সিটি কর্পোরেশনের ২৪৮৬ কোটি টাকার বাজেট

144

চলতি অর্থবছরের (২০১৯-২০২০) জন্য ২ হাজার ৪৮৫ কোটি ৯১ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। এটি সিটি কর্পোরেশনের ৫ম নির্বাচিত পরিষদের ৫ম বাজেট। গতকাল দুপুরে নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাজেট ঘোষণা করেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। একই সভায় গত অর্থবছরের (২০১৮-২০১৯) সংশোধিত ২ হাজার ৪৫ কোটি ৫১ লাখ ৯৮ হাজার টাকার বাজেট অনুমোদন দেয়া হয়। যা প্রস্তাবিত বাজেটের প্রায় ৮৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ। গতবারের মত এবারও উন্নয়ন বরাদ্দভিত্তিক বাজেট প্রণয়ন করেছে সিটি কর্পোরেশন।
মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের মেয়াদের শেষ বাজেটে ১৭টি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা দেখানো হয়েছে। এগুলোর মধ্যে অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা আধুনিক নগর ভবন, স্মার্ট সিটি প্রকল্প, এয়ারপোর্ট রোড় সম্প্রসারণ, বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন ও বিনির্মাণ শীর্ষক প্রকল্প। এছাড়াও সদ্য উদ্যোগ নেওয়া ৮৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে মেট্রো রেল চালুর বিষয়টিও বাজেটে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া বাজেটে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব আয়ে ফিরিঙ্গিবাজার থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণ, পৃথক বাস ও কন্টেইনার ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ এবং জোনভিত্তিক থিয়েটার ইনস্টিটিউট নির্মাণের পরিকল্পনা দেখানো হয়েছে।
শেষ বছরে এত বিশাল পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র নাছির বলেন, এখানে বেশ কয়েকটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এগুলো মাস-দুয়েকের মধ্যে অনুমোদন হওয়ার কথা। অনুমোদন হলেই এসব প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে যাবে। এছাড়াও বাকিগুলোর বাস্তবায়নও করা হবে। হয়ত পরবর্তী মেয়র যিনি হবেন, তার হাতেই বাস্তবায়ন কাজ শেষ হবে বলে মন্তব্য করেন মেয়র।
এর আগে বাজেট বক্তৃতায় সিটি মেয়র বলেন, বাজেটে কোনো খাতে কর বৃদ্ধি করা হয়নি। নগরবাসীর আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটানোর প্রত্যাশা এবং পরিবেশ, প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ বাসযোগ্য নগর প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এ বাজেট দেওয়া হচ্ছে। বাজেটে উন্নয়ন অনুদান ও কর আদায়কে উল্লেখযোগ্য খাত হিসেবে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাজেটে আয়ের খাত দেখানো হয়েছে নিজস্ব উৎস থেকে ৪৪৮ কোটি ৭৬ লাখ ৮৪ হাজার টাকা, উন্নয়ন অনুদান ১৫৫৫ কোটি ৮৮ লাখ ১৪ হাজার টাকা এবং অন্যান্য উৎস থেকে ৪০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। ব্যয় খাতে পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ৩৬১ কোটি ২৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা, উন্নয়ন খাতে রাজস্ব তহবিল-অন্যান্য খাতে ৫৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, এডিপি ও অন্যান্য খাত থেকে ১৫০৮ কোটি ৫৬ লাখ ১৪ হাজার টাকা, স্থায়ী সম্পদ ৩১ কোটি ০২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, বকেয়া দেনা ৫৪ কোটি ৭৭লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পসহ হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। সেসব প্রকল্প প্রথা অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশনকে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। বিদ্যমান জনবল নিয়ে কর্পোরেশন এসব প্রকল্প রক্ষণাবেক্ষণ করতে কতটুকু সক্ষম? এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, নগরবাসীকে প্রত্যাশিত সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগ ও পদোন্নতির জন্য সবচেয়ে বড় বাধা অনুমোদিত চাকরিবিধি না থাকা। ১৯৮৮ সালের জনবল কাঠামোর পদের বিপরীতে চলতি বছরের এপ্রিলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কর্মচারী চাকরি বিধিমালা-২০১৯ অনুমোদন দেয়া হয়েছে। যা গত ১১ জুলাই গেজেটভুক্ত হয়। এটা সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান পরিষদের তাৎপর্যপূর্ণ অর্জন। এ কারণে চট্টগ্রামবাসীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মন্ত্রিপরিষদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মেয়র।
