সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তি মাদকের চেয়েও ভয়াবহ

47

বাংলাদেশে মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে মানুষের মধ্যে অস্থিরতা বেড়ে গেছে। ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে অল্প বয়সী ছেলেমেয়ে থেকে শুরু করে তাদের অভিভাবকদের মধ্যেও তৈরি হচ্ছে মানসিক চাপ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও মনোবিজ্ঞানী মেহতাব খানম বলছেন, সোশাল মিডিয়ার কারণে বিশেষ করে পরিবারের ভেতরেও নানা রকমের সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
কাউন্সেলিং-এর জন্যে যারা আসছেন তারা তাকে এ বিষয়ে কী ধরনের সমস্যার কথা বলছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে মিসেস খানম বলেন, কিশোর-কিশোরীদের বাবা মায়েরা কিন্তু ভীষণ সংগ্রাম করছেন। কারণ রাতের পর রাত জেগে বাচ্চারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে থাকছে, পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে, সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে। তারা বুঝতে পারছেননা কিভাবে সন্তানের সাথে সম্পর্ক ঠিক রেখে সহায়তা করবেন।
তার কাছে কাউন্সেলিং নিতে আসা শিশুদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাচ্চারা অনেক সময় বলছেন অভিভাবকদের কারণে তাদের কৈশোর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা পড়াশোনার ওপরই বেশি জোর দিচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেটে পড়ালেখার কাজও দেয়া হয়। কিন্তু বাবা মায়েরা বুঝতে চায়না।
মেহতাব খানম বলেন এখন সম্পর্কগুলো দ্রæত হয়ে যাচ্ছে। সহজেই একজনের সাথে আরেকজনের যোগাযোগ হচ্ছে। একারণে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক, একাধিক সম্পর্ক-এসবও বেড়ে যাচ্ছে অনেক।
অনেক সময় ফেসবুকে এমন কিছু দেখছে যা তাদের ওপর প্রভাব ফেলছে, হতাশও হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তার মতে ড্রাগের আসক্তির চেয়েও সিরিয়াস হয়ে যাচ্ছে এটা।
আমি এটা নিয়ে চিন্তিত। ড্রাগ যখন নেয় একা বা কয়েকজনের সাথে নেয়। কিন্তু আমি যখন অন্য একজন বা একাধিক মানুষের সাথে সম্পর্ক করছি তখন অনেকগুলো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ার বিষয়ে আমরা যথেষ্ট শিক্ষা গ্রহণের আগেই সব কিছু হাতের মুঠোয় চলে আসছে। দায়িত্বশীল ব্যবহার করতে পারছিনা এটির। ওখানে অজস্র টাইম দেয়ার কারণে অন্য সব কিছুতে প্রভাব ফেলছে। আমার মাথা ওটাতেই ব্যস্ত থাকছে।
অভিভাবকদেরও সচেতন দরকার। স্কুলগুলোতে প্যারেন্টিং কর্মসূচি আরও জোরদার করতে হবে। প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

অর্থ দেয়নি বলে র‌্যাংকিং
থেকে বাদ পড়েছে ঢাবি!

বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাংকিং পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানকে ৪৫ হাজার পাউন্ড না দেওয়ার কারণেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকায় আসেনি বলে দাবি করেছেন ঢাবি বাণিজ্য অনুষদের ডিন শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম। শুক্রবার লন্ডনে ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই, ইউকে’ এর সাথে মতবিনিময়কালে অধ্যাপক শিবলী বলেন, পাঠদান, গবেষণা, জ্ঞান আদান-প্রদান এবং আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গির ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোনও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নয়, প্রতিযোগিতা করেই শিক্ষার্থীরা এখানে ভর্তি হতে চায়, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে র‌্যাঙ্কিং এর প্রয়োজন নেই।
তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ র‌্যাঙ্কিং এর বিষয়টিকে খুব একটা গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নেয়নি। লন্ডনভিত্তিক যে প্রতিষ্ঠানটি এই জরিপ পরিচালনা করেছে সেই সংস্থাটির প্রস্তাব অনুযায়ী সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাভুক্ত হতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ৪৫ হাজার পাউন্ড দাবি করা হয়েছিল। এছাড়া বাৎসরিক আরো ১৫ হাজার পাউন্ড পরিশোধের প্রস্তাব দিলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই অর্থ, শিক্ষা ও গবেষণা খাতে ব্যয় করতে বেশী আগ্রহী হওয়াতে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় নাম আসেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। খবর বিডিনিউজের
চলতি মে মাসের প্রথম দিকে ‘টাইমস হাইয়ার এডুকেশন’ নামে লন্ডন ভিত্তিক একটি প্রকাশনা ও র‌্যাংকিং সংস্থা ২০১৯ সালের এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি তালিকা প্রকাশ করে। তালিকায় এশিয়ার ৪০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম থাকলেও বাংলাদেশের অনুমোদিত ৪২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটিরও নাম আসেনি।
‘টাইমস হাইয়ার এডুকেশন’ এর ওই তালিকা প্রকাশের পর দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষার মান নিয়ে আবারও সমালোচনা শুরু হয়।
তবে যেহেতু বিশ্বব্যাপী এধরণের তালিকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, সেই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আগামী বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এধরনের র‌্যাঙ্কিং-এর ব্যাপারে বাজেট বরাদ্দ রাখার পরিকল্পনার কথাও জানান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম ।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আইনজীবী আনিস রহমান।
সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও থার্ড সেক্টর কনসালটেন্ট, বিধান গোস্বামীর পরিচালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন, এ-আরবি গেøাবাল ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই ইউএস এর আহ্বায়ক নিজাম চৌধুরী, অনুষ্ঠানের সমন্বয়কারী একাত্তর টেলিভিশনের যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি ও সংগঠনের কালচারাল সেক্রেটারি তানভীর আহমেদ, সহ সভাপতি ইসমাইল হোসেন ও আইনজীবী অজয় রায় রতন, যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ আবু আহমেদ ইকবাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মেসবাহ উদ্দীন ইকো ও প্রশান্ত পুরকায়স্থ, অর্থ সম্পাদক সৈয়দ হামিদুল হক, যুগ্ম অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, নির্বাহী সদস্য মির্জা আসাব বেগ ও মো স্তাফিজুর রহমান, সদস্য সৈয়দ এনামূল ইসলাম, রাজিয়া বেগম ও নারগিস মনির।
মতবিনিময় সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাইন উদ্দীন, একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাসনিমা খান ও সাদিয়া নূর, টুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের সহকারী অধ্যাপক কামরুল হাসান ও মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, আইবিএ’র অধ্যাপক খালিদ প্রমুখ।


এছাড়া যুক্তরাজ্যে অধ্যয়নরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ ফেলো সাইফুল আলম চৌধুরী, ফার্মেসি বিভাগের প্রভাষক ও ইউসিএল বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক এ এস এম মনজুর হোসেন শিপলু, ফার্মেসি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও ইম্পেরিয়াল কলেজের রিসার্চ ফেলো উত্তম কুমার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক ও লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ ফেলো এজাজুল হক ও কমনওয়েলথ শেভেনিং স্কলার চ্যানেল আই বাংলাদেশের জেষ্ঠ্য সাংবাদিক মশরুর শাকিল।