সীতাকুন্ডে বিএনপির আহব্বায়ক কমিটি নিয়ে তৃণমূলের ক্ষোভ

37

জাহেদুল আনোয়ার চৌধুরী, সীতাকুন্ড

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক গোলাম আকবর খন্দকার স্বাক্ষরিত সীতাকুন্ড উপজেলা বিএনপি আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করেছেন গত ৩০ জানুয়ারি। ঘোষনার পর থেকে কমিটির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তৃনমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। সেইরকম ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ফরহাদ শাকিল, ইসমাইল হোসাইন, এ.আর.আই.এফ নামে একাধিক তৃণমূলের নেতাকর্মী লিখেন, হায়রে আমার সোনার দল, সীতাকুন্ড উপজেলা বিএনপি আহবায়ক কমিটির ৪৯নং প্রভাবশালী সদস্য জাহাঙ্গীর আলম চেয়ারম্যানের সন্ধান চাই? ৭ বছর পূর্বে মৃত ব্যক্তিকে কিভাবে আহবায়ক কমিটির সদস্য করলি বিগত ১০/১২ বছর যাদের কোন হদিস যায়নি, তাদেরকে সীতাকুন্ড বিএনপি সদস্য করলি!! এর জবাব কে দিবে কে এই নামগুলো দিয়েছে, সীতাকুÐ বিএনপি আহবায়ক কমিটিতে মৃত ব্যক্তি থাকা মানে, কমিটিও প্রায় মৃত বলে ধরে নেওয়া যায়। যে লোক তৃণমুল নেতাকর্মীর প্রাণ, সরকার যাকে অহেতুক দীর্ঘ সময় কারাগারে রেখেছে, আমাদের একমাত্র অভিভাবক কেন্দ্রিয় বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর নামও উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপি আহবায়ক কমিটির কোনটাতেই নেই।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি আহবায়ক গোলাম আকবর খন্দকার বলেন, কমিটিকে মৃত ব্যক্তি ভুলে আসতে পারে। আর আসলাম চৌধুরীর নামের বিষয়ে জানতে চাইলে উনি(সাংবাদিককে) বলেন, নামটা আপনি লাগিয়ে দেন বলে ফোন কেটে দেন।
জানা যায়, গত ৩০ জানুয়ারি সীতাকুন্ড উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির আহব্বায়ক কমিটি ঘোষনা করেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা। যার মধ্যে স্থান পেয়েছে সাত বছর পূর্বে মারা যাওয়া ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম চেয়ারম্যান। তিনি কুমিরা ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি ছিলেন। অথচ ওই কমিটিতে রাখা হয়নি কারান্তরীণ কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে। এ নিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। আসলাম চৌধুরী দীর্ঘদিন যাবৎ কারান্তরীণ থাকলেও নীতি ও আদশের কারণে এ নেতার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় আসক্ত রয়েছেন নেতাকর্মীরা। কারগারে বসে তিনি সীতাকুন্ড উপজেলা বিএনপি বিভিন্ন রাজনৈতিক দিক-নির্দেশনা দিতেন। কিন্তু উনারই বড় ভাই ইছহাক কাদের চৌধুরীকে ডাল হিসেবে ব্যবহার করতে আহবায়ক ও কাজী মহি উদ্দিনকে সদস্য সচিব এবং ৫০ জন সদস্যর আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করেন। কিন্তু কমিটির ৪৯নং সদস্য জাহাঙ্গীর আলম চেয়ারম্যান সাত বছর পূর্বে মৃত্যুবরণ করেন।
এ কমিটিতে জাহাঙ্গীর নামে ৪ জন রয়েছে। একজন ফৌজদারহাট এলাকার সাইফুল হুদা জাহাঙ্গীর, সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুর উদ্দিন জাহাঙ্গীর, মুরাদপুরে জাহাঙ্গীর সবশেষে কুমিরার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আহমদ হোসেন জাহাঙ্গীর আলম চেয়ারম্যান। তিনি সাত বছর পূবেই মারা যান। পৌরসভা বিএনপির সাবেক সভাপতি ইউসুফ নিজামী বলেন, আমি পৌরসভা বিএনপির সাবেক সভাপতি,বর্তমান আহবায়ক কমিটিতে আমার সাথে থাকা সাধারণ সম্পাদকের নাম এক নম্বর আহবায়কে রয়েছে। আর আমি দুই নম্বর আহবায়ক হিসেবে রয়েছি। যেটা খুবই দূঃখজনক। সাবেক গঠিত পৌরসভা ও উপজেলা বিএনপির সকল কমিটিতে আসলাম চৌধুরী এক নম্বর সদস্য থাকতেন। উত্তর জেলা বিএনপি কমিটির পক্ষ থেকে নাম চাইলে সভাপতি ও সম্পাদক স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে আসলাম চৌধুরীকে ১ নম্বর সদস্য করার সুপারিশও করা হয়। কিন্তু কি অদৃশ্য কারণে আমাদের প্রিয় নেতা নাম বাদ পড়লো আল্লাহই ভালো জানে। অপরদিকে সীতাকুন্ড উপজেলা বিএনপির সদ্য সাবেক যুগ্ন আহবায়ক জহুরুল আলম জহুর বলেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে সীতাকুন্ড উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ। তবে সুযোগ সন্ধানীরালের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে উপজেলা বিএনপির আহব্বায়ক কমিটিতে আসলাম চৌধুরীর মতো আরও অনেক দলের জন্য নিবেদিত ও ত্যাগী নেতাদের নাম বাদ দিয়ে এবার উপজেলা ও পৌরসভাসহ প্রতিটি ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়েছে। আসলাম চৌধুরী নেতৃত্বে সীতাকুন্ড বিএনপির সু-সংগঠিত। আর এই সু-সংগঠিত দ‚র্গে আঘাত হানতে একটি মহল দীর্ঘদিন চেষ্টা করছে,তার বহিৃপ্রকাশ কিনা আমার সন্দেহ হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে ইউনুস চৌধুরীকে আহবায়ক ও জহুরুল আলম জহুরকে যুগ্ম আহবায়ক করে একটি উপজেলা বিএনপি কমিটি ঘোষনা করে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা। কিন্তু আহবায়ক ইউনুস চৌধুরীর মৃত্যুবরণের পর ২০০০ সালে ডাঃ কমল কদরকে আহবায়ক করা হয়েছিল।