সীতাকুন্ডে শিবচতুর্দশী মেলা ১১ মার্চ শুরু

10

প্রতিবছরের ন্যায় এবারও সনাতনী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী শিবচতুর্দশী মেলা শুরু হচ্ছে আগামী ১১ মার্চ থেকে। তবে এবারের মেলায় তীর্থযাত্রীরা স্নান, তর্পণ, শ্রাদ্ধ, চন্দ্রনাথসহ বিভিন্ন মঠ-মন্দির দর্শন করলেও মেলায় ৩দিন ব্যাপি মূল আকর্ষণ রাষ্ট্রীয় অতিথি ও বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে বিশ^ বৈদিক সম্মেলন, মহোৎসব ও আলোচনা সভা থাকছে না। ফলে এবার মেলায় দর্শনার্থীর সংখ্যা প্রতিবারের ন্যায় কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এবার শিবচতুর্দশী তিথি শুরু হবে ১১ মার্চ বেলা ৩টা ১২ মিনিট ৪ সেকেন্ডে এবং শেষ হবে ১২ মার্চ শুক্রবার বেলা ৩টা ৪৬ মিনিটে। এরপর অমাবস্যা শুরু হবে। পুণ্যার্থীরা পৌর সদর থেকে চন্দ্রনাথ, বিরূপাক্ষসহ অর্ধশতাধিক মঠমন্দির দর্শন করবেন।
জানা যায়, সীতাকুন্ডের শিবচতুর্দশী মেলা হিন্দুধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় মেলা হলেও এটি ঐতিহ্যগতভাবে সব ধর্মের মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়ে থাকে প্রতিবছর। মূল মেলা তিনদিন পর শেষ হলেও এই মেলা চলে দীর্ঘ এক মাস। যেখানে সীতাকুন্ড উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মেলায় আগমন ঘটে। ইতোমধ্যে মেলার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রতিবারের মতো চারটি আন্তঃনগর ট্রেন দুই মিনিটের জন্য যাত্রা বিরতি করবে। এ ছাড়া সীতাকুন্ড থেকে ঢাকা যেতে চাইলে কুমিরা রেলস্টেশনে যেতে হবে। সেখানে ঢাকামুখী মহানগর ও চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেন দাঁড়াবে। বিশ্বব্যাপি করোনা মহামারির কারণে এবার মেলায় থাকছে না বিশ^ বৈদিক সম্মেলন, মহোৎসব ও আলোচনা সভা। স্নান, তর্পণ ও চন্দ্রনাথধামের বিভিন্ন মঠ-মন্দির দর্শন করতে পারবেন মাক্স পরিধানে পুণ্যার্থীরা।
মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক পলাশ চৌধুরী বলেন, করোনার কথা চিন্তা করে আমরা বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করছি। লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর মাঝে মাক্স পড়ার বিষয়ে আমাদের বেগ পেতে হতে পারে। তবে প্রতিটি মঠমন্দিরে, বিশেষ করে স্বয়ম্ভুনাথ মন্দির, বিরূপাক্ষ ও চন্দ্রনাথ মন্দিরে নারী-পুরুষের জন্য আলাদা সারি করে দিয়েছি, যাতে পুণ্যার্থীরা সহজে মঠ-মন্দির দর্শন করতে পারে।
সীতাকুন্ড মডেল থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আইন-শৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রতিবারের ন্যায় এবারও ফোর্স নিয়োজিত থাকবে। কেউ আইনের ব্যত্যয় ঘটার চেষ্টা করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মেলায় পুণ্যার্থীর সমাগম ও সামাজিক দূরত্বের বিষয়ে জানতে চাইলে ম্রাইন কমিটির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট চন্দন দাশ বলেন, আসলে আমরা এবারের মেলায় সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি মাথায় রেখে ইতোমধ্যে মেলার মূল আকর্ষণ বিশ^ বৈদিক সম্মেলন, মহোৎসব ও আলোচনা সভা রাখছি না। যেখানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও রাষ্ট্রীয় অতিথিরা থাকতেন। করোনার বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা বেশি লোকের জমায়েত এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবো। আগত পুণ্যার্থীরা শিব মন্দিরে পূজা-অর্চনাসহ ধমীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করতে পারবেন।
মেলার সার্বিক বিষয়ে সীতাকুন্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিব চতুর্দশী মেলা কমিটির সভাপতি মিল্টন রায় বলেন, সামাজিত দূরত্ব বজায় রেখে পুণ্যার্থীরা ধর্মীয় কার্যাদী সম্পাদক করতে পারবেন।