‘সুযোগ’ কাজে লাগাচ্ছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা

34

ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছে, এ খবর ছড়িয়ে পড়লে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে মজুতকৃত পেঁয়াজের দাম বাঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে খুচরা বাজারে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। অথচ সীমান্ত দিয়ে পেঁয়াজ খুচরা বাজারে আসতে সময় লাগে ৫ থেকে ১০ দিন। এ সময়টা অপেক্ষা না করে খুচরা ব্যবসায়ীরা মজুতকৃত পেঁয়াজ একলাফে কেজি প্রতি ১০০ টাকায় বিক্রি করছেন। কেউ কেউ বলছেন- ‘সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছেন তারা’। গতকাল মঙ্গলবার নগরীর বিভিন্ন খুচরা দোকানে এ দৃশ্য চোখে পড়ে।
খুচরা ব্যবসায়ী ও মুদির দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজ হোক বা কাল হোক, নতুন পেঁয়াজ কিনতে তো হবেই। তাই আগের পেঁয়াজ যদি কম দামে কিনেও থাকি, তাহলে অন্যদের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিক্রি করছি।
মুরাদপুর এলাকার মামুন নামে এক বিক্রেতা বলেন, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করায় পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে, তাই তারাও ক্রেতাদের কাছে বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন।
বহদ্দারহাটের বিক্রেতা সুমন হোসেন বলেন, কিছু পেঁয়াজ আগে কিনে রেখেছিলাম। সবাই তো দাম বেশি দিয়ে বিক্রি করছে, তাই আমি না বেঁচলে তো অন্যরা ধরবে। তাই অন্য ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে বিক্রি করছি।
পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার বিষয় নিয়ে খুচরা বিক্রেতা আশরাফ আহমেদ বলেন, পেঁয়াজের দাম অনুযায়ী ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে হচ্ছে। আমরা নতুন পেঁয়াজ বেশি দামে ক্রয় করছি বলেই বেশি দাম দিয়ে বিক্রি করছি।
দেওয়ানহাট এলাকার মুদির দোকানদার সোহেল হোসেন বলেন, পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণে ৯০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে হচ্ছে। গত সপ্তাহের বাজারে পেঁয়াজের দাম কম থাকায় কম দামে বিক্রি করেছি।
পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের কথা উল্লেখ করে হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের কারণে দাম বেড়ে চলেছে। সামনে আরও দাম বাড়তে পারে। যদি চাহিদা বেশি হয়, তাহলে দামও বাড়বে। না হয় কমার সম্ভাবনা আছে। অন্যান্য দেশ থেকে পর্যাপ্ত আমদানি না হওয়া পর্যন্ত দামের ঊর্ধ্বমুুখি থাকবে।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভিন তিবরীজি পূর্বদেশকে বলেন, যেসব পেঁয়াজ বর্তমানে মজুত রয়েছে, তা সমিতির নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্তক্রমে মূল্য নির্ধারণ হবে। আগে যে দামে পেঁয়াজ কিনেছেন, ঠিক সে অনুপাতে লাভ করে বিক্রি করতে হবে। ৫০ টাকার পেঁয়াজ কিনে ১০০ টাকা বিক্রি করলে মেনে নেওয়া হবে না। যারা এসব অপকর্মের সাথে জড়িত থাকবে, তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, আগামীকাল (বুধবার) থেকে শুরু হবে পেঁয়াজের বাজারে মনিটরিং। জেলা প্রশাসনের একটি টিম বাজার মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকবে। পেঁয়াজের দাম সহনশীল পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত এ মনিটরিং অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, খাতুনগঞ্জে প্রতিদিন প্রায় আড়াই লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে গত সপ্তাহজুড়ে এসেছে মাত্র সাত লাখ টন, যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। বিদেশ থেকে পর্যাপ্ত আমদানি এবং নিজ দেশে উৎপাদন করা না গেলে পেঁয়াজের দাম হারহামেশা বাড়তে থাকবে বলে আশংঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।