সাহিত্যের স্বাতন্ত্র্য সন্ধান

186

আহমেদ মাওলা (জ. ১৯৭১) একজন নিরলস গবেষক ও গদ্যকর্মী। গত শতকের নব্বইয়ের দশক থেকে মূলত সাহিত্য-সমালোচনার মধ্যদিয়েই তিনি তাঁর স্বাতন্ত্র্যকে জানান দিয়ে আসছেন বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিন-জার্নাল আর দৈনিকের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির পাতায় পাতায়। তাঁর সাহিত্য-সমালোচনা যেমন বিচিত্রমুখী তেমনি প্রায় সর্বত্রগামী। বাংলাদেশের (১৯৪৭ উত্তর) গল্প-উপন্যাস-কবিতা নিয়ে তাঁর প্রথম যৌবনের গভীর অনুসন্ধান ও কৌতূহলের এক উজ্জ্বল স্বাক্ষর উত্তরকালের সাহিত্য (২০১৬) শিরোনামীয় গ্রন্থটি। লেখকের একাডেমিক ছাত্রাবস্থায় রচিত এবং তাঁর উদীয়মান দৃষ্টিভঙ্গি ও বিশ্লেষণধর্মী মননের এক স্বচ্ছ দর্পণ যেনো একুশটি প্রবন্ধ-নিবন্ধ নিয়ে এ-বই।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আহমেদ মাওলার প্রবন্ধগুলো প্রায় বিশ বছর সময় ব্যবধানের মধ্যে লেখা। তবে কোনো প্রবন্ধতেই তাঁর পান্ডিত্য প্রমাণের বাগাড়ম্বর নেই; অধিকাংশ প্রবন্ধে নেই প্রথাগত টীকা-টিপ্পনী (একুশটির মধ্যে সাতটি প্রবন্ধ ব্যতিক্রম)। সহজ-সরল ও প্রাণবন্ত ভাষায় বিস্তৃত করেছেন তাঁর ভাবনার সোনালি ডানা। সাহিত্যের ছাত্র হিসেবে নয়, অধ্যাপক হিসেবে নয়, গুরুগম্ভীর সাহিত্য সমালোচক হিসেবেও নয়-আহমেদ মাওলা একজন সাধারণ সাহিত্য-পাঠকের মতোই মেলে ধরেছেন তাঁর সাহিত্য পাঠে লব্ধ অভিজ্ঞতার ঝুলি। কখনও নিজের যুক্তির পক্ষে, কখনও কোনো যুক্তির উল্লেখ ছাড়াই উদ্ধৃত করেছেন পঠিত-আলোচিত সাহিত্যের ভালোলাগা অংশগুলো। গ্রন্থের ‘প্রসঙ্গকথা’ অংশে প্রাবন্ধিকের স্বীকারোক্তি শুনি, ‘কাউকে কিছু শেখানোর জন্য নয়, একান্ত নিজের পড়া বইগুলোর পাঠ-অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে গিয়ে একদা লিখতে শুরু করেছিলাম’। তবু তাঁর প্রবন্ধ-পাঠকমাত্রেই উপলব্ধি করবেন, আহমেদ মওলা এখানে সাহিত্যের সহজপাঠ বা পরিচিতিমূলক বর্ণনায় সীমাবদ্ধ থাকেননি-সাহিত্যের শৈলী-নান্দনিকতার বিশ্লেষণের প্রয়াস পেয়েছেন। পাশাপাশি আধুনিকতা-উত্তরাধুনিকতা, চেতনাপ্রবাহ রীতি, শিল্প-সাহিত্যে ঐতিহাসিক-রাজনৈতিক দায়, ঔপনিবেশিক প্রভাব, একুশের চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ধর্মনিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িকতা ও সাম্যবাদ ইত্যাদি নানা বিষয় উপলব্ধি-উপস্থাপনে অগ্রসর হয়েছেন অবলীলায়। ফলে প্রবন্ধগুলো চিন্তায়-মননে যেমন সমৃদ্ধ, তেমনি সাধারণ পাঠকের কাছেও আনন্দদায়ক।
তিনটি অধ্যায়ে বিন্যস্ত গ্রন্থের অধ্যায় এক-এ আছে বাংলা উপন্যাস নিয়ে দশটি প্রবন্ধ। প্রথম প্রবন্ধের শিরোনাম: ‘চেতনাপ্রবাহ শিল্পশৈলী ও সৈয়দ ওলীউল্লাহর চাঁদের অমাবস্যা এবং কাঁদো নদী কাঁদো’। প্রাবন্ধিক এখানে ফ্রয়েড উদ্ভাবিত চেতন-অচেতন মনের মাঝখানে মস্তিষ্কের অবচেতন মনের ব্যাপারগুলো স্পষ্ট করার প্রয়াস চালান। পাশাপাশি জেমস জয়েস-এর ইউলিসিস ও ভার্জিনিয়া উলফ-এর টু দ্যা লাইট হাউস উপন্যাস দুটিতে ব্যবহৃত চেতনাপ্রবাহ রীতির আলোকে বাঙালি ঔপন্যাসিক সৈয়দ ওলীউল্লাহর চাঁদের অমাবস্যা এবং কাঁদো নদী কাঁদো উপন্যাস দু’টির শিল্প-শৈলী বিশ্লেষণ করেন। ‘লালসালু উপন্যাসের সমাজ : ধর্মের নামে শাসন ও শোষণের চিত্র’ প্রবন্ধে সৈয়দ ওলীউল্লাহর প্রথম উপন্যাস অবলম্বনে বঙ্গীয় বদ্বীপে ধর্মীয় রাজনীতি ও ধর্ম-ব্যবসার ভন্ডামীর সমাজচিত্র আঁকতে গিয়ে প্রাবন্ধিক বলেন: ‘মহব্বত নগরের সমাজ স্থির, স্থবির শুধু নয়-পশ্চাদপদ হয়ে থাকে মজিদের ভীতির কারণে’। এ চিত্র যেনো মৌলবাদের উত্থানে ভীত-সন্ত্রস্ত ও আতঙ্কিত বর্তমান বিশ্বেরই সমাজচিত্র। এভাবে ‘আবু ইসহাকের সূর্য দীঘল বাড়ি : সমাজ বিশ্লেষণ’ এবং ‘আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের উপন্যাস : সময় ও সমাজ’ প্রবন্ধ দু’টিতেও প্রাবন্ধিকের সমাজ-বিশ্লেষণের সম্যক চিত্র ফুটে ওঠেছে। ‘রূপক-প্রতীক শিল্পশৈলী ও শওকত ওসমানের ক্রীতদাসের হাসি, সমাগম, রাজাউপাখ্যান ’ প্রবন্ধে নিরীক্ষাধর্মী উপন্যাস লেখক শওকত ওসমানের তিনটি উপন্যাসের শৈলী বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ‘শহীদুল জহিরের সে রাতে পূর্ণিমা ছিল বহুস্বরসঙ্গতির উপন্যাস’ প্রবন্ধটিও একই বৈশিষ্ট্যের। এ অধ্যায়ে আরও আছে : ‘মাহমুদুল হকের উপন্যাস : নিরাপদতন্দ্রা ও মাটির জাহাজ নারীর অন্তর্বেদনা’, ‘আশাপূর্ণা দেবীর উপন্যাসত্রয়ী : প্রথম প্রতিশ্রুতি, সুবর্ণলতা ও বকুলকথা’, ‘বাংলাদেশের উপন্যাস ও ইমদাদুল হক মিলন’ এবং ‘বাংলাদেশের উপন্যাস : তিন যুগের অর্জন’ শিরোনামের বিচিত্র স্বাদের চারটি সমৃদ্ধ প্রবন্ধ।
অধ্যায় দুই -এ আছে বাংলা ছোটগল্প নিয়ে পাঁচটি প্রবন্ধ। ‘সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর ছোটগল্প : ব্যক্তির ক্ষয়িত রূপ ও সমাজ-পরিস্থিতি’ প্রবন্ধে গল্পকারের মনঃসমীক্ষণের দিকে যে ঝোঁক তা বিশ্লেষিত হয়েছে। প্রাবন্ধিকের ভাষায়: ‘বাংলাসাহিত্যের নতুন এক দিগন্তকে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ উন্মোচিত করেছেন, ভিন্ন এক ভূগোলের বাসিন্দাদের তিনি উপস্থাপন করেছেন তাঁর রচনায়। … মাত্র পঞ্চাশটি গল্পে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ সৃষ্টি করে গেছেন বোধের এমন ভূগোল, পর্যবেক্ষণের অনুপুঙ্খ নিপুণতা, সত্যি তা বিস্ময়কর।’ ‘বাংলাদেশের ছোটগল্প : বিষয় ও আঙ্গিক চেতনা’ প্রবন্ধে দশক অনুযায়ী বিভাজন করে আলোচিত হয়েছে বাংলাদেশের ছোটগল্পের বিষয়-বৈচিত্র্য ও গঠন-শৈলী। সত্তর দশকের ছোটগল্প আলোচিত হয়েছে ‘বারুদের গন্ধভরা সকাল এবং তারপর’ উপশিরোনামে। এভাবে আশির দশকের ছোটগল্প ‘কাঁটা তারে বসতি ও চন্দ্রহীন রাত্রি দিন’ এবং ‘অবিকশিত জনপদের আলোক প্রাপ্ত সন্তানেরা: নব্বইয়ের কথাকোবিদ’ উপশিরোনামে নব্বইয়ের দশকে প্রকাশিত বাংলা ছোটগল্পের নির্মোহ আলোচনা করেছেন প্রাবন্ধিক। অনেক ক্ষেত্রে একটিমাত্র বাক্যে একজন গল্পকারের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরতে প্রয়াস চালিয়েছেন; যেমন-‘রাজীব নূর, মিথের ভেতর দিয়ে জীবনকে দেখতে চান, যেমন দ্রৌপদী ও তাঁর প্রেমিকেরা গল্পে’। ‘মুক্তিযুদ্ধের ছোটগল্প : বুলেটবিদ্ধ দিনরাত্রি’ প্রবন্ধে বর্ণিত হয়েছে বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধের চিত্র ও মুক্তিযুদ্ধের অচরিতার্থ চেতনা রূপায়নে গল্পকারদের সফলতা-ব্যর্থতা ও সীমাবদ্ধতার স্বরূপ। ‘আলাউদ্দিন আল আজাদের ছোটগল্প : সমাজচেতনা’ ও ‘রাহাত খান : তাঁর গল্পের বিষয়-আশয়’ শিরোনামের প্রবন্ধ দুটিতে বাংলাদেশের দুজন বিখ্যাত কথাসাহিত্যিকের ছোটগল্পের সহজ-পরিচয় পাবেন সাধারণ পাঠক।
অধ্যায় তিন -এ আছে বাংলা কবিতা নিয়ে ছয়টি প্রবন্ধ। প্রাবন্ধিক নিজেই স্বীকার করেছেন তিনিÑ‘পদ্য মাতাল, গদ্যে বিভোর’। ‘চল্লিশের কবিতায় সাম্যবাদী চেতনার রূপায়ণ’ শীর্ষক অভিসন্দর্ভের জন্য তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ.ডি. (২০০৫) লাভ করেন। এবিষয়ক বিস্তৃত প্রবন্ধ ‘বাংলা কবিতায় সাম্যবাদী চেতনার ধারা’। ‘স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের কবিতা : প্রকৃতি ও প্রবণতা’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক বলেন, ‘স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের কবিতা রোমান্টিক আত্মভুক, উৎকট ব্যক্তিবোধ ও মধ্যবিত্ত সুলভ দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে’। এখানে তিনি সত্তরের দশক থেকে শূন্যদশকের কবি ও কবিতার স্বরূপ-প্রবণতা সমূহ দশকভিত্তিক আলোচনা করেছেন। পাশাপাশি পাঠককে পরিচয় করিয়ে দিতে প্রয়াস চালিয়েছেন প্রত্যেক দশকের এক ঝাঁক কবির বর্ণানুক্রমিক বিন্যস্ত নামের সাথে। ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাংলাদেশের কবিতা’ প্রবন্ধে আহমেদ মাওলার মন্তব্য: ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কোনো বিমূর্ত ধারণা নয়; যে আবেগ, বিশ্বাস, চিন্তা একটি বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত সমাজের স্বপ্ন দেখায়, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের জন্য দৃঢ় প্রত্যয়ী হতে শেখায়, ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত, ভবিষ্যৎমুখী, অভিন্ন জাতিসত্তায় প্রণোদিত করে, তা-ই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’। বাংলা কবিতা থেকে প্রচুর উদাহরণ-উদ্ধৃতি দিয়ে প্রবন্ধিক এখানে বাংলাদেশের কবিতার স্বাতন্ত্র্য-স্বকীয়তা চিহ্নিত করবার প্রয়াস চালিয়েছেন।