সাবেক এমপি নদভীর ভাইপো ইউপি চেয়ারম্যান সেলিমের দুর্নীতি ও হয়রানির বিরুদ্ধে মানববন্ধন

16

সাতকানিয়া প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ড. আবু রেজা নদভী ও তার ভাইপো মাদার্শা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ.ন.ম সেলিমসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নানা অপকর্ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে। গতকাল (রোববার) দুপুরে উপজেলার মাদার্শা ও এওচিয়া ইউনিয়ন এবং সাতকানিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণের ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়। মানববন্ধন শেষে স্থানীয় একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে কয়েক শতাধিক ভুক্তভোগী নারী ও পুরুষ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ লেখা প্লে কার্ড হাতে বহন করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, চেয়ারম্যান সেলিম কর্তৃক দেওদীঘি বাজারকে মাদকের ট্রানজিট পয়েন্টে রূপান্তর, সরকারি গুচ্ছ গ্রাম নির্মাণে অনিয়ম, দেওদীঘি বাজারে নিজের জবাইকৃত গরু ছাড়া অন্যের মাংস বিক্রি করতে বাধা, আবু রেজা নদভীর নির্দেশনায় ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তির ইটভাটা দখল, হাসপাতাল নির্মাণের নামে কোটি কোটি টাকার চাঁদাবাজি, জোরপূর্বক সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা দখল, সরকারি বনের অবৈধভাবে গাছ কাটা, মাদার্শা স্লুইচ গেইট সংলগ্ন সেচ প্রকল্প দখল এবং চাঁদাবাজ নদভী পরিবারের সকল অপকর্মের বিচারসহ ফৌজদারি অপরাধে দন্ডিত চেয়ারম্যান সেলিমের অপসারণের দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি ফিরোজ কামাল বলেন, আমি ফরওয়ার্ড ইটের ব্যবসা করি। সে সুবাধে চেয়ারম্যান সেলিমের কাছ থেকে ২০১৯সালের এপ্রিল মাস থেকে ব্যবসা বাবদ ১৬ লক্ষাধিক টাকা পাওনা ছিলাম। অনেক কষ্টে ৮লাখ টাকা আদায় করেছি।
টাকা খুঁজতে গিয়ে ইয়াবা, ডাকাতি, হত্যা, ধর্ষণ, ছুরিকাঘাতের মামলা খেয়েছি। শুধু তাই নয়, সারা জীবন যে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এলাকায় টিকে রয়েছি, সেই জামায়াত-শিবিরের ভাংচুর মামলাসহ ৮টি মামলার আসামি হয়েছি। বর্তমানে ৬টি মামলায় খালাস পেয়েছি। আরও ২টি মামলা চলমান রয়েছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বিভিন্ন সময় এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করতে গেলেও এমপির অজুহাতে ১টি মামলাও থানা গ্রহণ করেনি। সারা বছর অসহায়ের মত অনেক জায়গায় ঘুরেও কোন প্রতিকার পায়নি।
অপর ভুক্তভোগী ও বালু ব্যবসায়ী মো. এরফান বলেন, মেম্বার নুরু, পলাশ, রফিক, তরিক ও চেয়ারম্যান সেলিম মিলে আমার একটি স্কেভেটর পুড়িয়ে দেয় এবং আমার মালিকানাধীন একটি ট্রাকে অবৈধ গাছ তুলে দিয়ে পুলিশের ভয় দেখিয়ে ২লাখ টাকা আদায় করে।
ভুক্তভোগী হারুনুর রশিদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নলকূপ বসানোর কাজ করতে গিয়ে সাবেক এমপি নদভী ও তার ভাইপো চেয়ারম্যান সেলিমের কাছ থেকে ১৮ লাখের অধিক টাকা পাওনা রয়েছি। টাকা খুঁজলে মামলা দেওয়ার ভয় দেখানো হত।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা এসব অনিয়ম ও দুর্র্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহায়তা কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনে ভুক্তভোগী অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সাতকানিয়া উপজেলা শ্রমিক লীগ সভাপতি মো. রিদুয়ানুল হক, যুবলীগ নেতা আসাদুজ্জামান মুরাদ, কামাল উদ্দীন, মো. নাছির উদ্দীন, মাদার্শা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য সামশুল আলম ও মফিজ উদ্দীন প্রমুখ।