সেন্সরে বলে দিবে পানির ৬ ধরনের মান

28

এম এ হোসাইন

পানিতে ক্লোরিনের পরিমাণ, অ্যামোনিয়া, কলিফর্ম, টিডিএস ও তাপমাত্রার মতো ৬টি গুরুত্বপূর্ণ প্যারামিটার তথ্য জানিয়ে দিবে একটি সেন্সর যন্ত্র। নিয়মিত পানির এমন তথ্য জানিয়ে দেয়া এই সেন্সর ভিত্তিক যন্ত্রটির নাম ‘রিয়্যাল টাইম ওয়াটার কোয়ালিটি মনিটরিং’ বা আরটিডবিøওকিউএম। চট্টগ্রাম ওয়াসা সম্প্রতি এমন দু’টি যন্ত্র বসিয়েছে নগরীতে। সেন্সর ভিত্তিক এই দুই যন্ত্রের ফলে ল্যাবের পরীক্ষার ফলাফলের জন্য অপেক্ষা না করেই তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে পারবে সংস্থাটি।
চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, আমরা দু’টি ‘রিয়্যাল টাইম ওয়াটার কোয়ালিটি’ প্রযুক্তি নির্ভর মেশিন বসিয়েছি। যেটির মাধ্যমে পানির তাৎক্ষণিক পরীক্ষার ফলাফল জানা যাবে। পানির পিএইচ, টিডিএস, কলিফর্ম ইত্যাদির তথ্য জানাতে সক্ষম এটি। আমরা যতক্ষণ পর পর তথ্য চাই, সে অনুসারে এটি অনলাইনে তথ্য দিতে পারবে। পাইলট প্রকল্প হিসাবে হালিশহর ও চকবাজারে দু’টি মেশিন বসানো হয়েছে। পাইলট প্রকল্প সফল হলে আগামিতে আরো উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা সম্ভব হবে। এতে ল্যাবের উপর নির্ভরতা কমে আসবে। কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প ফেজ-২ এর অধীনে দু’টি আরটিডবিøওকিউএম মেশিন স্থাপন করেছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। সম্প্রতি নগরীর হালিশহর বি বøকে এবং চকবাজার এলাকায় এ দু’টি মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে বসানো হয়েছে এ দু’টি মেশিন। সেন্সর থাকায় এটি পানির ছয় ধরনের প্যারামিটার তাৎক্ষণিক পরীক্ষা করে ফলাফল দিতে সক্ষম। আগে পানির এসব পার‌্যামিটার পরীক্ষা ও ফলাফল বিশ্লেষণের জন্য ল্যাবের উপর নির্ভরশীল ছিল ওয়াসা। তবে আরটিডব্লিওকিউএম মেশিনের ফলাফল তাৎক্ষণিক হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে ল্যাবের উপর নির্ভরতা কাটিয়ে উঠতে পারবে সংস্থাটি। একই সাথে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিতেও সহযোগিতা করবে এই মেশিন। পানি ঘোলাটে, ক্লোরিণের পরিমাণ, অক্সিজেনের পরিমাণসহ পানির মান সম্পর্কে এই যন্ত্রটি সার্বক্ষণিক সজাগ করবে সংস্থাটিকে। শুধু সেন্সরের ভিত্তিতে পানির মান যাচাই করে ফলাফল প্রদর্শন করবে তা নয়, সেই ফলাফল আবার অনলাইনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সরবরাহও করবে এই যন্ত্র।নিরবিচ্ছিন্নভাবে যে সময়ে চাইবে সে সময়ে তথ্য দিতে পারবে যন্ত্রটি। চট্টগ্রাম ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল আহসান চৌধুরী বলেন, রিয়েল টাইম ওয়াটার কোয়ালিটি মেশিন সেন্সরের মাধ্যমে পানির তাৎক্ষণিক ফলাফল দিতে সক্ষম। এটির মাধ্যমে মোট ৬টি প্যারামিটার পরীক্ষা করা যাবে। পিএইচ, ক্লোরিন, অ্যামোনিয়া, টিডিএস, পানির তাপমাত্রা, দ্রবীভ‚ত অক্সিজেনের পরিমাণ ইত্যাদি জানা যাবে। অস্ট্রিয়া থেকে দু’টি মেশিন আনা হয়েছে। একটি হালিশহরে অন্যটি চকবাজার প্যারেড কর্নারে মেইন লাইনের সাথে স্থাপন করা হয়েছে।
অস্ট্রিয়ার ‘স্ক্যান’ নামে পানির গুণগত মান যাচাইকারক প্রতিষ্ঠান থেকে যন্ত্রগুলো আমদানি করেছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। ইতোমধ্যে আমেরিকা, অস্ট্রিয়াসহ বিভিন্ন দেশে ব্যবহার করা হচ্ছে এই উন্নত প্রযুক্তি। নগরীর হালিশহর বি বøকে ও চকবাজারে চট্টগ্রাম ওয়াসার মূল পাইপলাইনের সাথে যুক্ত করা হয়েছে যন্ত্র দু’টি। ফলে মূল লাইনের পানির মান সম্পর্কে নিয়মিত তথ্য দিতে থাকবে এই যন্ত্র। যন্ত্রগুলোর আনুমানিক আয়ুষ্কাল ধরা হয়েছে ১০ বছর।