সেন্টমার্টিন দ্বীপের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ডিক্যাপ্রিওর অভিনন্দন

34

পূর্বদেশ অনলাইন
হলিউড হার্টথ্রব লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন নিয়ে নিজের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে লিখেছেন। প্রবাল দ্বীপটির চারপাশে নতুনভাবে সামুদ্রিক সুরক্ষিত অঞ্চল গড়ে তোলায় বাংলাদেশ সরকার, স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং এনজিওগুলোকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ৪৭ বছর বয়সী এই আমেরিকান তারকা।
শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় টুইটারে ডিক্যাপ্রিও লিখেছেন, ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপের চারপাশে নতুন প্রতিষ্ঠিত সামুদ্রিক সুরক্ষিত অঞ্চলের জন্য বাংলাদেশ সরকার, স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং এনজিওগুলোকে অভিনন্দন, যা জীববৈচিত্র্যের একটি অসাধারণ পরিমণ্ডলকে রক্ষা করবে এবং বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল প্রাচীরের জন্য প্রাকৃতিক আবাসস্থল জোগান দেবে।’
অনেক বছর ধরেই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে ব্যাপক সোচ্চার ডিক্যাপ্রিও। সেই লক্ষ্যে তিনি বিভিন্ন প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি নিজের বেশিরভাগ পোস্টে জলবায়ু-সম্পর্কিত খবর তুলে ধরেন। এবারই প্রথম তার টুইটে বাংলাদেশের কথা উঠে এলো।
টুইটারে নিজের পরিচয়ের জায়গায় লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও উল্লেখ করেছেন অভিনেতা-পরিবেশবাদী। তার সবশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘ডোন্ট লুক আপ’-এ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীর ওপর নেতিবাচক প্রভাবের বক্তব্য গুরুত্ব পেয়েছে। ‘দ্য রেভেন্যান্ট’ ছবির জন্য অস্কারে সেরা অভিনেতা হয়েছেন তিনি। ওই ছবিতেও জলবায়ু সংকটকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
সেন্টমার্টিনের একটি দৃষ্টিনন্দন ছবি টুইটে শেয়ার করেছেন ডিক্যাপ্রিও। ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির সৌজন্যে এটি পাওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি। তার এই টুইট ৫০০ বারের বেশি রিটুইট হয়েছে। টুইটারে তার ফলোয়ার ১ কোটি ৯৫ লাখের বেশি।
বাংলাদেশ সরকার সম্প্রতি সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য সেন্টমার্টিন দ্বীপ সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের প্রায় ১ হাজার ৭৪৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে ‘সেন্টমার্টিন সামুদ্রিক সুরক্ষিত অঞ্চল’ ঘোষণা করেছে। এর ফলে জাহাজের অনিয়ন্ত্রিত চলাচল, অতিরিক্ত মাছ ধরা, বর্জ্য ও রাসায়নিক পদার্থের ডাম্পিং এবং প্রবাল প্রাচীর ও জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর সবকিছু রোধ করা হবে।
নতুন ঘোষিত সংরক্ষিত এলাকার সুবাদে বিপন্ন গোলাপি ডলফিন, হাঙর, রে মাছ, সামুদ্রিক কচ্ছপ, সামুদ্রিক পাখি, প্রবাল, সামুদ্রিক ঘাস এবং সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য ও এগুলোর আবাসস্থল সংরক্ষণে সহায়ক হবে। এছাড়া সামুদ্রিক সম্পদ টেকসই হওয়ার মাধ্যমে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান বাড়বে, জাতীয় সমুদ্র অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে এবং বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যাবে।
সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণার ফলে দ্বীপের চারপাশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তায় আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং সামুদ্রিক সম্পদের সঠিক ব্যবস্থাপনা সহজতর হবে। একই সঙ্গে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের প্রাচুর্য ও জলজ প্রাণীর অস্তিত্ব বৃদ্ধির সম্ভাবনা বহু গুণ বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা।