সামাজিক দূরত্ব মেনে উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে রাখা হবে

23

ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আঘাত হানার আগেই চট্টগ্রামের উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে সরিয়ে নিতে ৩ হাজার ৯৯৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করার নির্দেশনা দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব মেনে সাতকানিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা, পতেঙ্গা, সীতাকুন্ডসহ উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে রাখা হবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৪৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও ২ হাজার ২৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১ হাজার ২৫০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভবনকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে তৈরি করে এসব প্রতিষ্ঠানের চাবি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন।
ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমের প্রতিবেদন অনুযায়ী সম্ভাব্য দুর্যোগে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রায় ২৯ মেট্রিক টন চাল, ২ লাখ ২০ হাজার নগদ টাকা, ১৩৩ বান্ডিল ঢেউটিন, ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ৫০০টি তাঁবু মজুদ রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও ১ হাজার মেট্রিক টন চাল, ৫০ লাখ টাকা, ২০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ৫০০ বান্ডিল ঢেউটিন বরাদ্দ চেয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের উদ্যোগে ২৮৪টি মেডিক্যাল টিম, ২ লাখ পিস পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, দেড় লাখ খাবার স্যালাইন ও পর্যাপ্ত জরুরি ওষুধ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগও ১ লাখ ৪০ হাজার পিস পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ২ লাখ ৪০ হাজার ওয়াটার পিউরিফায়ার, ১ হাজার ৪০০ পিস হাইজিন কিটস, ৬৫০ পিস স্কোয়াটিং প্লেট, ৩ হাজার ৩৬০ পিস ওয়াটার বাকেট, ৫০০ কেজি ব্লিচিং পাউডার, ১ হাজার ২০০ পিস তারপুলিন এবং ৫০০টি অস্থায়ী টিউবঅয়েল মজুদ রেখেছে।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচীর (সিপিপি) ৬ হাজার ৬৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক, রেডক্রিসেন্টের ৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক ছাড়াও বিএনসিসি এবং স্কাউটের স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
মাঠে থাকা ফসল যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরকে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিতে তাগিদ দেওয়ার পাশাপাশি কৃষকের পাকা ধান দ্রুত কেটে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৮ মে) সকাল থেকেই উপকূলীয় এলাকায় সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও) লোকজনকে ঘর-বাড়ি ছেড়ে আশ্রায়কেন্দ্রে অবস্থান নিতে মাইকিং শুরু করেছেন। নগরেও ৬টি সার্কেলের সহকারী কমিশনাররা (ভূমি) লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিতে মাইকিং এর পাশাপাশি প্রচারণা চালান।
নগরের কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে কাজ শুরু করেছি আমরা। প্রাথমিকভাবে মাইকিং এবং প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এতে লোকজন না সরলে অভিযান চালিয়ে সরিয়ে নেওয়া হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবিলায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সেবা সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনীসহ সব পক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি আমরা। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি কন্ট্রোল রুমও চালু করা হয়েছে। খবর বাংলানিউজের