স্ক্র্যাপ ঘোষণায় বন্দরে এলো কনক্রিট ব্লক

56

চট্টগ্রাম বন্দরে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৫৩৬ মেট্রিকটন স্ক্র্যাপ আমদানির ঘোষণা দিয়ে আনা ১১৫ মেট্রিকটন কনক্রিট ব্লকবোঝাই ২০টি কন্টেইনার আটক করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এই চালানটি এনেছে সাকুরা স্টিল লিমিটেড নামে কুমিল্লার একটি প্রতিষ্ঠান। কাস্টমস কর্মকর্তাদের ধারণা, ঘোষণাবহির্ভূত মূল্যহীন পণ্য আমদানির মাধ্যমে প্রায় দেড় কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে।
এদিকে, দীর্ঘ দেড় বছর আগে চট্টগ্রাম বন্দরে আসা এসব কন্টেইনার থেকে পণ্য খালাসের জন্য আমদানিকারক কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় সেগুলোর কায়িক পরীক্ষা সম্পন্ন করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি বাজারের সিন্দুরিয়া পাড়া এলাকার সাকুরা স্টিল লিমিটেড সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৫৩৬ টন স্ক্র্যাপ আমদানির জন্য রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের দিলকুশা শাখায় একটি আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খুলে। ঋণপত্রে পণ্যের মূল্য দেখানো হয় ১ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৪ মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। ওই ঋণপত্রের আওতায় ২০১৯ সালের ২১ এপ্রিল দুবাইয়ের জাবেল আলি বন্দর থেকে এমভি স্মাইলি লেডি নামে একটি জাহাজ ওই চালান নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। ইস্পাত শিল্পের কাঁচামাল ঘোষণা দেওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ দ্রæততার সঙ্গে চালানের ২০টি কন্টেইনার খালাস করে বেসরকারি কন্টেইনার ডিপো সিসিটিসিএল এ পাঠায়।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ টিম (এআইআর) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কন্টেইনারগুলোর কায়িক পরীক্ষার উদ্যোগ নেয়। তারা কন্টেইনার খুলে ৫৩৬ টন স্ক্র্যাপের পরিবর্তে মূল্যহীন ১১৫ টন কনক্রিট ব্লক পায়।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিচার্স শাখার সহকারী কমিশনার রেজাউল করিম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমদানিকারক চালানটি খালাস করেননি। শুধু তাই নয়, চালান খালাসের জন্য কাস্টমসে কোনো ডকুমেন্টও দাখিল করেননি। চলতি সপ্তাহে কন্টেইনারগুলো খুলে আমরা কায়িক পরীক্ষা করি। এতে দেখা যায় ৫৩৬ টন স্ক্র্যাপের পরিবর্তে বাণিজ্যিকভাবে মূল্যহীন ১১৫ টন কনক্রিট ব্লক পাওয়া যায়। আমাদের সন্দেহ, আমদানিকারক ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বিদেশে পাচার করেছেন কিংবা তিনি রপ্তানিকারকের কাছে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। চট্টগ্রাম কাস্টমসের এন্টি মানিলন্ডারিং ইউনিট এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন কাস্টমস কর্মকর্তা রেজাউল করিম।