এ প্রসঙ্গে মেয়র আরও বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কর্মপরিধি বর্তমানে বহুগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রমবর্ধমান চাহিদার আলোকে ৯ হাজার ৬০৪ জনের একটি পূর্ণাঙ্গ জনবল কাঠামো অনুমোদনের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রেরণ করা হয়েছে। এটা অনুমোদন হলে সিটি কর্পোরেশন নগরবাসীকে সেবা দিতে পূর্বের তুলনায় অনেক এগিয়ে থাকবে।
বাজেট বক্তৃতায় মেয়র সিটি কর্পোরেশনের শিক্ষাখাতের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে ১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলেন। তখন সাংবাদিকরা প্রশ্ন তোলেন, সিটি কর্পোরেশনের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তনে সিটি কর্পোরেশনের কোনো নাম নিশানা ছিল না। তাছাড়া সেখানে প্রয়াত সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারীদেরই বোর্ড অব ট্রাস্টিতে দেখা যায়। এর জবাবে মেয়র বলেন, নগরীতে যতগুলো ভবন রয়েছে সবগুলোকেই গৃহকর দিতে হয় সিটি কর্পোরেশনকে। এমনকি কোনো সরকারি প্রশাসনিক ভবনও বাদ যায় না। তবে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবহৃত ভবনের কোনো কর নেওয়া হয়নি। কারণ সেটি সিটি কর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এভাবেই পরিচালিত হয়ে আসছে। এখন বিষয়টি বিচারাধীন। তাই কোনো মন্তব্য করতে চাই না।
বাজেটে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় যা রয়েছে :
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে সিটি মেয়র বলেন, সরকারে আর্থিক সহযোগিতায় আধুনিক নগর ভবন নির্মাণ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন স্মার্ট সিটি প্রকল্প, এয়ারপোর্ট রোড সম্প্রসারণ ও বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ, নগরীর যানজট নিরসনের লক্ষ্যে মেট্রো রেল চালু, মাস্টারপ্ল্যানের সুপারিশ মতে প্রস্তাবিত নতুন সড়ক নির্মাণ, ফিরিঙ্গিবাজার হতে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণ, মুরাদপুর, ঝাউতলা, অক্সিজেন ও আকবর শাহ রেলক্রসিং-এর ওপর ওভারপাস নির্মাণ, ঢাকামুখী ও হাটহাজারীমুখী বাসটার্মিনাল নির্মাণ, কন্টেইনার ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ, নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ওভারপাস/আন্ডারপাস নির্মাণ, সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব জায়গায় বহুমুখী ভবনসহ আয়বর্ধক স্থাপনা নির্মাণ, নগরীর কাঁচা বাজারগুলি আধুনিকায়ন, বাকলিয়ায় সিটি কর্পোরেশনের জায়গায় স্পোর্টস কমপ্লেক্স নির্মাণ, ওয়ার্ডভিত্তিক খেলার মাঠ, শিশুপার্ক, কমিউনিটি সেন্টার, মিলনায়তন, ব্যায়ামাগার ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ, নগরীর বিভিন্ন স্থানে আধুনিক কনভেনশন হল নির্মাণ ও নগরীতে জোনভিত্তিক থিয়েটার ইনস্টিটিউট নির্মাণ করা হবে।
চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা পরিচালনায় বাজেট অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন অর্থ ও সংস্থাপন কমিটির চেয়ারম্যান কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন হিরন। এই এতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চসিক প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, জোবাইরা নার্গিস খান, ড. নিছার উদ্দিন আহমদ মঞ্জু, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলরবৃন্দ, চসিক সচিব আবু শাহেদ চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়–য়া, মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম, প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. সাইফুদ্দিন, অতিরিক্ত প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবিরসহ বিভাগীয় ও শাখা প্রধানগণ।

‘অন্যান্য’ খাতেই
১৪৭ কোটি টাকা!

নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে। গতকাল দুপুরে এই বাজেট ঘোষণা করা হয়। ১৯টি খাতে প্রস্তাবিত বাজেটের ব্যয় দেখানো হয়। যেখানে বিমা, ভ্রমণ ও যাতায়াত খাত দুটি ব্যতীত ১৭টি খাতে ‘অন্যান্য’ ব্যয় দেখানো হয়েছে। যার মোট পরিমাণ ১৪৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
বিদায়ী অর্থবছরে এই খাতে ব্যয় হয়েছে ৪৮ কোটি ৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এই অস্পষ্ট ব্যয়ের খাতটিকে অপ্রত্যাশিত ব্যয় বলে দাবি করেছেন চসিকের প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. সাইফুদ্দিন।
গতকাল মঙ্গলবার চসিকের বাজেট অধিবেশনে খাতওয়ারি আয় ও ব্যয় খাতের বর্ণনা দেন অর্থ ও সংস্থাপন কমিটির চেয়ারম্যান কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন হিরন।
বাজেট উপলক্ষে প্রতিবছরেই বাজেট বই বের করে সিটি কর্পোরেশন। এবছরও তার ব্যতিক্রম নয়। প্রকাশিত সেই বাজেট বইয়ে ১৯টি খাতে প্রস্তাবিত বাজেটের ব্যয় দেখানো হয়। যেখানে বিমা, ভ্রমণ ও যাতায়াত খাত দুইটিতে কোনো ‘অন্যান্য’ ব্যয় নেই। তবে বাকি ১৭টির প্রত্যেকটিতে রয়েছে অন্যান্য ব্যয়। যার মোট পরিমাণ ১৪৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। বিদায়ী অর্থবছরে এই অস্পষ্ট খাতে ব্যয় হয়েছে ৪৮ কোটি ৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
বাজেট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বেতন, ভাতা ও পারিশ্রমিক খাতে অন্যান্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ লাখ টাকা। একইভাবে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ ৫০ লাখ, ভাড়া, কর ও অভিকর খাতে ২৫ লাখ টাকা, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও পানি খাতে ৩০ লাখ টাকা, কল্যাণমূলক খাতে ১ কোটি টাকা, ডাক, তার ও দূরালাপনী খাতে ১০ লাখ, আতিথেয়তা ও উৎসবে ২৫ লাখ টাকা, বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা খাতে ১৫ লাখ টাকা, মুদ্রণ ও মনিহারি খাতে ১০ লাখ টাকা, ফিস, বৃত্তি ও পেশাগত ব্যয় খাতে ৫ লাখ, প্রশিক্ষণ ব্যয় খাতে ৫ লাখ, বিবিধ ব্যয় খাতে ৫ কোটি, ভান্ডার খাতে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা, বকেয়া দেনা খাতে অন্যান্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি টাকা।
এই বিষয়ে চসিকের প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. সাইফুদ্দিন বলেন, অপ্রত্যাশিত ব্যয়গুলোকে ‘অন্যান্য’ ব্যয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এটা অনেকটা ‘সিকিউরিটি মানির’ মত। অন্যদিকে আমাদের অপ্রত্যাশিত আয়ও রয়েছে। অতিরিক্ত ব্যয়ের খাত যদি না রাখা হয় তাহলে বাজেট মেলানো যাবে না বলে মন্তব্য করেন এই কর্মকর্তা।

গত ১০ অর্থবছরের
এবারই প্রথম ৮৪
শতাংশ বাস্তবায়ন

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রতি অর্থবছরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বাজেটের আকার বাড়ে, সে তুলনায় বাস্তবায়নের হার অনেক কম। এমনকি ১০ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটের ৪০ শতাংশও বাস্তবায়ন করতে পারেনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। তবে গত অর্থবছরে (২০১৮-১৯) প্রস্তাবিত ২৪২৫ কোটি টাকার বাজেটের ৮৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ বাস্তবায়ন করে সংস্থাটি। সিটি কর্পোরেশনের বাজেট ইতিহাসে এটি ব্যতিক্রমী ঘটনা। পূর্বের তুলনায় রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি ও অধিকসংখ্যক প্রকল্প বরাদ্দ পাওয়ায় এমনটা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বললেন, এবারের সবয়েচে বড় সফলতা আমরা প্রস্তাবিত বাজেটের সিংহভাগ বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চট্টগ্রামের প্রতি আন্তরিকতার কারণেই এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।
