সীতাকুন্ডে তেলের ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড

49

সীতাকুন্ডে পুরাতন (স্ক্র্যাপ) জাহাজের কালো তেলের ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে পাশের সালামের কালো তেলের ডিপো, নিটল টাটা কোম্পানির সার্ভিসিং সেন্টারসহ আশপাশের ১০টি ভাড়াঘর পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় প্রায় তিন কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
গতকাল বুধবার দুপুর ১ টায় উপজেলার ফৌজদারহাট আবদুল্লাহ ঘাটা রেললাইন সংলগ্ন মোস্তাকিমের তেলের ডিপো থেকে এ অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সংসদ সদস্য দিদারুল আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন রায়, ওসি দেলওয়ার হোসেন, চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মো. জসিম উদ্দিন ও ফৌজদারহাট-সীতাকুন্ডে টিআই রফিক আহাম্মেদ মজুমদার।
এ সময় সংসদ সদস্য দিদারুল আলম বলেন, আমরা ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় একটি তদন্ত কমিটি করব। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ক্ষয়ক্ষতিসহ নানা বিষয় জানা যাবে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা যায়, মোস্তাকিমের তেলের ডিপো থেকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়। পরে সালামের কালো তেলের ডিপো, নিটল টাটা কোম্পানির সার্ভিসিং সেন্টারসহ আশপাশের ১০টি ভাড়াঘর পুড়ে গেছে। এতে প্রায় তিন কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ঘটনার সময় বিকট শব্দে কালো তেলের ডিপোর ট্যাংকার বিস্ফোরিত হতে থাকে।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৪ ইউনিটের ১২টি গাড়ি ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। আগুনের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল যোগাযোগ এক ঘণ্টা বন্ধ ছিল। এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামুখি লেন বিকাল ৫টা পর্যন্ত বন্ধ ছিল। ৪ ঘণ্টা মহাসড়ক বন্ধ থাকার কারণে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে নারী-শিশুসহ হাজার হাজার যাত্রীকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা জাবেদ জানান, দুপুরে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণের পর মোস্তাকিমের তেলের ডিপোতে আগুন ধরে যায়। এতে মুহূর্তেই আগুনের লেলিহান শিখা সালামের তেলের ডিপো, নিটল টাটা গাড়ির শো রুম ও সার্ভিসিং সেন্টারসহ আশপাশের ১০টি ভাড়া ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। বিস্ফোরণে তেলের ডিপোর ট্যাংকের ধাতব পাত রেললাইন ও আশপাশের চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়লে সেখানেও আগুন ধরে যায়। আগুনে ঘনবসতি পূর্ণ এই এলাকার শতাধিক বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেলেও নিটল টাটার সার্ভিসিং সেন্টারের মালামাল ও যন্ত্রাংশ এবং ১০ ঘর পুড়ে যায়। এতে প্রায় তিন কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারে।
এদিকে সীতাকুন্ড-ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির টিআই মো. রফিক আহাম্মদ মজুমদার জানান, অগ্নিকান্ডের সাথে সাথে আমরা মহাসড়ক সচল রাখার চেষ্টা করি, তারপর মহাসড়কের পাশের দোকানদাররা তাদের মালামাল সড়কের পাশে রাখার কারণে মহাসড়কে দীর্ঘ সময় গাড়ি চলাচলে বিঘœ ঘটে। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর মহাসড়কে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হয়।
চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক জসিম উদ্দিন জানান, তেলের ডিপোতে বিস্ফোরণের ফলে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিটের ১২টি গাড়ি প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ জানতে স্থানীয়দের নিয়ে কাজ করছি।