সোশ্যাল মিডিয়ায় যতকথা

7

‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ইংরেজি অনুবাদে ভুল
ও অসংখ্য লেখকের বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বই….

আ.ফ.ম. মোদাচ্ছের আলী

কদিন আগে শোকের মাসের বাংলা একাডেমি আয়োজিত একটি অনলাইন অনুষ্ঠানে লেখক, প্রকাশক ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হককে বলতে শুনেছি বঙ্গবন্ধু কে নিয়ে এতো এতো বই প্রকাশ করা হচ্ছে এর অনেকগুলো অন্য বইয়ের কাট এন্ড পেস্ট বা ইতিহাসের আলোকে লেখা নয় যার নজরদারি প্রয়োজন। এইমাত্র আজ ১২/৮/২২ দুপুর ২টা ২০ নাগাদ চ্যানেল ২৪ এর সংবাদে কদিন আগে তাঁর সেই কথারই প্রতিফলন দেখলাম। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর ইংরেজি অনুবাদে অসংখ্য ভুল পাওয়া গেছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, (কিছু ছবি দেয়া হলো)। অনুবাদকের সাক্ষাৎকার ও দেখলাম। দায়টা নিতে চান সম্মিলিতভাবে। হা হতোস্মি… ইতিপূর্বে একটি সাংস্কৃতিক জোট প্রদত্ত ‘বঙ্গবন্ধু’ পদকের বিরুদ্ধে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছিলাম। বলেছিলাম এই পদক দিতে পারে একমাত্র রাষ্ট্র।
যাই হোক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমিও বই লিখেছি।আমার দুটিসহ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যতো বই প্রকাশ হয়েছে প্রকাশকদের থেকে তালিকা নিয়ে স্ক্যানিং করে ভুল বই নিষিদ্ধ করা হোক।
যেখানে বঙ্গবন্ধুরঅসমাপ্ত আত্মজীবনীর অনুবাদের এই অবস্থা তাইলে অন্যগুলোতে ভরসা রাখি কি করে?

 

‘ভালো থাকা’

