সেমুতাংয়ের নতুন কূপে গ্যাসের অস্তিত্ব মিলেনি!

67

মানিকছড়ির সেমুতাং গ্যাসফিল্ডে গ্যাস ফুরিয়ে আসছে! ২০১১ সাল থেকে চালু হওয়া এ ফিল্ডের গ্যাস এখন শেষ হওয়ার পথে। এছাড়া নতুন খননকৃত ৭নং কূপে প্রয়োজনীয় গ্যাস না পাওয়ায় এ কূপে এখন সীসা ঢালাইসহ নির্মাণ সামগ্রী গুটিয়ে ফেলা হচ্ছে। পাশাপাশি এ গ্যাসফিল্ডের আশপাশে নতুন কূপের অনুসন্ধান শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সীমান্তবর্তী মানিকছড়ির কালাপানি মৌজার ২১ একর টিলাভূমির ওপর ১৯৬৩ সালে ব্রিটিশ কোম্পানির একটি অনুসন্ধানী দল সর্বপ্রথম গ্যাসক্ষেত্রটি আবিস্কার করে। এরপর ১৯৬৯ সালে ৫নং কূপের মাধ্যমে পরীক্ষামূলভাবে গ্যাস উত্তোলন শুরু হলেও বছর যেতে না যেতে গ্যাসফিল্ডে বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। ফলে অংকুরেরই বিনাশ হয় এ ফিল্ডের। এরপর বাংলাদেশ সরকার ১৯৮৩, ১৯৯৪, ১৯৯৭, ২০০০ ও ২০০৪ সাল নাগাদ গ্যাস উত্তোলনের চেষ্টা চালায়। সর্বশেষ ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার মানিকছড়ির সেমুতাং গ্যাসফিল্ড থেকে গ্যাস উত্তোলনে সক্রিয় হয় এবং একনেকের বৈঠকেও প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে ৫নং কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে (চট্টগ্রাম) গ্যাস সংযোগ দেয় বাপেক্স। শুরুতে গ্যাসের গতি ছিল ১৫-১৭ মিলিয়ন ঘনফুট। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে ৬নং কূপ খননে গেলেও সেটির গ্যাস দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। একবছর যেতে না যেতেই এর গতি কমতে থাকে এবং বছর দেড়েক পর সেটি বন্ধ হয়ে যায়।
অপরদিকে ৫নং কূপ থেকে এখন পর্যন্ত গড়ে ২-১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে। গ্যাসের গতি কমতে থাকায় ২০১৭ সালে ৬নং কূপ অর্থ্যাৎ সেমুতাংয়ের মূল কূপ থেকে ৭ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে সাপমারায় (নোনাবিল) নতুন কূপের সন্ধান পায় বাপেক্স। এটি সেমুতাংয়ের ৭নং কূপ। দীর্ঘ দেড় বছর ধরে এ কূপে খনন কাজ শেষে ফলাফল শূন্য হওয়ায় হতাশ হয়েছে বাপেক্স। ফলে উক্ত কূপের মুখে সীসা ঢালাই করে চিরতরে কূপটি বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।
সরজমিন দেখা গেছে, খননকৃত কূপ থেকে শ্রমিকরা পাইপ তুলছেন। এ সময় নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা বলেন, এ কূপে গ্যাসের অস্তিত্ব মিলেনি। প্রায় সাড়ে ৭শ মিটার গভীরে গিয়েও শুধু পানি বের হচ্ছে। ফলে বাপেক্স এটি বন্ধ করে দিচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রকল্পের প্রজেক্ট ডাইরেটর (পিডি) মো. জহুর আহম্মদ বলেন, নতুন কূপ খনন কাজ শেষ হয়েছে। এ মূহুর্তে এর বেশি কিছু বলা যাবে না।
এদিকে দ্রুতগতিতে সেমুতাং গ্যাসফিল্ডে গ্যাস অস্তিত্ব শেষ হওয়ার আশঙ্কায় গ্যাসফিল্ডের আশপাশে নতুনভাবে জরিপ কাজ শুরু করতে যাচ্ছে বাপেক্স। ইতোমধ্যে উপজেলা সদরে তিনটহরী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে একদল অনুসন্ধানী গ্রুপ জমায়েত হয়েছে। তারা উপজেলাব্যাপী নতুন করে গ্যাস অনুসন্ধানে কাজ করবে।