সিএনজি ট্যাক্সিসহ সকল অনিবন্ধিত গাড়ি দ্রুত নিবন্ধন করা হোক

80

অনিয়ম অনিয়মকে উস্কায়। দেশের প্রত্যেক সেক্টরে কমবেশি দুর্নীতি হতে পারে। তবে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা যে হারে বেড়ে যাচ্ছে তাতে মনে হয় সরকার প্রবল অর্থ সংকটে পড়তে যাচ্ছে। রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পেলে সরকার অর্থনৈতিকভাবে ভালো অবস্থানে থাকে। এক্ষেত্রে রাজস্ব আদায়ের নির্বাহী কর্তৃপক্ষ সমূহকে আরো অধিক পরিমাণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। কাস্টম, বিআরটিএ, বিএসটিএসহ সরকারি নিবন্ধন ও রাজস্ব আদায়ের সংস্থাসমূহকে যথাযথ কার্যকর করতে সরকারকে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। দেশে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যের সকল ধরনের কার্যক্রমের উপর কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করতে হয় সরকারকে। সরকার এক্ষেত্রে শৈথিল্য কিংবা দুর্নীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হলে চলবেনা। দেশে যে সকল গাড়ি অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করা হয় তার হিসাবনিকাশ নিশ্চয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের রয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সরকারি কাস্টম দিয়ে গাড়িগুলো আমদানি করলেও সেগুলো রাস্তায় চলাচলের যে সরকারি বিধিবিধান রয়েছে তা অনেকাংশে মেনে চলছেনা বিভিন্ন যানবাহন। গাড়ি আমদানির পর তা ক্রয় করে রাস্তায়/সড়কে চালানোর জন্য পার্মিটের বিধান রয়েছে, যার দেখভাল করে বিআরটিএ। নানাপ্রকার হয়রানির অজুহাতে গাড়ির মালিকরা বিআরটিএর কাছে যাচ্ছে না। আর যেসব গাড়ির রুট পার্মিট নবায়নের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায় তার মধ্যে অধিকাংশ গাড়ির মালিক তা নবায়ন করে না। এর ফলে সড়কে এ সকল গাড়ি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ঘুষ দিয়ে বছরের পর বছর সরকারি কর বা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ এর প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি, শুধু দক্ষিণ চট্টগ্রামে অবস্থিত ৭টি উপজেলায় ১৫ হাজার সিএনজি ট্যাক্সি নিবন্ধন ছাড়াই চলাচল করছে। নিবন্ধনহীন গাড়িগুলোর কোন নাম্বারও নেই। নাম্বার বিহীণ সিএনজি অটোরিক্সাসমূহ সড়কে নিয়মিত চলছে। সেগুলোকে সরকারি নিবন্ধনের আওতায় আনার কোন কার্যকর পদক্ষেপ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নেই। গাড়ির মালিকরা ১৫ হাজার ১৮৫ টাকা খরচ করে বিআরটিএর নিবন্ধন নিতে অনিহা প্রকাশ করছে। এর মূলে রয়েছে সড়কে গাড়িগুলো বিভিন্ন থানার পুলিশের সামনে সড়কে চলাচল করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের ৩০০ টাকা টোকেন দিয়ে সড়কে চলাচল করতে দিচ্ছে। পুলিশের টোকেন বাণিজ্যের এক টাকাও সরকারি ফান্ডে যাচ্ছে না।
বছরের পর বছর সারাদেশে অসংখ্য সিএনজি ট্যাক্সি সড়কে চলাচল করছে, অথচ সরকার কোন রাজস্ব এইসব গাড়ি থেকে পাচ্ছে না। মজার বিষয় হলো সড়কে অবৈধভাবে টোকেন বাণিজ্যের আওতায় যেসব গাড়ি সড়কে যাতায়াত করছে সে বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। বিভিন্ন থানার মাধ্যমে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ গ্রহণ করে অনিবন্ধিত সিএনজি ট্যাক্সি সমূহকে নিবন্ধনের আওতায় আনার ব্যবস্থা করলে প্রচুর সরকারি রাজস্ব আয় হতো। এক্ষেত্রে সড়কে নিবন্ধনহীন যেসব সিএনজি ট্যাক্সি চলছে সবগুলোর একটা পরিসংখ্যান বের করে তাদের নিবন্ধনে বাধ্য করা গেলে পুলিশের টোকেন বাণিজ্য বন্ধ হয়ে সরকারি রাজস্ব সমৃদ্ধির ব্যবস্থা কার্যকর হতো। সরকারি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে একটি দ্রæত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এমন আশা দেশপ্রেমিক নাগরিকদের।