সীতাকুন্ডে কোটি টাকার পণ্য উধাও

27

সীতাকুন্ড প্রতিনিধি

সীতাকুন্ডে কোটি টাকার গার্মেন্টস পণ্য নিয়ে রহস্য ঘনীভ‚ত হচ্ছে। পুলিশ মামলা পরবর্তী পণ্য বহনকারী কাভার্ডভ্যানটি উদ্ধার করলেও উদ্ধার করতে পারেনি কোটি টাকার পণ্য। তবে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পণ্যগুলো চুরি হয়নি সম্ভবত আত্মসাৎ হয়েছে।
সীতাকুন্ডের ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এআইএম তোহিদুল করিম বলেন, ‘মামলা পরবর্তী আমরা অভিযান চালিয়ে গার্মেন্টস পণ্য বহনকারী কাভার্ডভ্যানটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। তবে কাভার্ডভ্যানে থাকা গার্মেন্টস এর ৫টি কার্টনে দুইশত পিস প্যান্ট ছাড়া বাকি পণ্য পাইনি। চালক ও গাড়ির হেলপার পলাতক থাকায় পণ্য উদ্ধারেও কোন রকম তথ্য বের করতে না পেরে গাড়ি নম্বর চেক করতে গেলে জানতে পারি, গাড়ির নম্বর, কাগজপত্র, চালক ও হেলপারের নাম-ঠিকানা সবই ভুয়া। এরপর আমরা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে জানতে পারি গাড়িচালক, হেলপার ছাড়াও এখানে ট্রাসপোর্টসহ আরো লোক জড়িত থাকতে পারে।আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে আমরা সঠিক ঘটনা জানতে পারবো।’
জানা যায়, গত ৬ নভেম্বর গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানার লক্ষী পুরার স্প্যারো এপারেলস লিমিটেড গার্মেন্টস থেকে ২৯৮টি কার্টন ভর্তি চিফ হাফ প্যান্ট বিদেশে রপ্তানির জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের এপিএল কনটেইনারে পাঠানো হচ্ছিল। কিন্তু ৩ দিন অতিবাহিত হলেও পণ্যবোঝাই কাভার্ডভ্যানটি নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছেনি। অনেক স্থানে খবর নিয়েও কাভার্ডভ্যানের কোন সন্ধান না পাওয়ায় গত বুধবার স্প্যারো এপারেলস লিমিটেডের কমার্শিয়াল ম্যানেজার মো. শাকিল আহম্মেদ বাদী হয়ে সীতাকুন্ড মডেল থানায় একটি মামলা করেন। মামলা পরবর্তীতে পুলিশ ও মালিক পক্ষ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে ভাড়া করা কাভার্ডভ্যানটি সীতাকুন্ড উপজেলার ফৌজদারহাট এলাকার শুকতারা চাইনিজ রেস্তোরাঁর সামনে টোল রোড সড়কে পড়ে আছে। এরপর পুলিশ সদস্যদের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান গাড়ির পেছনের লক খোলা অবস্থায় ভেতরে ৫টি কার্টনে মাত্র ২০০ পিস প্যান্ট রয়েছে। বাকি মালামালগুলো নেই। পুলিশ তাৎক্ষণিক কাভার্ডভ্যানটি ফাঁড়িতে নিয়ে আসে। পুলিশ বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করে জানতে পারে গার্মেন্টস পণ্য বহনকারী কাভার্ডভ্যানটির কাগজপত্র, গাড়িচালক ও হেলপারের কাগজপত্র সবই ভুয়া। পলাতক চালক ও হেলপারকে ফোন করলে মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। উদ্ধারকৃত কাভার্ডভ্যানটির সূত্র ধরে পুলিশ পলাতক গাড়িচালক, হেলপার ও গার্মেন্টস পণ্যগুলো উদ্ধার করার চেষ্টা করছে। কাভার্ডভ্যানে ছিল এক কোটি ১৩ লাখ ৬১ হাজার ৮৯৯ টাকার মালামাল।
সীতাকুন্ড মডেল থানার ওসি তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘পণ্যবোঝাই কাভার্ডভ্যানটি উদ্ধার হয়েছে। তবে কাভার্ডভ্যানের কাগজপত্র, গাড়ি চালক ও হেলপার সবই ফেক। আমরা তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে গাড়িচালকের পরিচয় শনাক্ত করেছি। খুব শিঘ্রই চালককে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারলে ঘটনার সঠিক কারণ উদঘাটন করা সম্ভব হবে। আসলেই কি বিষয়টি চুরি না আত্মসাৎ। যেখানে পণ্যবোঝাই কাভার্ডভ্যানটি পাওয়া গেছে, সেখানেও স্থানীয় লোক জড়িত থাকতে পারে। আমরা সব দিক থেকে তদন্ত করছি। ঘটনার সাথে জড়িত লোককে শনাক্ত পরবর্তী পণ্য উদ্ধার ও দোষীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।’