সৌদি নারীদের বিপন্নতার গল্প শোনাবেন রাহাফ

53

কানাডায় আশ্রিত রাহাফ মুহাম্মেদ আল কুনুন (১৮) জানিয়েছেন, মানুষকে তিনি সৌদি নারীদের বিপন্নতার গল্প শোনাবেন। ধর্মান্তরিত রাহাফের দাবি, নারীদের বস্তুর মতো করে দেখা হয় সৌদি আরবে। পরিবার ও রাষ্ট্রের নির্যাতনের মুখে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন বলে দাবি তার। কানাডায় বৈধ আশ্রয় পাওয়ার পর রাহাফ সে দেশের সংবাদমাধ্যম টরেন্টো স্টারকে বলেছেন, সেখানে গিয়ে পুনর্জন্মের আনন্দ অনুভব করেছেন তিনি। পরিবারের সঙ্গে কুয়েতে বেড়াতে গিয়ে ৬ জানুয়ারি সেখান থেকে পালিয়েছিলেন ১৮ বছর বয়সী রাহাফ। থাইল্যান্ড হয়ে অস্ট্রেলিয়া প্রবেশের চেষ্টা করতে গিয়ে ব্যাংককের অভিবাসন কর্তৃপক্ষের হাতে আটক হন তিনি। অস্ট্রেলিয়ায় আশ্রয়প্রার্থী রাহাফকে আটক করে হোটেলের একটি রুমের ভেতর বন্দি রাখা হয়। জোর করে তাকে কুয়েতেগামী বিমানে তুলে দেওয়ার চেষ্টাও করা হয়। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া বিভিন্ন পোস্টের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করেন তিনি।
এক পর্যায়ে ৭ জানুয়ারি জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর তাকে বৈধ শরণার্থীর স্বীকৃতি দেয়। অস্ট্রেলিয়ায় আশ্রয় না মিললেও এক পর্যায়ে কানাডায় বৈধ আশ্রয় পান তিনি। টরেন্টো স্টারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাহাফ বলেন, ‘আমাদের বস্তু হিসেবে দেখা হয়, দেখা হয় দাসের মতো করে। মানুষকে আমি আমার গল্পগুলো শোনাতে চাই। সৌদি নারীদের কী অবস্থার মধ্যে থাকতে হয়, তা জানাতে চাই।’ ১১ জানুয়ারি দিনের প্রথম ভাগে থাইল্যান্ডের অভিবাসন পুলিশ প্রধান সুরাসাতি হাকপার্ন জানান, ‘অস্ট্রেলিয়া তার শরণার্থী আবেদন গ্রহণ করেছে। কিন্তু তিনি কোথায় যেতে চান সে বিষয়টি জানতে অপেক্ষায় আছি। কানাডাও কুনুনকে আশ্রয় দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। তিনি কানাডায় যেতে রাজি হয়েছেন।’
একইদিনে হাকপার্ন তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিলেও পরে দুই ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা বিবিসি ও রয়টার্স ভিন্ন ভিন্ন সূত্রে তার কানাডায় আশ্রয় পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে। কানাডায় আশ্রয় পাওয়ার ব্যাপারে রাহাফ টরেন্টো স্টারকে বলেন, ‘আমি কখনও ভাবিনি, এটা সম্ভব হবে। ১ শতাংশ প্রত্যাশাও ছিল না আমার। কানাডায় আমি খুব নিরাপদ বোধ করছি, এইদেশে মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ আছে। এখানে আসার পর প্রত্যেকের কাছে যে ভালোবাসা পেয়েছি, তাতে আমার পুনর্জন্মের আনন্দ অনুভূত হচ্ছে।’