সেন্টমার্টিনে বেহাল অবস্থা উদ্বিগ্ন সংসদীয় কমিটি

16

টেকনাফ প্রতিনিধি

প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে অপরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মাণ ও পর্যটন অব্যবস্থাপনা উদ্বেগজনক। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী পাঁচ বছর পর সেন্টমার্টিন দ্বীপের অবস্থা কী হবে, তা চিন্তার বাইরে। কোনও পর্যটক এখানে আসবেন কিনা সন্দেহ। বর্তমানে দ্বীপের সর্বত্রই হ-য-ব-র-ল অবস্থা। এ রকম অব্যবস্থাপনা চলতে থাকলে সেন্টমার্টিন্স দ্বীপ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাবে।
গতকাল শনিবার বিকালে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব কথা বলেন বক্তারা। টেকনাফের সেন্টমার্টিনে দ্বীপ ব্যবস্থাপনা ও তথ্যসেবা কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে কমিটির ৩৩তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
কমিটির সভাপতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি ও কানিজ ফাতেমা আহমেদ এমপি।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. আমিনুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি, জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন এমরান, ইউএনও মো. কামরুজ্জামান ও এসিল্যান্ড এরফানুল হক চৌধুরী।
বৈঠকে কমিটির সদস্যরা বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপকে পরিকল্পিত এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এজন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে কাজ করার জন্য আমরা সহযোগিতা করবো।
উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ২৫ বছর আগে সেন্টমার্টিন দ্বীপের অবস্থা এ রকম ছিল না। তখন অনেক গোছানো ছিল। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেন্টমার্টিন দ্বীপ গড়ে তুলতে হবে প্রকৃতির সমন্বয়ে পরিবেশবান্ধব ও পরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, অপরিকল্পিতভাবে হোটেল-মোটেল নির্মাণ বন্ধসহ সেন্টমার্টিনে ধারণক্ষমতার বাইরে পর্যটক ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করতে হবে। দ্বীপরক্ষায় স্থানীয় বাসিন্দা, হোটেল মালিক, ট্যুর অপারেটর ও জাহাজ মালিককে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। এছাড়া জরাজীর্ণ সেন্টমার্টিন জেটি দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামত করতে হবে।
দ্বীপের বেহাল অবস্থা দেখে আমরা উদ্বিগ্ন জানিয়ে উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, দ্বীপে না এলে অপরিকল্পিত অবকাঠামো ও অব্যবস্থাপনা দেখতাম না। ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হিসেবে এসে প্রবাল দ্বীপে জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ এবং প্রকৃতির সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করেছি। কিন্তু এখন সেই দৃশ্য নেই। আগামী পাঁচ বছর পর অবস্থা কী হবে, তা কল্পনার বাইরে। তখন পর্যটক আসবেন কিনা সন্দেহ। দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। তাই পর্যটনবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলার পাশাপাশি দ্বীপরক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
এর আগে সকালে কমিটির সদস্যরা দ্বীপ ঘুরে দেখেন। আজ রবিবার দুপুরে কক্সবাজারে কমিটির আবারও বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।