সাগর পাড়ে শিশু আয়াতের দেহের খন্ডিত অংশ উদ্ধার

107

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরীর ইপিজেড এলাকায় অপহরণের পর খুন হওয়া শিশুকন্যা আয়াতের কিছু খন্ডিত অংশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার আকমল আলী রোডের সাগর পাড়ে স্লুইসগেট এলাকা থেকে আয়াতের দেহের কিছু খন্ডিত অংশ উদ্ধার করা হয়। এই খন্ডিত অংশগুলো আয়াতের পা বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা। তিনি বলেন, বুধবার ষষ্ঠদিনের মতো অভিযানে আয়াতের খন্ডিত মাংসপিন্ড আকমল আলী রোডের সাগর পাড়ে স্লুইসগেট এলাকায় পাওয়া গেছে।
চট্টগ্রাম নগরীতে শিশু আয়াতকে খুনের পর লাশ ছয় টুকরো করে সাগরে ভাসিয়ে দেওয়ার ঘটনায় আবিরকে গ্রেপ্তারের পর তার বাবা-মা ও ছোট বোনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আদালত তিনজনকেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। তবে বোন অপ্রাপ্তবয়সী হওয়ায় তাকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গত মঙ্গলবার সকালে গ্রেপ্তারের পরপরই তিনজনকে আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয় বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক (মেট্রো) মনোজ কুমার দে।
জানা যায়, আয়াতকে অপহরণের পর খুন করে দেহ ছয় টুকরো করে খালে-সাগরে ভাসিয়ে দেয় খুনি আবির আলী। আবিরকে গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আয়াতের খন্ডিত দেহ উদ্ধারে ছয় দিন ধরে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। অভিযানের ষষ্ঠ দিনেও সাগর পাড়ে মিলেছে শিশু আয়াতের খন্ডিত দেহের অংশ।
গত ২৫ নভেম্বর রাতে সিইপিজেডের আকমল আলী রোডের পকেট গেট এলাকার বাসা থেকে আয়াতদের ভাড়াটিয়া আবির আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরের দিন থেকে চলা অভিযানে আয়াতের রক্তমাখা কাপড় ও সেন্ডেল উদ্ধার করা হয়।
নিখোঁজের ১০ দিনের মাথায় আবির আলী নামের এক যুবককে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে সেই নিখোঁজ রহস্য উদঘাটন করে পিবিআই। একইসঙ্গে গ্রেপ্তার আবির আলী স্বীকারও করেন। মুক্তিপণ দাবির জন্যই আবির আলী তার বাড়িওয়ালার নাতনিকে অপহরণ করে। মেয়েটি চিৎকার করায় তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং পরে লাশ গুম করতে আয়াতকে করা হয় ছয় টুকরো। আয়াতের খন্ডিত মাংসপিন্ডগুলোও ভাসিয়ে দেওয়া হয় সাগরে। তবে আসামি গ্রেপ্তারের পর খুনের ঘটনায় জড়িত এবং সব দায় স্বীকার করে। নিখোঁজের পরদিন ইপিজেড থানায় দায়ের হওয়া জিডি এখন মামলায় পরিণত হয়েছে।
এর আগে গত ১৫ নভেম্বর চট্টগ্রামের ইপিজেড থানার বন্দরটিলার এলাকার নয়ারহাট বিদ্যুৎ অফিস এলাকার বাসা থেকে পার্শ্ববর্তী মসজিদে আরবি পড়তে যাওয়ার সময় নিখোঁজ হয় আলিনা ইসলাম আয়াত। এর পরদিন শিশুর বাবা সোহেল রানা এ ঘটনায় ইপিজেড থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করলেও কোন হদিস মিলেনি। নিখোঁজের দশ দিনের মাথায় গত শুক্রবার আবির আলী নামের এক যুবককে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে এ নিখোঁজ রহস্য উদঘাটন করে পিবিআই।
ইপিজেড থানার দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের নয়ারহাট এলাকার বাসিন্দা সোহেল রানা ও সাহিদা আক্তার তামান্না দম্পতির মেয়ে আয়াত। তিনতলা ভবনের মালিক সোহেলের ওই এলাকায় একটি মুদির দোকান আছে। আয়াত স্থানীয় তালীমূল কোরআন নূরানী মাদ্রাসার হেফজখানার ছাত্রী ছিল।