সরবরাহ কম থাকায় মাছের বাজার চড়া

3

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদের ছুটির পরে সাপ্তাহিক বাজারে মানুষের আনাগোনা অন্যান্য সময়ের তুলনায় কিছুটা কম। যার প্রভাব পড়েছে সবজি বাজারে। গত সপ্তাহের তুলনায় খুচরা বাজারে কিছুটা কম দামেই বিক্রি হচ্ছে অধিকাংশ সবজি। এদিকে, বাজারে মাছের সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে দাম। গতকাল শুক্রবার সকালে চকবাজার, বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
বাজারে দেখা গেছে, ঈদের ছুটি শেষ হলেও অন্যান্য সময়ের তুলনায় বাজারে মানুষের ভিড় কিছুটা কম। বিক্রেতাও তেমন একটা আসেনি। সে অনুযায়ী বাজারে মটরশুঁটি ৮০ থেকে ৯০ টাকা, গোল আলু ৫০ টাকা, টমেটো মানভেদে ২০ থেকে ৩০ টাকা, গোল বেগুন ৬৫ টাকা, লম্বা বেগুন ৪০ টাকা, করলা (বড়) ৬০ টাকা, করলা (ছোট) ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৪০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, গাজর ৩০ থেকে ৪০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, ঢেঁড়শ ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, লাউ আকারভেদে ৫০ টাকা, ফুলকপি ৩৫ টাকা এবং বাঁধাকপি ৪০ টাকায় প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে।
তবে বাজারে পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ভারতীয় রসুন ২২০ টাকা এবং দেশি রসুন ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বহদ্দারহাটের কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা আবু তৈয়ব বলেন, ঈদের ছুটি শেষ হলেও এখন সব মানুষ শহরে ফেরেনি। আবার যারা শহরে এসেছে তারাও আসার সময় গ্রাম থেকে সবজি ও ফলমূল নিয়ে আসে সাধারণত। যার কারণে বাজারে ক্রেতার সংখ্যাও কম। সবজির চাহিদা কম থাকায় কমেছে দামও। গত সপ্তাহের তুলনায় আজকে প্রতিটি সবজিরই ১০ থেকে ২০ টাকা দাম কমেছে।
সবজির দাম কমলেও চড়া মাছের বাজার। প্রতিটি মাছেরই মাছের কেজিতে দাম বেড়েছে অন্তত ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের কারণে বাজারে মাছের সরবরাহ কম। যার কারণে মাছের দাম কিছুটা বাড়তি।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি বড় রুই ৪৫০ টাকা, মাঝারি রুই ৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, বড় পাঙাশ ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, আকারভেদে ইলিশ মাছ ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা, বড় কৈ ৬০০ টাকা, শিং ৮৫০ টাকা, বোয়াল ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, কালবাউশ ৪৫০ টাকা ও আইড় ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, ছোট চিংড়ি ৩০০ টাকা, বড় চিংড়ি ৮০০ টাকা, মলা ৩০০ টাকা, পাবদা ৫০০ টাকা ও লইট্টা ৩০০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ঈদের পরে মাছ কিনতে এসে ক্রেতা ইলিয়াস হোসেন বলেন, ঈদের সময় বাড়ি থেকে আসার সময় কিছু মাছ-সবজি নিয়ে এসেছিলাম। সেগুলো গত ২-৩ দিন খেয়েছি। এখন শেষ হয়ে যাওয়াতে বাজারে এসেছি।
তিনি আরও বলেন, বাজারে সবজির দাম কিছুটা কমেছে। কিন্তু মাছের দাম বাড়তি। পাবদা মাছ ঈদের আগে ৪৫০ টাকা কেজি দরে নিয়েছিলাম। আজ নিলাম ৫০০ টাকা কেজিতে। আর কাঁচকি মাছ নিয়েছি ৩৬০ টাকায়, যেটা আগে ৩২০ টাকায় নিতাম। আসলে সব ধরনের মাছেই ২০ থেকে ৫০ টাকা দাম বাড়তি।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন পূর্বদেশকে বলেন, ব্যবসায়ীরা সবসময় সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। তারা কোনো একটা ইস্যু খুঁজে দাম বাড়িয়ে দেয়। একবার বলে সরবরাহ নেই, আবার বলে পণ্য পরিবহনের খরচ বেড়েছে ইত্যাদি অজুহাতের শেষ নেই। প্রশাসন রমজান মাসে কয়েকটা অভিযান দেখালেও তার পরে তারাও ঝিমিয়ে পড়ে। এখনও অনেক পণ্য অযৌক্তিক দামে বিক্রি হচ্ছে। তদারকির মাধ্যমে সেগুলোর দামও নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। না হলে একটা সিন্ডিকেট মাথাচাড়া দিয়ে বাজারে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করবে।