নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে চীন থেকে কর্টন ইয়ার্ন ঘোষণায় ১ কোটি ৬৮ লাখ ৩০ হাজার শলাকা বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সিগারেট আমদানি করে পাবনার ঈশ্বরদী থানার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান তিয়ানে আউটডোর বিডি কোম্পানি লিমিটেড। কাস্টম গোয়েন্দা ও চট্টগ্রাম কাস্টম কর্তৃক জব্দ করা এই চালানে ২১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার মো. শরফুদ্দিন মিঞা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কাস্টম সূত্রে জানা গেছে, পাবনার ঈশ্বরদী থানার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান তিয়ানে আউটডোর কোম্পানি চীন থেকে কর্টন ইয়ার্ন আনার ঘোষণায় এক কন্টেইনার পণ্য আমদানি করে। এরপর আমদানিকারকের মনোনীত সিএন্ডএফ এজেন্ট ক্রোনি শিপিং কর্পোরেশন অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে ২২ ফেব্রুয়ারি। পণ্য চালানটির শুল্কায়নে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইপিজেড কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নিকট দলিলাদি দাখিল করা হলে আইপিটির সঠিকতার বিষয়ে সন্দেহ হলে বেপজা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচাই করা হয়। যাচাইয়ে গরমিল পরিলক্ষিত হলে বিষয়টি কাস্টমের এআইআর শাখাকে জানানো হয়। পরে ২৬ ফেব্রæয়ারি চট্টগ্রাম কাস্টমসের এআইআর শাখা পণ্য চালানটির খালাস কার্যক্রম স্থগিত করে। পরে শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করা হয়।
কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার মো. শরফুদ্দিন মিঞা বলেন, কায়িক পরীক্ষার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়ে ২৭ ফেব্রুয়ারি কন্টেইনারটি ফোর্স পিডাউন করার জন্য বন্দরকে পত্র দেওয়া হয়। কাস্টম হাউসের পরিকল্পনা অনুযায়ী সোমবার কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর, সরকারের অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা ও সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে চালানটির কন্টেইনার বন্দরের ভিতরে নিয়ম অনুযায়ী খুলে এআইআর টিম পণ্য পরীক্ষা শুরু করে। চালানটির শতভাগ কায়িক পরীক্ষার লক্ষ্যে প্রত্যেকটি পণ্যের প্যাকেট কেটে কায়িক পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। কন্টেইনারে রাখা ৮৭৯টি কার্টন শতভাগ কায়িক পরীক্ষা শেষে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১ কোটি ৬৮ লাখ ৩০ হাজার শলাকা বিদেশি সিগারেট পাওয়া যায়। এর মধ্যে ওরিস ব্র্যান্ডের ১ কোটি ৬০ লাখ ৮০ হাজার শলাকা, বেনসন ব্র্যান্ডের ২ লাখ ৬০ হাজার ও ডানহিল ব্র্যান্ডের ৪ লাখ ৯০ হাজার ৭২০ শলাকা সিগারেট পাওয়া যায়। যার আনুমানিক মূল্য ৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।
তিনি আরও বলেন, পণ্য চালানটিতে শর্ত সাপেক্ষে আমদানিযোগ্য ও উচ্চ শুল্কের পণ্য সিগারেট আমদানি করে আনুমানিক প্রায় ২১ লাখ ৫৭ হাজার টাকার সরকারি রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা করা হয়। এ ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের দ্রæত চিহ্নিত করে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার। কাস্টমস আইন ও বিধি অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
