সিঙ্গাপুরে বিদেশি হস্তক্ষেপ বন্ধে ‘বিতর্কিত’ আইন পাস

5

 

দেশের অভ্যন্তরীন বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপ মোকাবেলায় বিতর্কিত একটি আইন পাস করেছে সিঙ্গাপুর সরকার। সমালোচকরা বলছেন, আইনটি ভিন্নমত দমনেও কাজে লাগানো হতে পারে। কারণ, এই আইনের আওতায় কর্তৃপক্ষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্লাটফর্ম এবং ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে এর ব্যবহারকারীদের তথ্য প্রকাশ করার নির্দেশ দিতে পারবে কিংবা কারও কোনও কন্টেন্ট বৈরি মনে হলে তা আটকেও দিতে পারবে। সিঙ্গাপুর অবশ্য বলছে, জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বে মারাত্মক হুমকি মোকাবেলায় এ ধরনের আইন প্রয়োজন। পার্লামেন্টে ১০ ঘণ্টার উত্তপ্ত বিতর্কের পর সোমবার পাস হয় এই বিদেশি হস্তক্ষেপ মোকাবেলা আইন বা ‘ফরেইন ইন্টারফেয়ারেন্স কাউন্টারমেজারস অ্যাক্ট’ (এফআইসিএ)। সিঙ্গাপুরের আইন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পার্লামেন্টে বলেন, অনলাইনে কিংবা দেশের ভেতরেই স্থানীয় কারও প্রক্সির মাধ্যমে বাইরের দেশগুলোর বৈরি প্রচারণা থেকে সুরক্ষা পাওয়ার জন্য সিঙ্গাপুরে এই আইন থাকা প্রয়োজন। বিবিসি জানিয়েছে, আইনটির আওতায় সিঙ্গাপুরে যারা বিদেশি সংস্থাগুলোর পক্ষ হয়ে বৈরি তথ্য প্রচার করছে বলে মনে হবে তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিতে পারবে। সম্প্রতি কয়েকবছরে সিঙ্গাপুরে জনমতকে প্রভাবিত করার চীনের চেষ্টা নিয়ে সন্দেহ ঘনীভূত হওয়ার পর এফআইসিএ পাসের এই পদক্ষেপ এল। কিন্ত আইনটি ব্যাপক পরিসরে কাজে লাগানোর সুযোগ থাকায় এটি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। আইনটি প্রয়োগে তথ্যের ক্ষেত্রে ক্ষমতার অপব্যবহার হতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সিঙ্গাপুরের বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতারাসহ, সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মীরা। মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’ এর এশিয়া অঞ্চলের উপ-পরিচালক ফিল রবার্টসন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আজকের এই এফআইসিএ- এর ধারা সক্রিয় কর্মী, স্বাধীন গণমাধ্যম ও বিরোধী রাজনীতিবিদ- সবার জন্যই মানধিকারের বিপর্যয় ডেকে আনবে।’ কারণ, এর আওতায় কারও বির“দ্ধে বিদেশিদের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ স্পষ্ট না হলেও এর ভিত্তিতে যে কাউকেই শাস্তি দেওয়ার অবাধ ক্ষমতা থাকবে সিঙ্গাপুর সকারের হাতে। তাছাড়া, ‘এ আইন ব্যবহার করে সরকার অন্যের মতামত দমন করতে পারবে, বিশেষ করে যে মত তাদের পছন্দ হবে না,’ বলেন রবার্টসন।