নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীসহ তার পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। পরিবারের বাকি তিন সদস্য হলেন আসলাম চৌধুরীর স্ত্রী জামিলা নাজনীন মাওলা, আসলামের দুই ভাই জসিম উদ্দিন চৌধুরী ও আমজাদ হোসেন চৌধুরী। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মুন্সি আবদুল মজিদ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী কাজী ছানোয়ার হোসেন লাবলু বলেন, পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রাইজিং স্টিল মিলের নামে আরব-বাংলাদেশ (এবি) ব্যাংকের চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ শাখা থেকে ৩২৫ কোটি ৭৬ লাখ ৩০ হাজার ৯৫৫ টাকা ঋণ নিয়ে পরিশোধ না করার অভিযোগে ২০১৬ সালের ১৬ জুলাই মামলাটি দায়ের করে দুদক। তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৭ আগস্ট আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন। গতকাল বৃহস্পতিবার আসলাম চৌধুরীসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের জন্য রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। অপরদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা আসলামকে মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। আদালতে আসলাম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। শুনানি শেষে তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, মামলার শুরু থেকে আসলাম চৌধুরীর দুই ভাই আমজাদ হোসেন চৌধুরী ও জসিম উদ্দিন চৌধুরী পলাতক রয়েছেন। আর জামিলা নাজনীন জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সূত্র মতে, এবি ব্যাংক চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখা থেকে ৩২৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে আসলাম চৌধুরী ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে মামলা করে দুদক। তৎকালীন দুদকের উপ পরিচালক মানিক লাল বাদী হয়ে ডবলমুরিং থানায় মামলাটি দায়ের করেন। তদন্ত শেষে পরের বছর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ২০১৬ সালের ১৫ মে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকা থেকে আসলাম চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন ফৌজদারি কার্যবিধির (সন্দেহজনক) ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর একই বছরের ২৬ মে আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে গুলশান থানায় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। মামলায় আসলামের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্টের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ‘বাংলাদেশের সরকার উৎখাত ষড়যন্ত্রের অভিযোগ’ আনা হয়।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আসলাম চৌধুরীকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তাকে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
