সিলেটে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা, দেশবাসী সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন

22

 

গত তিন দিনে বাংলাদেশের উজানে ভারতের আসাম ও মেঘালয়ে প্রায় আড়াই হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ওই বৃষ্টির পানি ঢল হয়ে বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের সব কটি জেলায় প্রবেশ করেছে। আগামী ১৯ জুন শুরু হতে যাওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। ওমমানী বিমান বন্দরে ফ্লাইট উঠানামা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সিলেট বিভাগের বেশির ভাগ এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে এবং যেভাবে পানি বাড়ছের পাওয়ার গ্রীড স্টেশন যে কোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে পুরো সিলেটে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হবে। গ্রীড স্টেশন বন্ধ হওয়া মানে বুঝতে পারছেন? প্রত্যেকটা পেট্রোল পাম্প বন্ধ হয়ে যাবে। চাইলেও দূর্গত এলাকায় পরিবহন ব্যবস্থার কারণে মানুষ ত্রাণ নিয়ে যেতে পারবে না। নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা পুরো কলাপ্স করবে।
প্রায় সব ঘরেই চুলা তলিয়ে গেছে। রান্নাবান্না বন্ধ। ঘরে নেই শুকনা খাবারও। নলকূপ তলিয়ে যাওয়ায় সুপেয় পানির অভাব দেখা দিয়েছে। আশপাশে বুক থেকে গলাসমান পানি। ফলে পাশের গ্রামের সঙ্গেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এখন কমবেশি এমন চিত্র সিলেটের বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর। এছাড়া মাত্রাতিরিক্ত পানি ঘরে ঢুকে পড়ায় কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাটের অনেক মানুষ পুরোপুরি ঘরবন্দী হয়ে পড়েছেন। সিলেটে হু হু করে বাড়ছে বন্যার পানি, আটকে পড়াদের উদ্ধারে নামছে সেনাবাহিনী। বন্যকবলিত এলাকার মানুষের অবস্থা খুবই খারাপ। তারা এখন বুভুক্ষের মত ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছে। অতীতের কোনো বন্যাতে যাদের বাড়িতে পানি ঢুকার রেকর্ড নাই, তারাও পানির নিচে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মানুষ কাকভেজা হয়ে, অনাহারে, অনিদ্রায় দাঁড়িয়ে আছে। এলাকার যুবসমাজ যারা মোটামুটি শ্রম দিয়ে সাহায্য করছিল তারাও হাঁপিয়ে যাচ্ছে।
ইমার্জেন্সি ক্রাইসিস রেসপন্স এগিয়ে না গেলে মানুষগুলো এমনিতেই মারা যাবে। ফসলের মায়ায় যারা গতকাল রাত পর্যন্ত পানি কমার অপেক্ষায় ছিল তারাও আজকে জীবনের মায়ায় সব ছেড়েছুড়ে নিরাপদ আশ্রয় খোঁজে বেড়াচ্ছে। সিলেটবাসী অতীতে এত বড় সংকটে পড়েনি। তাদের সহায়তায় সরকারের পাশাপাশি দেশের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিৎ।
Ñ কথাসাহিত্যিক