সেরা হওয়ার গর্বে বাঁশখালীও

20

নিজস্ব প্রতিবেদক

মাধ্যমিক শিক্ষায় সফলতায় প্রথম হয়েছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ এই সেরা হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ, শিক্ষা কমিশন ও ওয়ার্ল্ড ডাটা ল্যাবের সমন্বয়ে গঠিত দ্য ওয়ার্ল্ড স্কিলস ক্লকের এক সমীক্ষায় এ তথ্য প্রকাশিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপ-মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভূমিকার কারণেই দেশের এই সফলতা এসেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে মাধ্যমিক শিক্ষায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ সেরা হওয়ায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও শিক্ষা উপ-মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল নিজ নিজ ফেসবুক পেজে বার্তাটি প্রথম দেন। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সফলতার বার্তা দিতে গিয়ে যে ব্যানারটি নিজেদের পেজে পোস্ট করেন সেটাতে সফলতার সুংসংবাদটি দিয়ে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ছবি জুড়ে দেন। পাঠ্যপুস্তক হাতে নিয়ে বাঁশখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাস্যোজ্জ্বল ছবিটিসহ সফলতার ব্যানারটি মুহূর্তেই নেটদুনিয়ায় ভাইরাল হয়। অনেকেই দেশের এই সফলতার জন্য সরকারের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রশংসা করেন।
এ ছবিটি প্রকাশ পাওয়ার খবর বিদ্যালয়টিতে পৌঁছুলে শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি আনন্দিত হয়। যদিও সেই ছবিটিতে যেসব শিক্ষার্থীকে দেখা যাচ্ছে তারা বিদ্যালয় থেকে পাস করে উচ্চতর শিক্ষায় অন্যত্র চলে গেছেন।
বাঁশখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক রাজীব কুমার দাশ বলেন, ‘ছবিটি ২০১৫ সালে তোলা। বিদ্যালয়ের সে সময়ের শিক্ষার্থীরা নতুন বই পেয়ে ছবিটি তুলেছিল। শিক্ষার্থীদের দেখেই আমি নিশ্চিত হয়েছি। সে সময় ছবিটি একটি শিক্ষামূলক সংবাদ সাইটে প্রকাশও পেয়েছিল। ধারণা করছি, সেখান থেকেই ছবিটি নেয়া হয়েছে। এ ছবিটি মাননীয় মন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রী মহোদয় ফেসবুকে প্রচার করায় আমরা শিক্ষকরাতো বটেই, বিদ্যালয়ের মেয়েরাও আরো বেশি অনুপ্রাণিত হবে।’
বাংলাদেশের এই সফলতার জানান দিয়ে শিক্ষা উপ-মন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল নিজের ফেসবুক ওয়ালে লিখেন, যারা আশপাশের কয়েকটি দেশের কিছু উন্নত স্কুল দেখিয়ে আমাদের বলেন আমরা খুবই পিছিয়ে এই সফলতা তাদের জন্যে। বিশাল পরিসরে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষা দক্ষতায় বাংলাদেশ এগিয়েছে এবং একটি সমীক্ষায় দেখা যায় অন্যদের চেয়ে এগিয়ে। তবে আমাদের অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার আছে, তাই আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই। বর্তমানে আমাদের দেশে পেশা, বৃত্তি, দক্ষতার সাথে সম্পর্কহীন সাধারণ যে শিক্ষা প্রচলিত আছে, বিশেষ করে উচ্চ শিক্ষা, দেশের ভবিষ্যতের জন্য এটি একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে আসছে। শুনতে অপ্রিয় হলেও সত্য, আমাদের অর্থনীতির প্রকার অনুযায়ী এই সাধারণ শিক্ষা ভিত্তিক উচ্চ শিক্ষার মাধ্যমে আমাদের এই বিশাল যুব সমাজকে কর্ম উপযোগী করা যাবে না। এখানে অনেক পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানগুলো, নানান পাবলিক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দক্ষতা এবং বৃত্তিমূলক শিক্ষা নির্ভর সর্ট কোর্স, ডিপ্লোমা ইত্যাদি চালু করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদী সনাতনী অনার্স-মাস্টার্স দ্বারা ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড আমরা পাবো না। ইতিমধ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা পর্যায়েই দক্ষতা নির্ভর কারিকুলাম তৈরি করেছি আমরা, উচ্চ শিক্ষায় দক্ষতা ও বৃত্তিমূলক বিষয় এবং প্রশিক্ষণ সন্নিবেশিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে যে বিনিয়োগ হয়েছে এর সুফল আমরা এখন পাচ্ছি। এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে, অর্থনৈতিক চাহিদা অনুসারে আগামীতে আমরা আরো দক্ষ জনগোষ্ঠী পাবো।