সিআরবিতে ‘জ্ঞান বিনিময়’ মেলা

7

এম এ হোসাইন

পড়া শেষ হয়ে ঘরে পড়ে থাকা বই নিয়ে আসছেন পাঠকরা। বিনিময়ে অন্য বই নিয়ে যাচ্ছেন তারা। বই বিনিময়ের এই উৎসব শেষ হয়েছে নগরের সিআরবিতে। দুইদিন ব্যাপি এ উৎসবে বিনিময় হয়েছে পনের হাজারের বেশি বই। ব্যতিক্রমী এই উৎসবে মূলত, জ্ঞানের বিনিময় হয়েছে বলে মনে করছেন আয়োজকরা।
ঘরের কোণায় ধুলো জমে পড়ে থাকা বইয়ের বিনিময়ে অন্য আরেকটি বই নেওয়ার ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগটি নিয়েছে ‘বইবন্ধু’ নামের একটি সংগঠন। নিজের পঠিত পুরাতন বইটি অন্যের সাথে না পড়া আরেকটি বইয়ের সঙ্গে বিনিময় করতে এমন আয়োজন। যান্ত্রিক শহরে নানা উৎসব হলেও বই নিয়ে এ উৎসব একেবারেই ব্যতিক্রম। বই নিয়ে মেলা হলেও সেখানে বিনিময়ের সুযোগ নেই। বই বিনিময় উৎসবে নেই কোনো বেচাকেনা। শুধু বই বিনিময়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল এ উৎসব। পাঠকের উপস্থিতিতে ব্যতিক্রমী এ উৎসব জমিয়েছেও বেশ। সিআরবির শিরীষতলাতে রীতিমতো ভিড় পড়েছে পাঠকের।
বই বিনিময় উৎসবে কথা হয় নাজমুল হাসান নামের এক পাঠকের সাথে। তিনি বলেন, বই মেলা হয়, সেখান থেকে বই কেনা যায়। কিন্তু পড়া শেষ হওয়া বইটি বিনিময়ের কোনো সুযোগ নেই। বই বিনিময় করার মাধ্যমে এখন জ্ঞানর্চ্চাটাকে অব্যাহত রাখার সুযোগ হয়েছে। এই উৎসবের মাধ্যমে বইপ্রেমীর সংখ্যা বাড়াবে। একই সাথে বইয়ের প্রতি পাঠকের মনোযোগ বাড়বে।
উৎসব ঘুরে দেখা গেছে, ১৬টি স্টলে আটটি বিভাগে সাজানো রয়েছে কয়েক হাজার বই। মোট ২০ হাজার বই আনা হয়েছে আয়োজকদের পক্ষ থেকে। শিশুতোষ, উপন্যাস, কবিতা, ধর্মীয়, একাডেমিক, প্রবন্ধ ও অন্যান্য, গল্প ও কিশোর উপন্যাস,রাজনৈতিক ইতিহাস এবং আত্মজীবনীসহ আটটি বিভাগে বই বিনিময়ের সুযোগ পাচ্ছেন বইপ্রেমীরা। উৎসবে একজন বইপ্রেমী সর্বোচ্চ ১০টি বই বিনিময় করতে পারছেন। এর আগে মাঠে থাকা বুথে বই জমা দিয়ে একটি স্লিপ বা টোকেন নিতে হচ্ছে তাদের। এরপর টোকেন বা স্লিপটি নিয়ে নির্দিষ্ট বিভাগের টেবিল থেকে বই সংগ্রহ করতে পারছেন তারা।
উৎসবের যুগ্ম আহব্বায়ক শাহাদাত হোছাইন জানান, উৎসবের প্রথমদিনে প্রায় সাত হাজার বই বিনিময় হয়েছে। আমাদের টার্গেট ছিল ২০ হাজারের বেশি বই বিক্রি হবে। সব মিলিয়ে পনের হাজার বই বিনিময় হয়েছে। শুক্রবার হলে তখন টার্গেটের বেশি বই বিনিময় হতো। গতবারে আমাদের ১৪ হাজার বই বিনিময় হয়েছিল।
২০২১ ও ২০২৩ সালের পর এ বছর তৃতীয়বারের মতো বই বিনিময় উৎসব করছে বইবন্ধু। আগের বছরগুলোয় ১২ থেকে ১৫ হাজার বই বিনিময় হয়েছে বলে জানান আয়োজকেরা।
ব্যতিক্রমী বই বিনিময়ের এমন উৎসব নতুন নয়। তাছাড়া শুধু ‘বইবন্ধু’ সংগঠনই এমন আয়োজন করে আসছে তাও নয়। কয়েক বছর ধরে নগরের জামালখান এলাকায় বই বিনিময় উৎসব আয়োজন করে আসছিল স্টোরিটেলিং প্ল্যাটফর্ম ‘ফেইল্ড ক্যামেরা স্টোরিজ’ নামক একটি সংগঠন। বই বিনিময়ের এমন আয়োজনে সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে বেশ। জ্ঞান বিনিময়ের এই আয়োজন সামনে আরো বড় পরিসরে চান পাঠকরা।