সিটি গেট থেকে ২৬৫ কিলোমিটার জুড়ে বসছে সিসিটিভি ক্যামেরা

71

জাহেদুল আনোয়ার চৌধুরী, সীতাকুন্ড

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চুরি, ডাকাতি ও বিভিন্ন অপরাধ দমনে বসছে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা (সিসিটিভি)। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রাম নগরীর সিটি গেইট থেকে ঢাকা সিটি মহাসড়কস্থ সাইনবোর্ড এলাকা পর্যন্ত প্রায় ২৬৫ কিলোমিটার সড়কে এই সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। জানা যায়, মহাসড়কে চুরি-ডাকাতি ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড রোধসহ যানবাহনের বেপরোয়া গতি নজরদারি এবং হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে সরকার মহাসড়কের অংশে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এরই অংশ হিসেবে গত বছরের ২৩ জুন হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় মহাসড়কে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। কাজটি শেষ করার কথা ছিল চলতি বছরের জুনে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। প্রকল্পটির কাজ করছে স্মার্ট গ্রæপ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর জন্য স্ব স্ব জায়গায় সিলভার রংয়ের পিলার (খুঁটি) স্থাপনের কাজ করছে। মহাসড়কে ক্যামেরা বসাতে সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ এবং বিটিসিএল কর্তৃপক্ষের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। আর এসব কাজ বাস্তবায়ন করছে হাইওয়ে পুলিশ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহাসড়কের আধা কিলোমিটার পর পর ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানোর জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্ধারণকৃত জায়গায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন খুঁটি বসানোর যন্ত্রপাতি সঙ্গে নিয়ে কাজ করছেন, তা তদারকি করছেন কর্মকর্তারা। বাড়বকুÐ থেকে সীতাকুÐ সদর বাজার পর্যন্ত তিনটি খুঁটি বসানোর কাজ প্রায় শেষের দিকে। খুঁটি বসানোর কাজ শেষ হলে ক্যামেরাসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম লাগানো হবে বলে দায়িত্বে থাকা লোকজন জানান।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প পরিচালক শরীফ সারোয়ার বলেন, সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর পর হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়কে নানাবিধ অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবে। বিটিসিএল ডেটা লাইন ও বিদ্যুৎ বিভাগ সংযোগের কাজ করছে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কাজ হওয়ায় আমরা চেষ্টা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে। অত্যাধুনিক ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক সড়ক মনিটরিংয়ে থাকবে। ফলে সড়কে কোনো রকম অপরাধ করলেও খুব দ্রুত শনাক্ত করা সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকুন্ড মডেল থানার ওসি বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেন, ‘হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে সরকার মহাসড়কে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু করেছে। এর মাধ্যমে মহাসড়কে চুরি, ডাকাতি ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডসহ সড়কে দ্রুত গতির গাড়ি শনাক্ত করা সম্ভব হবে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম বন্দরের শতভাগ আমদানি-রপ্তানি পণ্য মহাসড়ক দিয়ে পরিবহন করা হয়ে থাকে। প্রায় সময় রপ্তানীকারকরা তাদের জিনিসপত্র চুরির অভিযোগ নিয়ে আমাদের কাছে আসে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমরা জিনিসপত্র উদ্ধার করতে পারলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যর্থ হই। আশা করছি এই ক্যামেরা চালু হওয়ার পর মহাসড়কে কেউ অপরাধ সংঘটিত করতে চাইলে খুব দ্রুত তাদেরকে শনাক্ত পরবর্তী আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে’। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, ‘মহাসড়ক ব্যবহারের অনুমতি নিয়ে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপনের কাজ বাস্তবায়ন করছে হাইওয়ে পুলিশ। এই ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শেষ হলে মহাসড়কে অনেকটা শৃঙ্খলা আসবে বলে আমি মনে করি’।