সাতকানিয়ায় দুই কেজি ক্রিস্টাল মেথ উদ্ধার বাজারমূল্য ১০ কোটি টাকা, রোহিঙ্গাসহ আটক ২

28

সাতকানিয়ায় পাচারকালে প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্রিস্টাল মেথ বা আইস (ক্ষতিকর মাদক) উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় আটক করা হয়েছে দুইজনকে। গত বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত এটিই সর্বোচ্চ মূল্যের ক্রিস্টাল মেথ উদ্ধারের ঘটনা।
এ নিয়ে গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে আটায় সংবাদ সম্মেলন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাতকানিয়া সার্কেল) জাকারিয়া রহমান জিকু। তিনি জানান, সাতকানিয়া থানায় গোপন সূত্রে খবর আসে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে রাতে পাচার হবে ১০ কোটি টাকার মাদক। এরপর বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকেন একদল পুলিশ সদস্য। রাত দুইটায় কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী একটি মিনিট্রাক পৌঁছে কেরানীহাটের অদূরে তেমুহুনী এলাকায় পুলিশের চেকপোস্টে। পুলিশ গাড়িটি দাঁড় করালে ফোনে কথা বলার ভান করে গাড়ি থেকে নেমে পালানোর চেষ্টা করেন চালক। পুলিশ ধাওয়া করে চালক ও হেলপারকে আটক করে।
তারা হলেন টেকনাফের বাহারছড়া কচ্ছপিয়ার গুরা মিয়ার ছেলে চালক ফয়সাল আহমদ প্রকাশ ফজল (২৯) ও উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আনজুর হোসেনের ছেলে গাড়ির হেলপার
জাহিদ আলমকে (২০)। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, ওই মিনিট্রাকে করেই পাচার হচ্ছিল মাদক। পরে গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ২ কেজি ক্রিস্টাল মেথ বা আইস উদ্ধার করা হয়।
জাকারিয়া রহমান জিকু জানান, ইয়াবা ট্যাবলেটে অ্যামফিটামিন (রাসায়নিক) আছে ৫ পার্সেন্ট। সেখানে ক্রিস্টাল বা আইস মাদকে অ্যামফিটামিন রয়েছে শতভাগ। এটি খুবই ভয়ঙ্কর। আমরা এ মাদকের উৎস ও গন্তব্য সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করছি। আটক মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধে সাতকানিয়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার হোসেন, পরিদর্শক (তদন্ত) সুজন কুমার দে, এসআই শেখ সাইফুল আলম, এসআই জাকির হোসেন প্রমুখ।
পুলিশ জানায়, কক্সবাজারে কাজ করা ‘হ্যান্ডিক্যাপ ইন্টারন্যাশনাল’ নামে একটি এনজিওতে কাজ করা কর্মকর্তা আরিফুর রহমানের কর্মস্থল পরিবর্তন হয়। এ কারণে তিনি নিজের ব্যবহৃত মালামাল নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা করেন (ঢাকামেট্রো-ড-১১-৯৩৪২) একটি মিনি ট্রাকে করে। ওই মিনি ট্রাক থেকেই এসব ক্রিস্টাল মেথ বা আইস উদ্ধার করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া সাতকানিয়া থানার সেকেন্ড অফিসার শেখ সাইফুল আলম বলেন, আমরা কেওচিয়া ইউনিয়নের তেমুহনী এলাকার নেজাম উদ্দিন এন্ড ব্রাদার্স এলপিজি ফিলিং স্টেশনের সামনে তল্লাশী জোরদার করি। রাত আনুমানিক দুইটায় গাড়িটি চেকপোস্টে পৌঁছলেই এর গতিরোধ করি। এর মধ্যে গাড়ির চালক ফয়সাল মোবাইল ফোনে কথা বলার ভান করে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে। আমরা তাকে ধাওয়া করে আটক করি। পরে জিজ্ঞাসাবাদ করে উদ্ধারকৃত আইসের সন্ধান পাই।
সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, সাতকানিয়া থানা পুলিশ মাদক কারবারীদের গ্রেপ্তারে সব সময় সচেষ্ট রয়েছে। তারই অংশ হিসেবে আজ এসব মাদক উদ্ধার করি। তিনি মাদকের তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানান।