সৌদি আরবে গ্রেফতার, নিপীড়ন আর খুনের প্রাবল্যে উদ্বিগ্ন এইচআরডব্লিউ

29

মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বলছে, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সৌদি আরবে বেশ কিছু সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও সেখানে নিপীড়ন আর অবমাননাকর আচরণ বেড়েছে।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওই সংস্থার নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের অক্টোবরে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার পর সৌদি কর্তৃপক্ষ সংঘত হলেও এখনও তাদের সমালোচকেরা নির্বিচার ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও হয়রানির শিকার হচ্ছে।
কট্টর ইসলামি শাসন ব্যবস্থার তেল নির্ভর অর্থনীতির দেশ সৌদি আরবে নারীদের জন্য অভিভাবকত্ব আইন প্রচলিত রয়েছে। এই আইন অনুযায়ী নারীদের ঘরের বাইরে বের হওয়াসহ অন্য কাজের আগে অভিভাবেকর অনুমতির দরকার পড়ে। ২০১৭ সালে যুবরাজ হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর অর্থনৈতিক নির্ভরতা কমাতে সৌদি যুবরাজ এক সংস্কার পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। সেই প্রক্রিয়ার আওতায় এরইমধ্যে সৌদি নারীদের গাড়ি চালানো ও পুরুষ সঙ্গী ছাড়াই দেশের বাইরে ভ্রমণের অনুমতি পেলেও সব বাধা দূর হয়নি এখনও। অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতাসীন হওয়ার পর নিজের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষের পথে বাধা হতে পারেন এমন ব্যক্তিদের সরিয়ে দেওয়া শুরু করেন যুবরাজ। গত সোমবার প্রকাশিত এইচআরডব্লিউ’র ৬২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই প্রখ্যাত আলেম, নারী অধিকার অ্যাক্টিভিস্ট এবং রাজপরিবারের বহু সদস্যকে লক্ষ্যবস্তু বানান যুবরাজ। সাবেক নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মধ্যে শুদ্ধি অভিযান চালানোর পাশাপাশি তিনি দেশের বিচার ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাজদরবারের তদারকির অধীনে নিয়ে আসেন। এরপরই ধারাবাহিক গ্রেফতার অভিযান শুরু করে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
২০১৭ সালের অক্টোবরে মুসলিম নেতা, অ্যাকাডেমিক ও বুদ্ধিজীবীসহ ৭০ জন সমালোচককে গ্রেফতোরের মধ্য দিয়ে এই অভিযান শুরু হয়। ওই বছরের নভেম্বরে রাজপরিবারের সদস্য ও ব্যবসায়ীসহ অন্তত ৪০ জন অভিজাতকে আটক করে কয়েক সপ্তাহ ধরে রিয়াদের বিলাসবহুল রিটজ কার্লটন হোটেলে রাখা হয়। এই অভিযানকে দুর্নীতি বিরোধী অভিযান বলে আখ্যা দেয় সৌদি কর্তৃপক্ষ।
পরের বছরের মে মাসের শুরুতে বহু নারী অধিকার অ্যাকটিভিস্টকে গ্রেফতার ও আটক করা হয় বলে জানানো হয়েছে এইচআরডবিøউ’র প্রতিবেদনে। আটক অনেকেই হেফাজতে থাকা অবস্থায় নির্যাতনের শিকার হন। এইচআরডব্লিউ বলছে, গ্রেফতারের পাশাপাশি দেশটির সরকার সমর্থিত সংবাদমাধ্যমে আটককৃতদের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য প্রচার হতে থাকে।