বিদায়ী অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেট ছিল ২ হাজার ৪২৫ কোটি ৪২ লাখ ৮২ হাজার টাকা। এর মধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে ২ হাজার ৪৫ কোটি ৫১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। যা প্রস্তাবিত বাজেটের ৮৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ওইবছর সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব খাত থেকে রাজস্ব আদায়েও ছিল সফলতা। পূর্বের অর্থবছরের (২০১৭-১৮) তুলনায় বিদায়ী অর্থবছরে ১৬ কোটি ২১ লক্ষ টাকা বেশি গৃহকর আদায় হয়েছে। এছাড়াও সরকারের উন্নয়ন অনুদান খাতে ১ হাজার ৫৯৬ কোটি ৭৫ লাখ ১৪ হাজার টাকা পায় সিটি কর্পোরেশন। যা সংশোধিত বাজেটের প্রায় ৭৮ শতাংশ।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের গত নয় অর্থবছরের বাজেট বিশ্লেষণে জানা গেছে, ২০১১-২০১২ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ৩৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ ষ পৃষ্ঠা ৯, কলাম ৭.
ষ প্রথম পৃষ্ঠার পর
বাস্তবায়িত হয়েছিল। একইভাবে ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে ৪৪ দশমিক ৩০ শতাংশ, ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে ৪৫ শতাংশ, ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে ৩৬ দশমিক ১৩ শতাংশ, ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে ৩৬ দশমিক ২৯ শতাংশ, ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে মাত্র ২৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ এবং ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটের মাত্র ৩৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়।
বাজেট বিশ্লেষণে আরও দেখা গেছে, ২০১১-২০১২ অর্থ বছরে প্রস্তাবিত বাজেট ছিল ৯১৫ কোটি ১৫ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা। যা সংশোধিত বাজেটে অনুমোদন হয়েছিল ৩৬০ কোটি ২৩ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা। ২০১১-২০১২ অর্থবছরে নগর উন্নয়নে বরাদ্দ ছিল ৪৪৬ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকা। কিন্তু এ খাতে ব্যয় হয়েছে মাত্র ১০৯ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা। ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে ৯৬০ কোটি ৫২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার প্রস্তাবিত বাজেট সংশোধিত বাজেট হিসেবে মাত্র ৪২৫ কোটি ৫২ লক্ষ ২ হাজার টাকা অনুমোদন পায়। ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ছিল ১১শ ৬ কোটি ৩০ লক্ষ হাজার টাকা। এর বিপরীতে বাস্তবায়িত হয়েছিল ৪৯৮ কোটি ৩৫ লক্ষ হাজার টাকা। ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে প‚র্বের অর্থবছরের চেয়ে ৮৯ কোটি ২১ লক্ষ ২৩ হাজার টাকা বেশি রেখে ঘোষণা করা হয়েছিল ১ হাজার ১শ ৯৫ কোটি ৯১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার বাজেট। অথচ অর্থবছর শেষে বাস্তবায়ন হয়েছিল মাত্র ৪শ ৩২ কোটি ১৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। তবু ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের তুলনায় প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৪৩৬ কোটি ৮৬ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা বেশি রাখা হয়েছিল। ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ছিল ১৬শ ৩২ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা। এর বিপরীতে বাস্তবায়িত হয়েছে মাত্র ৫৯২ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকা। ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ২ হাজার ২শ ২৫ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছিল। বাস্তবায়িত হয়েছে মাত্র ৬শ ৬২ কোটি ৬৬ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা। ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল ২ হাজার ৩২৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। এর বিপরীতে বাস্তবায়িত হয়েছে ৮৮৩ কোটি ৩৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা।