সিএমপি’র নতুন ৬ থানার প্রস্তাব

110

নগরীর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা এবং কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু টানেলসহ মেগা উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন পরবর্তী সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নতুন করে আরও ছয়টি থানা স্থাপনের প্রস্তাব পাঠিয়েছে সিএমপি। সম্প্রতি পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো নতুন থানা স্থাপনের এ প্রস্তাবনা অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অনুমোদন পেলে তখন সিএমপির থানার সংখ্যা বেড়ে হবে ২২টি। মূলত নগরীর দক্ষিণ ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এসব থানা স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর নতুন ছয় থানার প্রস্তাবনা পাঠানোর সত্যতা নিশ্চিত করে পূর্বদেশকে বলেন, নগরীর জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি অবকাঠামোগত উন্নয়ন কর্মকাÐের কারণে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন ঘটছে। এসব পরিবর্তনের কারণে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ঢেলে সাজানোর প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের পর সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নিরাপত্তা সামগ্রিকভাবে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হবে। এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে নতুন ছয়টি থানা স্থাপনের প্রস্তাবনা সদর দপ্তরে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। সিএমপি সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু টানেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মত মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের পর ‘রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা’ বা কেপিআইয়ের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে। পাশাপাশি কানেক্টিভিটির কারণে তখন বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম অনেকাংশে বেড়ে যাবে। সার্বিকভাবে ভবিষ্যত নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ওই অংশে পৃথক তিনটি থানা স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে বিদ্যমান পতেঙ্গা ও কর্ণফুলী থানা এলাকাও পুনর্গঠিত হবে। প্রাথমিকভাবে এগুলোর নাম দেয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু টানেল থানা, বড় উঠান থানা ও বিমানবন্দর থানা। এ ছাড়া নগরীর উত্তর-পশ্চিমাংশে জনসংখ্যার আধিক্যের কারণে বিদ্যমান চারটি থানার অংশ নিয়ে আলাদা তিনটি থানা স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে চান্দগাঁও থানার একাংশ নিয়ে মোহরা থানা, চান্দগাঁও এবং বায়েজিদ বোস্তামী থানার একাংশ নিয়ে অনন্যা থানা এবং আকবরশাহ ও পাহাড়তলী থানার একাংশ নিয়ে কাট্টলী থানা করার প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। থানাসহ বিভিন্ন ইউনিট মিলিয়ে বর্তমানে সিএমপিতে সাত হাজার ৯৮ জন ফোর্স নিয়োজিত রয়েছে। প্রস্তাবিত নতুন ছয়টি থানা অনুমোদন পেলে ফোর্সের সংখ্যাও কয়েক হাজার বাড়বে। সদর দপ্তরের অনুমোদন পাওয়ার পর সেটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ৬০ বর্গমাইল আয়তনের চট্টগ্রাম মহানগর এলাকায় ১৯৭৮ সালে মোট ছয়টি থানা নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে সিএমপি। এরপর বিগত ২০০০ সালে থানার সংখ্যা আরও ছয়টি বাড়িয়ে ১২টিতে উন্নীত করা হয়। সর্বশেষ ২০১২ সালে মহানগর এলাকায় আরও চারটি নতুন থানা স্থাপনের মাধ্যমে মোট ১৬টি থানায় বিভক্ত হয়ে সিএমপির কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। এরপর গত ২০১৬ সালে নতুন করে আরও চারটি থানা স্থাপনের উদ্যোগ নেয় মহানগর পুলিশ (সিএমপি)। এগুলোর সম্ভাব্য নাম রাখা হয়েছিল কুয়াইশ, ফতেয়াবাদ, ভাটিয়ারী ও শিকলবাহা থানা। তবে ওই চার থানার কিছু অংশ জেলা পুলিশের সীমানার পড়ার কারণে তাদের মতামত চেয়ে চিঠি দেয় সিএমপি। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় ওই উদ্যোগ আর এগোয় নি। নগরীতে বর্তমানে এখন ৬০ লাখ বাসিন্দা রয়েছে বলে বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। এর বিপরীতে নাগরিকদের নিরাপত্তায় নগর পুলিশের জনবল রয়েছে ৭ হাজার ৭৯ জন। সেই হিসাবে প্রতি আটশ’ ৫৭ জন বাসিন্দার নিরাপত্তা নিশ্চিতের রয়েছে মাত্র একজন পুলিশ।