সীতাকুন্ডে খাল ও স্লূইচ গেইট ঘিরে শিপইয়ার্ড নির্মাণ

71

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের কুমিরা সাগর উপকূলে একটি সরকারি খাল ও স্রূইচ গেইট ঘিরে শিপব্রেকিং ইয়ার্ড নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, ধীরে ধীরে ঐ শিপইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ খালটি ভরাট করে পানি নিস্কাশন ব্যাহত করার পাঁয়তারা করছে। এর ফলে আসন্ন বর্ষায় কয়েকটি গ্রামে জলাবদ্ধতার আশংকা করছেন স্থানীয়রা। এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্টরা। সূত্রে জানা যায়, সীতাকুন্ডের কুমিরা ইউনিয়নের কুমিরা ঘাটঘর সংলগ্ন দক্ষিণ পাশে অবস্থিত মেসার্ম মোহরম ইস্পাত নামক একটি শিপব্রেকিং ইয়ার্ড নির্মাণকালে কয়েক গ্রামের পানি নিস্কাশনের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি সরকারি খাল ও এ খালের উপর নির্মিত স্রূইচ গেইট ঘিরে ফেলে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এরপর থেকে ধীরে ধীরে খালটি ভরাট করায় সেটি ক্রমশ ক্ষুদ্রাকায় হয়ে পড়ে পানি নিস্কাশন ব্যাহত হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মোহরম ইস্পাত শিপ-রিসাইক্লিং ইন্ড্রাস্ট্রিজ নামক ইয়ার্ডের সীমানার মধ্যে উত্তর অংশে খাল ও স্রূইচ গেইটটির অবস্থান। গেটের সাগর অংশের অনেকগুলো সরকারি স্ল্যাব তুলে ফেলে জমিয়ে রাখা হয়েছে বেড়িবাঁধের উপরের দিকে। আর এর ঠিক বিপরীতে গেটের দক্ষিণ অংশে লোহার জালের ঘেরা। পরিদর্শনকালে কুমিরা ঘাটঘর জেলে পাড়ার বাসিন্দা রাজু জলদাশ, দেবাশীষ, ক্ষুদিরামসহ কয়েকজন জেলে অভিযোগ করে বলেন, এখানে সরকার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেছিলো আমাদের মত উপকূলে বসবাসকারীদের জীবন রক্ষার জন্য। বেড়িবাঁধের যে যে অংশে সরকারি খাল আছে সেখানে পানি নিস্কাশনের জন্য তৈরী করা হয়েছিলো স্রূইচ গেইট। এ গেটগুলো সচল থাকলে অতি বৃষ্টিতে জমে যাওয়া পানি গেটের মাধ্যমে সাগরে চলে গিয়ে গ্রামবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা করে। কিন্তু মহোরম ইস্পাত নামক শিপইয়ার্ডটি খাল ও স্রূইচ গেইটটি দখল করে ধীরে ধীরে বন্ধ করে দিচ্ছে। এটি বন্ধ হলে ঘাটঘর জেলে পাড়াসহ আশপাশের ৪-৫টি গ্রামের মানুষ চরম জলাবদ্ধতার শিকার হবে। তাই আমরা বারবার এই স্রূইচ গেইট ও খালটি উদ্ধারের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু এ ইয়ার্ডের লোকজন কারো কথায় কর্ণপাত করে না।
সবমহলেই তাদের লোক আছে এমন দাপট দেখায় তারা। ফলে তারা খাল ও স্রূইচ গেইট শিপইয়ার্ডেও গ্রাস থেকে রক্ষার জন্য প্রশাসনের কাছে বিনীত অনুরোধ জানান। এদিকে এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেন সীতাকুন্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায় বলেন, আমি কয়েকদিনের মধ্যে সার্ভেয়ার পাঠিয়ে খাল ও স্রূইচ গেইটটি কি অবস্থায় আছে তা দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। অন্যদিকে নিজের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মোহরম ইস্পাত শিপ-রিস্লাইকিং ইন্ড্রাস্ট্রিজের সত্বাধিকারী মো. কামাল পাশা বলেন, খাল ও স্রূইচ গেইটটি আমার ইয়ার্ডের মধ্যে মনে হলেও আসলে ঐ অংশটি আমার জায়গা না। খাল থেকে ৩০ ফুট দূরে আমার জায়গা। আমি সরকারী খাল বা স্রূইচ গেইট দখল করিনি। এসব আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ষড়যন্ত্র। আমার হুইলস মেশিনসহ অন্যান্য সরঞ্জাম স্রূইচ গেইট থেকে অনেক দূরে। আর সেখানে এখনো আমি কোন জাহাজ ভাঙার জন্য আনিনি। তাই আমার দ্বারা কোন ক্ষতি হবার কথাও মিথ্যা। তিনিও বলেন আমিও চাই স্রূইচ গেট ও খালটি দখল মুক্ত রাখা হোক।