সুরক্ষিত থাকবেন যেভাবে

84

চীনের উহান শহর থেকে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস। দিন দিনই বাড়ছে এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। প্রাণঘাতী এ রোগে এরই মধ্যে মৃতের সংখ্যা কয়েক হাজার ছাড়িয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, করোনাভাইরাস সংক্রামক প্রকৃতির হওয়ায় খুব দ্রুত এটি গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ রোগে আক্রান্তের মধ্যে সাধারণ ফ্লু’র মতোই জ্বর, কাশি, সর্দি, গলা ব্যথা, মাথা ব্যথা, হাঁচি এবং ক্লান্তি দেখা যায়।
যেহেতু এ রোগের কোনো প্রতিষেধক নেই এ কারণে প্রতিরোধে সচেষ্ট হতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে কয়েকটি বিষয় অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন। যেমন-
১. এ সময়ে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন। বিশেষ করে কারও যদি ফ্লুর মতো লক্ষণ যেমন – কাশি, জ্বর, সর্দি বা হাঁচির মতো সমস্যা থাকে তাহলে যেকোন ধরনের ভ্রমণ থেকে দূরে থাকুন।
২. জনবহুল এলাকা এড়িয়ে চলুন।
৩. নিজের চিকিৎসা করান। আপনি যদি করোনা ভাইরাস সংক্রমিত কোনো দেশ থেকে আসেন এবং আপনার মধ্যে ফ্লু’য়ের লক্ষণ ও শ্বাস নিতে অসুবিধা দেখা হয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৪. যাদের ফ্লু বা সর্দির লক্ষণ রয়েছে তাদের থেকে দূরে থাকুন। কোনো ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলার সময় আধা মিটার থেকে ২ মিটার দূরত্ব বজায় রেখে কথা বলুন।
৫. কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান, পানি বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ঘন ঘন হাত পরিষ্কার করুন।
৬. বাড়ির চারপাশ, টেবিল, টয়লেট, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, সুইচ এবং স্টেশনারি জিনিস পরিষ্কার করার জন্য জীবাণুনাশক ব্যবহার করুন।
৭. মুখ এবং নাক ঢেকে রাখুন। আপনার যদি ফ্লু-এর মতো লক্ষণ থাকে, কাশি বা ঘন ঘন হাঁচি হয় তবে সবসময় টিস্যু ব্যবহার করুন এবং ব্যবহারের পর পর এটি ফেলে দিন।
৮. বাইরে বের হওয়ার সময় মাস্ক ব্যবহার করুন।
৯. কাঁচা খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন । কেবলমাত্র সঠিকভাবে রান্না করা খাবার খান। সেই সঙ্গে রান্না না করা বা অর্ধেক রান্না করা খাবার বা মাংস জাতীয় খাবার এড়ানো উচিত।
১০. অসুস্থ প্রাণীদের থেকে দূরে থাকুন।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও চিকিৎসা :
যেহেতু করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কোনো চিকিৎসা বা প্রতিষেধক নেই, তাই সতর্কতাই এ ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায়। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে চিকিৎসকরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া সতর্কতার জন্য মাস্ক ব্যবহারেরও পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। হাঁচি-কাশিতে টিস্যু বা কাপড় ব্যবহার অথবা এর অবর্তমানে পোশাকের অংশবিশেষ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
যেহেতু রোগীর সংস্পর্শ ও সংসর্গ থেকে ভাইরাস সংক্রমণ হতে পারে, তাই বিভিন্ন দেশে অভিবাদনের জন্য সাধারণ হাত মেলানো, চুমু খাওয়া ও কোলাকুলি থেকে দূরে থাকার আহব্বান জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এর বদলে হাত নাড়ানো, চোখে চোখ রাখা বা কাঁধ চাপড়ানোর জন্য বলা হচ্ছে। পাশাপাশি ভিড় বা গণজমায়েত এড়িয়ে চলারও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
কেউ যদি মনে করেন তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, তখন নিজের ঘর থেকে বের না হয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে দ্রæত যোগাযোগের জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।