‘কবিয়াল রমেশ শীল ও তাঁর অনন্য অবদান’ প্রবন্ধে চট্টগ্রামের কবিগান রচয়িতা রমেশ শীল (১৮৭৭Ñ১৯৬৭) এর অসাম্পদায়িক ও গণমুখী জীবনদৃষ্টি এবং উদারতা-সরলতার স্বরূপ বিশ্লেষণ করা হয়েছে বাংলা কবিগানের প্রেক্ষাপটে। ‘বাংলাদেশের কবিতা : ষাটের দশকের প্রবণতা ও কবি রফিক আজাদ’ ও ‘রফিক আজাদের বিরিশিরি পর্ব’ প্রবন্ধ দু’টিতে কবি রফিক আজাদের (১৯৪১Ñ২০১৬) কবিতার শিল্প- সৌন্দর্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে সমকালীন বাংলা কবিতার পটভ‚মিতে। প্রাবন্ধিক কবির বৈশিষ্ট্য স্পষ্ট করেন কবিতার উদ্ধৃতি দিয়ে এভাবে: ‘ধর্ম আমি বুঝিনি কখনো / ধর্ম ভালো-ধর্ম তো বুঝি না / ধর্মদ্রোহী নই-আমি ধর্মনিরপেক্ষ / … পরিত্যাগ করি ধর্ম; / নিপাট বাঙালি কবি / আমি একবিংশ শতাব্দীর\’ (মরে যাবো, ঝরে যাবো)। পাঠক অনুধাবন করতে পারবেন আহমেদ মাওলার প্রিয় অনুষঙ্গ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা; যার মূলে ধর্মান্ধতার আবরণ-শৃঙ্খল ভেঙে উদ্ভাসিত ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ। এর বীজ-মন্ত্র বাঙালি জেনেছিল বায়ান্নো ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। যে আলোকবর্তিকা আজও বাঙালিকে আলোকিত করে-সেতো বাঙালি জাতীয়তাবাদের মন্ত্রে উজ্জীবিত একুশের চেতনা। একুশের চেতনায় জারিত বলেই কি একুশটি প্রবন্ধ নিয়ে সমৃদ্ধ এ গ্রন্থ ? সে প্রশ্নের উত্তর রইলো পাঠকের উপর।
তবে চমৎকার এ বইটির সূচিপত্রের মারাত্মক কিছু মুদ্রণপ্রমাদ পাঠককে বিমুখ-বিরক্ত করতে পারে; যেখানে প্রথম ও তৃতীয় প্রবন্ধকে দুটি করে প্রবন্ধ দেখানো হয়েছে আবার বিভিন্ন গ্রন্থ-নামে একই সাথে বাঁকা হরফ ও উদ্ধৃতি চিহ্ন ব্যবহৃত হয়েছে। ভেতরেও কিছু মুদ্রণ-প্রমাদ-যেগুলো আরেকটু সতর্ক হলে এড়ানো যেতো। বলা বাহুল্য, এ দায় লেখকের একার নয়, প্রকাশকেরও বটে। বলতে দ্বিধা নেই গ্রন্থটি সব শ্রেণির সাহিত্য-পাঠকের অভিজ্ঞতার দিগন্তকে প্রসারিত করবে। আহমেদ মাওলা নিজের আগ্রহকে এখানে পাঠকের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পেরেছেন অবলীলায়। বাংলা সাহিত্যের নানান প্রান্তের বিচিত্র নিরীক্ষা-প্রবণতা নিয়ে আলোকপাত করেছেন। ১৯৪৭ উত্তর বাংলা সাহিত্য নিয়ে আলোচনার ধারাবাহিকতায় বিশ্বসাহিত্যের বিচিত্র তত্ত্ব-মতবাদের পথে-প্রান্তরে যেন পাঠককে হাত ধরে নিয়ে গেছেন। নাটক-প্রবন্ধের আলোচনা বাদ পড়লেও উৎসাহী পাঠকের সামনে হাজির করেছেন বাংলা সাহিত্যের সমৃদ্ধ পসরা। একাডেমিক শিক্ষার্থী-অধ্যাপক, সাহিত্যিক, সমালোচক-শুধু তাঁদের জন্য নয়, সাধারণ সাহিত্য-পাঠকের জন্যও এ এক সুখপাঠ্য বই বলে আমাদের মনে হয়েছে।

উত্তরকালের সাহিত্য
আহমেদ মাওলা
প্রকাশক : বিদ্যা প্রকাশ
প্রচ্ছদ : ধ্রূব এষ
প্রকাশকাল : ফেব্রূয়ারি ২০১৬
৩৪৭ পৃষ্ঠা
দাম : ৫০০ টাকা