সাইবার অপরাধ নিয়ে ৩০ দেশের সঙ্গে বসতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

8

ভবিষ্যত সাইবার অপরাধ ও র‌্যানসমওয়্যার হুমকি মোকাবেলার পরিকল্পনা নিয়ে ৩০টি দেশের প্রতিনিধির সঙ্গে চলতি মাসেই আলোচনায় বসবেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শকরা। আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসার বিষয়টি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শুক্রবার জানিয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স। বাইডেন বলেন, হোয়াইট হাউজ ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল আয়োজিত অনলাইন সেশনের মূল লক্ষ্য হবে ‘ক্রিপ্টোকারেন্সির বেআইনি ব্যবহারসহ’ বিভিন্ন বিষয়ে ‘আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো’। চলতি বছরের একাধিক সাইবার আক্রমণে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানী ও খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পর বাইডেন সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে আলাদা গুরুত্ব পাচ্ছে সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি। চলতি বছরেই সাইবার হামলার ঘটনায় উৎপাদন প্রক্রিয়া থমকে গিয়েছিলো মাংশ প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান জেবিএস-এর। হ্যাকারদের এক কোটি ১০ লাখ ডলার দেওয়ার পর থামে ওই সাইবার আক্রমণ। রয়টার্স বলছে, ওই সাইবার আক্রমণের মূল হোতা ছিলো রাশিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একদল অপরাধী। যুক্তরাষ্ট্রে জেবিএস-এর পর সাইবার আক্রমণের শিকার হয় কলোনিয়াল পাইপলাইন। নিজেদের কম্পিউটার সিস্টেমের উপর নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে হ্যাকারদের ৫০ লাখ ডলার দিতে বাধ্য হয় কলোনিয়াল পাইপলাইন কর্তৃপক্ষ। ওই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হ্যাকাররাও পূর্ব ইউরোপের বলে ধারণা করা হচ্ছে। উভয় প্রতিষ্ঠানই মুক্তিপণ দিয়েছে বিটকয়েনের মাধ্যমে। ভুক্তভোগীর ডেটা সংকেতায়ন বা এনক্রিপ্ট করে ফেলে র‌্যানসমওয়্যার সফটওয়্যার। সাধারণত এনক্রিপ্টেড ডেটা উদ্ধার বা ডিক্রিপ্ট করার ‘কি’ বা মূল সূত্রের বদলে বিটকয়েনের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে মুক্তিপণ দাবি করে হ্যাকাররা।
রয়টার্স বলছে, কাউন্টার-র্যানসমওয়্যার ইনিশিয়েটিভ নামের একটি অনানুষ্ঠানিক দল গঠনের আশা করছে বাইডেন সরকার। আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদের নতুন দলটি নিয়ে রাশিয়া, নেটো এবং জি৭-ভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে সরাসরি কূটনৈতিক আলোচনার জোর আরও বাড়াতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। রয়টার্স বলছে, চীনের কথিত ‘বিদ্ধেষপূর্ণ সাইবার কর্মকান্ড’ ব্লক করার উপর জোর দিয়ে যাচ্ছে বাইডেন সরকার। বরাবরই ওই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে চীন। হোয়াটস হাউজের সঙ্গে ঠিক কোন কোন দেশের প্রতিনিধিরা আলোচনায় বসবেন, সেই বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়।
এক হোয়াইট হাউজ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, নিরাপত্তাবিষয়ক কর্মকর্তা ও পরামর্শকরা ‘মুক্তিপণের অর্থ পাচারে ভার্চুয়াল মুদ্রার অপব্যবহার’ এবং নিজের পরিচয় গোপন রেখে বিভিন্ন দেশের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উপর ‘র‌্যানসমওয়্যার আক্রমণকারীদের তদন্তের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া’ নিয়ে আলোচনা করতেই বেশি আগ্রহী হোয়াইট হাউজ।