স্বাস্থ্যখাতে কেনাকাটায় সিন্ডিকেট

21

স্বাস্থ্যখাতে যন্ত্রপাতিসহ বিভিন্ন কেনাকাটায় সিন্ডিকেট কাজ করছে বলে মনে করে সংসদীয় কমিটি। আর এই সিন্ডিকেটের কারণেই কেনাকাটায় দুর্নীতি হচ্ছে বলে অভিমত কমিটির। গতকাল রবিবার সংসদ ভবনে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতের প্রকল্পগুলোর যে পরিমাণ বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি হওয়ার কথা তা হচ্ছে না। কত টাকা বরাদ্দ ছিল, খরচ কত হয়েছে আমরা সেটা দেখে থাকি। কিন্তু প্রকৃত অর্থে তৃণমূল পর্যায়ে এই খরচের প্রভাব কী? মানুষ কতটুকু সেবা পাচ্ছে? সেটা পর্যালোচনা হয় না।’
প্রকল্পে দুর্নীতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বৈঠকে স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতির প্রসঙ্গ এসেছে। এখানে এক ধরনের সিন্ডিকেট কাজ করে। এরা সবাই মিলেমিশে যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে। প্রথম এক বছর ঠিক থাকে, তারপর সেগুলো নষ্ট হয়ে যায়। এরপর যন্ত্র ঠিক করতে চাপ সৃষ্টি হয়। সেখানে আবার কোটি কোটি টাকা রক্ষণাবেক্ষণের নামে খরচ হয়। দুর্নীতিটা যে ব্যাপক হচ্ছে এবং সিন্ডিকেট কাজ করে সেটা সব কমিটির সদস্যরা তাদের নিজ নিজ অভিজ্ঞতা থেকে বলেছেন।’
তিনি জানান, উপ-কমিটি প্রকল্প ধরে বিস্তারিত আলোচনা করবে। সঠিক বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা, এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছে কিনা সেগুলো আমরা দেখবো। আগামী মাস থেকে এ কাজ শুরু হবে। গত নভেম্বর মাসে কমিটির বৈঠকে সব মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলোর পর্যালোচনায় পাঁচ সদস্যের একটি উপ-কমিটি করা হয়। সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী এ কমিটির আহ্বায়ক। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
এদিকে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে গৃহীত প্রকল্পগুলোর বাস্তব অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ কর্তৃক ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৩২টি ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে (নভেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত) ২৫টি প্রকল্প গৃহীত হয়েছে। স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ কর্তৃক ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছয়টি এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে (নভেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত) চারটি প্রকল্প গৃহীত হয়েছে বলে বৈঠকে উল্লেখ করা হয়।
বৈঠকে জানানো হয়, মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা বাড়ানোর জন্য বর্তমানে ১৩ হাজার ৭৪৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকে ১২ হাজার ৮৫০ জন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) কর্মরত আছেন। প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রায় ছয় হাজার জনগোষ্ঠী সেবা পাচ্ছেন। এছাড়া জানানো হয়, সরকারিভাবে ১০ হাজার ডাক্তার নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩৯তম বিসিএসের মাধ্যমে প্রায় ৪ হাজার ৬০৭ জন নতুন ডাক্তার পদায়ন করা হয়েছে। ১০ হাজার নার্স নিয়োগ করা হয়েছে এবং অন্যান্য জনবলের নিয়োগ কার্যক্রমও চলমান।
কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, হাফিজ আহমদ মজুমদার, বীরেন শিকদার, মনজুর হোসেন, রওশন আরা মান্নান ও আবিদা আনজুম মিতা।