ। বর্তমানে দেশে মোট জনসংখ্যার মধ্যে মুসলিম হচ্ছে ৮৮ দশমিক চার শতাংশ, যেটি ২০১৫ সালে ছিল ৮৮ দশমিক দুই শতাংশ। হিন্দুসহ অন্যান্য ধর্মের জনসংখ্যা ১১ দশমিক ছয় শতাংশ, যা ২০১৫ সালে ছিল ১১ দশমিক আট শতাংশ।
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, বয়স্ক শিক্ষার হার (১৫ বছর বা তার বেশি) পল্লি এলাকার চেয়ে শহর এলাকায় প্রায় ২০ দশমিক দুই শতাংশ বেশি। সাত বছর বা তার বেশি বয়স্ক শিক্ষার ক্ষেত্রে এই হার প্রায় ১৭ দশমিক দুই শতাংশ। তবে ২০১৩ সাল থেকে শহর এলাকার তুলনায় পল্লি এলাকায় বয়স্ক শিক্ষার হার দ্রæত গতিতে বাড়ছে। মরণশীলতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নতি হয়েছে। ২০১৯ সালের হিসাব অনুযায়ী, প্রতি হাজার মানুষের মধ্যে মরণশীলতা ছিল চার দশমিক ৯ জন। ২০১৫ সালে এটি ছিল পাঁচ দশমিক একজন।
এ প্রসঙ্গে অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, উন্নয়নে সঠিক তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মাঠ পর্যায় থেকে বিশুদ্ধ তথ্য তুলে আনতে হবে। এ বিষয়টি সবাইকে মনে রাখতে হবে যে, তথ্য যত সঠিক হবে, উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ততই বাস্তবসম্মত হবে।
অনুষ্ঠানে পরিসংখ্যা ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, এবারের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আর্থ-সামাজিক অনেক সূচকেই বাংলাদেশের চেয়ে শুধু শ্রীলঙ্কাই কিছুটা এগিয়ে। ভারত, পাকিস্তান ও নেপালসহ অনেক দেশ আমাদের পেছনে রয়েছে। খবর বাংলা ট্রিবিউনের