করবী চৌধুরী

‘ভালো থাকা’, কত ছোট্ট দুটো শব্দ, তাই না? কিন্তু এর মর্মার্থটা কি সত্যিই এত ছোট? এই ছোট্ট দুটো শব্দের কত ক্ষমতা দেখুন, আমি, আপনি, আমরা সবাই ছুটছি ঐ দুই শব্দের পেছনেই। যে যেভাবে পারে ছুটছে। চারদিকে একটু তাকালেই দেখা যায়, সুস্থ মানুষগুলোর পাশাপাশি অন্ধ, বাকশক্তিহীন, শারীরিক ভাবে পঙ্গু মানুষগুলো পর্যন্ত উদয়াস্ত খাটছে, ছুটছে একটুখানি ভালো থাকবে বলে। এমন কি ঐ জেলে থাকা আসামীটা পর্যন্ত যা করছে, তার সবটাই ভালো থাকার জন্য। ‘ভালো থাকা’র এই লড়াইয়ে সবার লক্ষ্য তো একটাই। আর সেটা হলো, অন্যকে পেছনে ফেলে নিজের এগিয়ে যাওয়া, সবার থেকে নিজেকে বেশি ভালো রাখা। যে যার পথে ছুটছে। কারোর পথ হয়তো সমাজের চোখে ঠিক, আবার কারোরটা হয়তো ভুল। পথ ভালো- মন্দ যেটাই হোক না কেন, ভালো থাকার এই ইঁদুর দৌড়ে ছুটছে কিন্তু সবাই! আচ্ছা, আমাদের জীবনে ‘ভালো থাকা’ বলে কি সত্যিই কিছু আছে? এই ‘ভালো থাকা’র সংজ্ঞাটাই বা কি? কেউ কি বলতে পারেন, কতটা পথ পেরোলে ‘ভালো থাকা’ যায়? ধনী- গরীব সবাই আজ ছুটছে। জিজ্ঞেস করলে বলে নিজেকে, পরিবারকে, সবাইকে ভালো রাখার জন্য ছুটে চলেছি। এই ভালো থাকাকে উছিলা করে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য মানুষ আজ কতশত অন্যায় কাজ যে করে চলেছে তার হিসেব নেই! কেউ বা সম্পত্তি দখলের জন্য বৃদ্ধ বাবা- মাকে পথে বসাচ্ছে, কেউ বা আবার অর্থের বিনিময়ে আপন সন্তানকে বিক্রিও করে দিচ্ছে। সবটাই করছে কিন্ত নিজেদের ভালো রাখার জন্য। কিন্তু সত্যিই কি এভাবে ভালো থাকা যায়? এই ‘ভালো থাকা’টা কি ঐ মরুভূমিতে দেখা মরীচিকাটার মতো নয়, যার পেছনে ছুটতে ছুটতে আমরা আমাদের সারাজীবনটাকেই ব্যয় কিরে দিই! ছোটবেলা থেকেই আমাদের দেওয়া হয় ভালো থাকার এই লড়াইয়ে টিকে থাকার শিক্ষা। শিশু স্কুলে ভর্তি হবার পর থেকেই তাকে এটাই বোঝানো হয়, পরীক্ষায় ভালো করতে হবে, সবার চেয়ে বেশি নম্বর পেতে হবে তোমায়। আর সেটা পারলেই তুমি জীবনে অনেক বড় হতে পারবে! শিশুও তার বাবা-মার কথামতো অনেকসময় সাধ্যের বাইরে গিয়ে ভালো করে পড়াশোনা করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যায়। দিন এগোতে থাকে। ভালো থাকার এই লড়াইয়ে টিকে থাকার জন্য মাধ্যমিক – উচ্চমাধ্যমিকে সে ভালো নম্বর যোগাড় করে। ভালো থাকার জন্য সে উচ্চশিক্ষায়ও হয়তো ভালো করে, ভালো চাকরি খোঁজে, পায়ও হয়তো, ভালো বিয়ে করে, সন্তানদের ভালোভাবে মানুষ করার চেষ্টা করে। কিন্তু সত্যিকারের ভালো থাকাটা কি কখনো হয়ে ওঠে তার ? সারাজীবনটা এভাবে আরেকটু ভালো থাকার প্রতিযোগিতা করতে করতেই মানুষ একসময় চিরনিদ্রায় নিদ্রিত হয়। কিন্তু ভালো থাকার সোনার হরিণটা কিন্তু অধরায় থেকে যায়। অথচ এই ভালো থাকার জন্যই আমরা একে অপরকে ঠকাই, অসৎপথে পা বাড়াই। বুঝে না বুঝে ক্ষেত্রবিশেষে নিজেকেও ঠকিয়ে যাই। একটা গল্পে আছে, কালিদাস নাকি যে ডালে বসতেন সে ডালই কাটতেন! আমাদেরও হয়েছে সেই দশা! আমরাও যে কখন নিজেদের ভালো থাকার রাস্তাগুলো নিজেরাই বন্ধ করে দিই, তা বুঝে উঠতে পারি না। সত্যিকারের ভালো থাকার জন্য বড় বাড়ি, যশ, মান, খ্যাতি, অঢেল টাকা, এসব কিছুরই দরকার পরে না। এমন অনেক মানুষ আছে, যারা ঝুপড়িতে থাকে, অনেক কষ্ট করে দু’বেলা দুমুঠো অন্নের সংস্থান করে, কিন্ত দিনশেষে তারা ভালোই থাকে। কারণ তাদের মাঝে ‘আরও চাই, আরও, আরও… এই অতৃপ্তির মনোভাব টা থাকে না। যা পেয়েছে তাতেই তারা সন্তুষ্ট থাকে। আর এটাই হলো সত্যিকারের ‘ভালো থাকা’র মূলমন্ত্র। ঐ ছোট্ট ঝুপড়িতে যখন ওরা সবাই একত্রে খেতে বসে, যখন একটা সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে, তখন তাদের থেকে ভালো আর কেউই থাকে না।
সমান্তরালে সমাজের উচ্চবিত্ত মানুষগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায়, ভালোথাকার বাহ্যিক উপকরণগুলোর কি নেই এদের? অর্থবিত্ত, প্রভাব-প্রতিপত্তি সব আছে , কিন্তু ওরা কি সত্যিই ভালো আছে? অনেক বেশি ভালো থাকার লড়াইয়ে ছুটতে ছুটতে পরিবারের সকল সদস্যরা একে অপরে সাথে ভালোভাবে কথা বলার সুযোগটা পর্যন্ত পায় না। একত্রে বসে সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাটা তো দূরের কথা! হতাশা আর বিচ্ছিন্নতাই এদের নিত্য সঙ্গী। পরিশেষে এটাই বলতে চাই যে, ¯্রষ্টা আমাদের সবার জন্য ধন- সম্পদ- ঐশ্বর্য সবকিছু নির্দিষ্ট করেই পাঠিয়েছেন। তাই ওসবের পিছে ছুটে সময় নষ্ট না করে পরিবারের মানুষগুলোকে সত্যিকারভাবে ভালো রাখার চেষ্টা করা উচিত। সন্তানদের ভালোমানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারলেই তাদের সত্যিকারভাবে ভালো রাখা হবে। পাশাপাশি নিজেদেরও ভালো থাকা হবে। এই ভালো থাকার জন্য অঢেল প্রাচুর্যের দরকার পড়ে না। প্রয়োজন শুধু মানসিকতার পরিবর্তনের।

 

দুষ্টু-মিষ্টি রাসেল

মিতা পোদ্দার

দুষ্টু মিষ্টি রাসেল সোনা
সবার আদরি
মন ভুলানো চোখ দুটি তার
লাজুক মুখখানি।

পাড়া জুড়ে রাসেল সোনার
দুষ্টমিতে কাটে
মাঝে মাঝে ছুটে গিয়ে
জড়িয়ে ধরে মা-কে

টমির সাথে মিতালি তার
গলায় গলায় ভাব,
সঙ্গী হারা হলেই বুঝে
টমিরকি অভাব।

হাসুআপুর চুলের বেণী
দুষ্ট রাসেল টানে,
মমতার ছলা-কলা
রাসেল সোনা জানে।

বায়নাটুকুর সবটাই
পূরণ হওয়া চাই,
ভাবতে বড় কষ্ট লাগে
সেই রাসেল আর নাই।

ওই বুলেটে ঝাঁঝড়া হলো
রাসেল সোনার বুক,
কত নিষ্পাপ ছিল ওই
ছোট্ট রাসেলের মুখ।