সাতকানিয়া আদালতে বিচারক সংকট

217

সাতকানিয়া আদালতে বিচারক সংকটে ঝুলে আছে হাজারো মামলা। এ কারণে বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে জানা গেছে। আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা বলছেন, দ্রæত বিচারক নিয়োগ দিয়ে ঝুলে থাকা মামলাগুলোর বিচার কাজ শুরু করা গেলে জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে সাতকানিয়া আদালতে বিচারকের চারটি পদের মধ্যে দুটি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। এ দুটি হচ্ছে লোহাগাড়া সহকারী জজ আদালতের বিচারক ও অতিরিক্ত সহকারী জজ আদালতের বিচারক পদ।
জানা যায়, সাতকানিয়া সদরে অবস্থিত সাতকানিয়া আদালতে এক সময় বাঁশখালী, লোহাগাড়া ও সাতকানিয়ার জমি সংক্রান্ত (মূল্য ২ লক্ষ টাকার মধ্যে) মামলার বিচার কাজ চলত। এর মধ্যে বাঁশখালী সহকারী জজ আদালতটি বাঁশখালীতে স্থানান্তর করা হয়।
এখন আছে যুগ্ম জেলা জজ আদালত, সাতকানিয়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, লোহাগাড়া সহকারী জজ আদালত ও অতিরিক্ত সহকারী জজ আদালত।
এর মধ্যে যুগ্ম জেলা জজ আদালত ও সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে বিচারক পদায়ন থাকায় বিচার কাজ অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু লোহাগাড়া সহকারী জজ আদালতে প্রায় ৯ মাস এবং অতিরিক্ত সহকারী জজ আদালতে প্রায় চার বছর ধরে বিচারকের পদ শূন্য রয়েছে।
সাতকানিয়া আইনজীবী সহকারী সমিতির সহ-সভাপতি নাজিম উদ্দিন ও আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন জানান, ২০১১ সালে লোহাগাড়া বটতলি পাইকারী ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারি বাদী হয়ে দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন (মামলা নং-১৪৫/১১)। মামলাটি দীর্ঘদিন চলার পর স্বাক্ষী নেওয়া শেষ হলেও যুক্তিতর্ক শুরুর আগেই সহকারী জজ বদলি হওয়ায় মামলার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে বাদী-বিবাদী উভয়েই হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এছাড়া আরও শত শত মামলা ঝুলে আছে।
মামলার কাজে আসা লোহাগাড়ার বাসিন্দা লোকমান হাকিম জানান, আমার একটি মামলা, দায়ের করেছিলাম ২০১২ সালে। মামলাটি অনেকটা শেষ পর্যায়ে আসলেও দীর্ঘ ৯ মাস থেকে এ আদালতে বিচারক না থাকায় মামলার কার্যক্রম চলছে না। তাই সর্বশেষ অবস্থা দেখতে আসলাম।
আদালত সূত্র জানায়, বর্তমানে লোহাগাড়া সহকারী জজ আদালতে ২ হাজার ৭শ ৫৪টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। বর্তমানে সহকারী জজ না থাকায় এসব মামলার বাদী-বিবাদী উভয়ই হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
সাতকানিয়া আদালতের সিনিয়র আইনজীবী তাজুল ইসলাম চৌধুরী ও হাফিজুল হক মানিক বলেন, সরকারের পক্ষে বিচারাধীন মামলা দ্রূত নিষ্পত্তির জন্য বলা হলেও সাতকানিয়ার ক্ষেত্রে যেন তার উল্টো। এখানে দুটি আদালতে বিচারক না থাকায় বিচার কাজে স্থবিরতা বিরাজ করছে।
সাতকানিয়া আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সরকারি আইনজীবী (এলজিপি) সুনিল বড়ুয়া বিচারকের পদ শূন্য থাকায় মামলার বাদী-বিবাদীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে বলে জানান। তিনি বলেন, আমি একাধিকবার জেলা জজ সাহেবের সাথে দেখা করে শূন্য পদে বিচারক পদায়নের জন্য অনুরোধ করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিচারক পদায়ন করা হয়নি।
সাতকানিয়া যুগ্ম জেলা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ও সাতকানিয়া আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন কচির বলেন, আমরা সমিতির পক্ষ থেকে মাননীয় আইনমন্ত্রী থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে একাধিক বার আবেদন করেছি। কিন্তু এখনও এ দুই আদালতে বিচারক না দেওয়াতে বিচার প্রার্থীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।