সাম্পানে নতুন ভাড়ার ঘোষণায় উত্তেজনা, সংঘর্ষের আশঙ্কা

27

কর্ণফুলী প্রতিনিধি

কর্ণফুলীর সব নৌঘাটে সাম্পানে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সিটি কর্পোশেনের বেঁধে দেয়া ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করা হলেও নির্বিকার প্রশাসন। কর্ণফুলী উপজেলা প্রশাসন মাঝে মধ্যে মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করলেও ঘাটের ইজারাদাতা কর্তৃপক্ষ সিটি কর্পোরেশন এ পর্যন্ত কোন ব্যবস্থাই নেয়নি। এ কারণে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব ঘাটের ইজারাদারদের নিয়ন্ত্রণ করা একার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহিনা সুলতানা।
এদিকে জুলধা ইউনিয়নের ডাঙ্গারচর-সল্টগোলা ঘাটে আজ বৃহস্পতিবার থেকে নতুন ভাড়া কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে ইজারাদার কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিবাদে ডাঙ্গারচর ঘাটে মানববন্ধন ও সমাবেশ আহŸান করেছেন স্থানীয়রা। এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যেকোন মুহূর্তে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ মোহাম্মদ ইসহাকের নাম ও স্বাক্ষর জাল করে ইজারা নিয়ে নৈরাজ্য শুরু করতে যাচ্ছে একটি পক্ষ। তারা জানান, কর্ণফুলীর নৌ ঘাটগুলোতে সিটি কর্পোরেশন যাত্রী পারাপারের জন্য ঘাট ইজারা দিলেও তারা নজরদারি না করায় যাত্রীদের কাছ থেকে ইচ্ছেমত ভাড়া আদায় করেন ইজারাদার কর্তৃপক্ষ। ১০-১২ বছর ধরে এ অবস্থা চলছে। কিন্তু তাতে কর্ণফুলী উপজেলা প্রশাসন, সাবেক পটিয়া উপজেলা প্রশাসন ও সিটি কর্পোরেশন কোন ধরনের নজরদারি করেনি। ফলে ভাড়া আদায়ে অরাজকতার সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় ভাড়া বাড়তে বাড়তে যাত্রীদের নাভিশ্বাস উঠলে গত বছর থেকে কর্ণফুলী উপজেলা প্রশাসন কয়েকটি ঘাটে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে। কিন্তু জরিমানা দেয়ার পরও ইজারাদার কর্তৃপক্ষ বাড়তি ভাড়া আদায় থেকে বিরত হয়নি। সিটি কর্পোরেশন থেকে কঠোর কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থার প্রতি ইজারাদাররা এক প্রকার বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলেছেন।
সর্বশেষ আজ থেকে ডাঙ্গারচর-সল্টগোলা ঘাটে দুই টাকা বাড়তি হারে ১২ টাকা করে ভাড়া আদায় করার ঘোষণা দিয়ে সাইনবোর্ড ও লিফলেট বিলি করেছে ইজারাদার কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও প্রতিরোধের ঘোষণা দিয়েছে স্থানীয়রা।
সাবেক ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম জানান, মোহাম্মদ ইসহাকের নাম ব্যবহার করে মাহবুব আলম, সালাউদ্দিন ও মোহাম্মদ বাবুল ঘাটের ইজারা নিয়েছেন। চুক্তিপত্রে ইসহাকের নামে ভূয়া স্বক্ষর করা হয়েছে। মাহবুব আলম সিটি কর্পোশেনের কালো তালিকাভুক্ত হওয়ায় অবৈধ পন্থায় ঘাটের ইজারা নিয়েছেন। এখন তিনি আবারও অসৎ পথে ভাড়া বাড়িয়ে দিতে চেষ্টা করছেন। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন মোহাম্মদ ইসহাক।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে মোহাম্মদ ইসহাক জানান, তিনি অন্য ঘাটের ইজারাদার। তিনি ডাঙ্গারচর-সল্টগোলা ঘাটের ইজারা নেননি। দরপত্রও দেননি। তার নামে কে ইজারা নিয়েছেন জানেন না তিনি।
ঘাটের নিয়ন্ত্রক মাহবুব আলম জানান, মোহাম্মদ ইসহাকের নামে টাকা জমা দিয়ে তারাই ঘাটের ইজারা নিয়েছেন। এতে দোষের কিছু নেই। তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় তারা ২ টাকা বাড়তি নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। কেউ প্রতিবাদ বা আন্দোলন করলেও তাতে কিছুই যায় আসে না।
কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহীনা সুলতানা জানান, প্রতিটি ঘাটেই অন্যায় করে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হয়। বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। তারা জরিমানা করেন। কিন্তু আগের মতোই বাড়তি ভাড়া আদায় করা হয়। সিটি কর্পোরেশন কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি আরও জানান, ডাঙ্গারচর-সল্টগোলা ঘাটের বাড়তি ভাড়া আদায়ের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার বিষয়ে তিনি অবগত আছেন এবং এ সংক্রান্তে একটি অভিযোগ পেয়েছেন। তিনি বলেন, বাড়তি ভাড়া যেন আদায় করতে না পারে এবং এ নিযে যেন কোন ঝামেলা না হয় সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।