সাত বছরের মধ্যে জানুয়ারিতে সর্বোচ্চ বায়ুদূষণ

2

পূর্বদেশ ডেস্ক

কয়েকদিন ধরেই ঢাকার বাতাসে মারাত্মক দূষণ। দিনের একটা বড় সময় ধরে ঢাকার বাতাসের মান বিশ্বের অন্যান্য শহরের তুলনায় নিচে নেমে যাচ্ছিল।
গত এক সপ্তাহে প্রায় প্রতিদিনই বায়ু দূষণের শীর্ষ অবস্থানে উঠে এসেছে ঢাকা। ২০২৩ সালের প্রথম মাসেই অতিরিক্ত অস্বাস্থ্যকর বা দুর্যোগপূর্ণ দিন ছিল ১০ দিন, যা গত সাত বছরের জানুয়ারি মাসের তুলনায় সবচেয়ে বেশি।
এদিকে গত এক সপ্তাহে বায়ু দূষণ প্রতিরোধে অভিযানে প্রায় ১১ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেছে পরিবেশ অধিদফতর। এরপরেও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না দূষণের মাত্রা।
এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে (একিউআই) গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় আবারও দূষিত বাতাসের শীর্ষ অবস্থানে উঠে আসে ঢাকা। এসময় ঢাকার বায়ুমান ছিল ১৯৮। খবর বাংলা ট্রিবিউন।
গতকাল সকাল থেকে ঢাকার অবস্থান ছিল কখনও তৃতীয়, আবার কখনও চতুর্থ। এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার বায়ুমান ছিল ২২৫, আর শুক্রবার ছিল ১৯৫। বায়ুর মান হিসেবে এই সবগুলো অবস্থানের মানে হলো, বাতাসের পরিস্থিতি অস্বাস্থ্যকর।
শুষ্ক মৌসুমে যত্রতত্র রাস্তা খোঁড়া, গাড়ির কালো ধোঁয়া আর নির্মাণ কাজের কারণে সবচেয়ে বেশি দূষিত হচ্ছে ঢাকা।
বাংলাদেশে অবস্থিত আমেরিকান দূতাবাস থেকে প্রাপ্ত ২০১৭ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সাত বছরে ঢাকার বায়ুমান সূচক এর তথ্য বিশ্লেষণ করেছে বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)। তারা জানান, গত সাত বছরের জানুয়ারি মাসের ২০৯ দিনের মধ্যে ৩৫ দিন দুর্যোগপূর্ণ এবং ১৪৫ দিন খুবই অস্বাস্থ্যকর দিন ছিল।
গত সাত বছরে জানুয়ারি মাসে ঢাকার মানুষের এক দিনের জন্যও ভালো বায়ু সেবন করার সৌভাগ্য হয়নি। শতকরা ৯৯ দশমিক শূন্য ৪ ভাগ দিনই বায়ুমান পরিস্থিতি ‘অস্বাস্থ্যকর’ থেকে ‘বিপজ্জনক’ বা অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় ছিল। সেই সঙ্গে গত সাত বছরে জানুয়ারি মাসে ঢাকার বায়ু মানের দিক থেকে ২০১৭ সালে ৫ দিন, ২০১৮ সালে ৪ দিন, ২০১৯ সালে ৪ দিন, ২০২০ সালে ৪ দিন, ২০২১ সালে ৭ দিন, ২০২২ সালে মাত্র ১ দিন অতিরিক্ত অস্বাস্থ্যকর বা দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় ছিল। সেইখানে ২০২৩ সালে অতিরিক্ত অস্বাস্থ্যকর বা দুর্যোগপূর্ণ দিন ছিল ১০ দিন।
স্ট্যামফোর্ড বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ নিলেও নানা কারণেই দূষণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। শুষ্ক মৌসুম শুরুর আরও আগে থেকেই বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া গেলে হয়তো দূষণ কম হতো। আমাদের গবেষণায় যে মাত্রা পাওয়া গেছে, তাতে গত সাত বছরের মধ্যে সবচেয়ে অস্বাস্থ্যকর বাতাস এবার জানুয়ারি মাসে সেবন করেছে ঢাকাবাসী। যা বিপদজনক মাত্রায় বেড়েই চলেছে।