সেন্টমার্টিনে আটকা আড়াই হাজার পর্যটক

74

ঘুরতে এসে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপে আটকা পড়েছেন আড়াই হাজারের বেশি দেশি-বিদেশি পর্যটক। বৈরী আবহাওয়ার কারণে গতকাল সোমবার টেকনাফ থেকে কোনও জাহাজ সেন্টমার্টিনে আসতে না পারায় দ্বীপে আটকা পড়েছেন তারা। তবে পর্যটকদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন।
এর আগে সকালে পর্যটকবাহী ৭টি জাহাজ প্রায় সাড়ে তিন হাজার পর্যটক নিয়ে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন রওনা দিলে বৈরী আবহাওয়ার কারণে নাফ নদের মাঝপথ থেকে আবার জেটিতে ফিরে যায়।
পর্যটকদের আটকা পড়ার তথ্য নিশ্চিত করে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমেদ বলেন, ‘দ্বীপে বেড়াতে এসে আড়াই হাজারের বেশি দেশি-বিদেশি পর্যটক আটকা পড়েছেন। তাদের বেশিরভাগেরই আজ (সোমবার) দ্বীপ থেকে টেকনাফে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে (সোমবার) কোনও পর্যটকবাহী জাহাজ দ্বীপে আসেনি। সকাল থেকে জেটি ঘাটে জাহাজের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন অনেক পর্যটক। তাদের অনেকের টাকার সংকট রয়েছে বলেও শুনেছি। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে আটকা পড়া পর্যটকদের কিভাবে সহযোগিতা করা যায়, সেই চেষ্টা চলছে’।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, ‘হঠাৎ দমকা হওয়ার কারণে সমুদ্র উত্তাল রয়েছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে। এ কারণে সমুদ্রে সব ধরনের নৌযান চলাচল নিষেধ করা হয়েছে’।
পর্যটকবাহী জাহাজ কেয়ারি সিন্দাবাদের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ায় টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া সব পর্যটকবাহী জাহাজ নাফ নদ থেকে আবার টেকনাফ জেটিতে ফিরে আসে। তবে এর আগে এসব জাহাজে করে দ্বীপ ভ্রমণে যাওয়া হাজারও পর্যটক সেখানে আটকা পড়েছেন। তাদের বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা চলছে’।
ভারত থেকে দ্বীপ ভ্রমণে এসে আটকা পড়া সুরঞ্জিত বলেন, ‘পরিবার নিয়ে গত শনিবার সকালে জাহাজে করে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে বেড়াতে এসেছি। সোমবার দ্বীপ ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে দ্বীপে কোনও জাহাজ না আসায় এখানে আটকা পড়েছি। দ্বীপে সবকিছুতে এখন অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে’।
সেন্টমার্টিন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক সেকান্দর আলী জানান, ‘আজ (সোমবার) জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় সেন্টমার্টিনে আটকে পড়া পর্যটকদের খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। তারা যেন হয়রানির শিকার না হয় সেটি দেখা হচ্ছে’।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রবিউল হাসান বলেন, ‘সকালে পর্যটকবাহী ৭টি জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে রওনা করে। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে নাফ নদীর মাঝপথ থেকে জাহাজগুলো ঘাটে ফেরত আনা হয়েছে। তবে এর আগে দ্বীপে বেড়াতে যাওয়া আড়াই হাজারের মতো পর্যটক দ্বীপে আটকা পড়েছেন। তারা যাতে হয়রানির শিকার না হন সে বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে’।